প্রধানমন্ত্রীর দূর সম্পর্কে আত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তার নাম আবু হানিফ। তবে পরিচয় দিতেন তুষার ও হানিফ মিয়া নামেও।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি জানিয়েছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জোরাল তৎপরতা শুরু করেছিলেন হানিফ। একেকজনের কাছ থেকে দাবি করতেন দুইশ থেকে তিনশ কোটি টাকা।
এছাড়া রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন, পদোন্নতি এবং সরকারি চাকরি দেওয়াসহ নানা কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, নিজেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বোঝাতে ৩৯ বছর বয়সী হানিফ তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে অসংখ্য বানোয়াট ছবি পোস্ট করেছেন। এগুলো ফটোশপ করে বানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাদের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর যৌথ অভিযানে মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আবু হানিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ করা হয় বিদেশি পিস্তল, গুলি, একটি গাড়ি। পাওয়া যায় বিভিন্ন ভিডিও এবং এডিট করা ছবি।
যে কৌশলে প্রতারণা
র্যাব জানায়, হানিফ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন মোবাইল নম্বর প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের নামে সেইভ করতেন। পরে সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপ থেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য সেজে নিজেই অথবা চক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে মেসেজ আদান-প্রদান করতেন।
বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিজের ছবি এডিট করে তা দেখানো হতো।
বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবিও তুলতেন হানিফ। সেগুলো দেখিয়েও করতেন প্রতারণা।
র্যাব পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হানিফ স্বীকার করেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করতেন তিনি।
প্রথমে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করতেন। যাদের সম্ভাবনা ক্ষীণ, টার্গেট করতেন তাদেরকে। পরে যোগাযোগ করে দুই থেকে তিন শ কোটি টাকা দাবি করতেন।