আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ৩শ' বিচারক দিয়ে 'নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি' গঠন

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ৩শ’ বিচারক দিয়ে ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী অপরাধ ও নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম অনুসন্ধানের জন্য সংসদের ৩০০ আসনের জন্য ৩০০ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি (Electoral Enquiry Committee) গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জেলা পর্যায়ে কর্মরত বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) মোঃ আবদুছ সালাম সইকৃত এক প্রজ্ঞাপন বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এ তথ্য জানা গেছে। যুগ্ম জেলা জজ ও সিনিয়র সহকারী জজ পদমর্যাদার বিচারকগণকে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাচনী অপরাধ, নির্বাচনী আচরণবিধি, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি বা পরিচালনায় বাঁধাগ্রস্ত বা ব্যাহত করে, এমন নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম” সংক্রান্ত বিষয় সমূহ অনুসন্ধানপূর্বক কমিশনের নিকট প্রতিবেদন দাখিলের লক্ষ্যে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কে কোন আসনের দায়িত্ব পেয়েছেন জানতে এখানে ক্লিক করুন

প্রজ্ঞাপন জারির সাথে সাথে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকগণ নিজ নিজ দপ্তর হতে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন এবং তাঁদের চাকরি আইন ও বিচার বিভাগ থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যাস্ত করা হয়েছে। বিচারকগণ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব পালন করবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের চাহিদামতো জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের জন্য ৩০০ জন বিচারককে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিবের কাছে পত্র দেওয়া হয়। গত বুধবার (২২ নভেম্বর) আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৩ এর সিনিয়র সহকারী সচিব মোর্শেদ আল মামুন ভূইয়া এ পত্র প্রেরণ করেন।

নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাজ

সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি (Electoral Enquiry Committee) গঠন করা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর বিধান মতে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের দিয়ে দেশের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একটি করে ৩০০টি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, আচরণবিধি ও ভীতি, বাধা, দমন বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশসহ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় বাধাগ্রস্ত করে এমন বিষয়গুলো অনুসন্ধানসহ সুপারিশ করে তিন দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।

নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি প্রাপ্ত তথ্য বা তার কাছে দাখিলকৃত অভিযোগ বা ঘটনাসমূহ অনুসন্ধান করতে পারবেন। ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত অভিযোগ ও ঘটনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন/ রিটার্নিং অফিসার/ সহকারী রিটার্নিং অফিসার/ নির্বাচনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও কর্মকর্তা কমিটির কাছে পাঠানো হলেও তা অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন কমিশনের কাছে পাঠাবেন।

অনুসন্ধান কমিটি কোনও ব্যক্তিকে তার সামনে হাজির হতে ও সাক্ষ্য প্রদানে এবং প্রয়োজনীয় দলিল বা বস্তু দাখিল করতে দেওয়ানি আদালতের মতো ক্ষমতাবান হবেন। কমিটির কার্যক্রম Penal Code-এর ১৯৩ ও ২২৮ ধারায় বিচারিক কার্যক্রম হিসেবে গণ্য হবে।

কমিটি দায়িত্ব পালনকালে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম সংঘটিত হলে তা অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।

অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত জ্বালানি ও আপ্যায়ন ব্যয়সহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হবে।

অনুসন্ধান কার্য পরিচালনার ব্যাপারে কমিটির চাহিদা অনুসারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা/ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা/ থানা নির্বাচন কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবেন।