মামলাজট নিরসনে মেডিয়েটরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে: বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী

মামলাজট নিরসনে মেডিয়েটরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে: বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী

মেডিয়েশনের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশকে, বিচার ব্যবস্থাকে মামলাজট মুক্ত করতে মেডিয়েটরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী।

সুপ্রিম কোর্টের মেডিয়েশন সেন্টারে ৪০ ঘণ্টাব্যাপী মেডিয়েশন প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস) এ কর্মশালার আয়োজন করেছে।

বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তরুণদের দেখে সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা মনে পড়ছে। এই তরুণদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে হবে। বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। তবে বিচার ব্যবস্থায় মামলাজট সমস্যা রয়েছে। যত বিচারপতি, বিচারক নিয়োগ দেওয়া হোক না কেন মামলাজট সহজে কমবে না। তাই মামলাজট নিরসনে মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। মেডিয়েশন বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণ আইনজীবীদের একজন ভালো মেডিয়েটর হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।

ন্যায় বিচার আপেক্ষিক বিষয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা খুবই দুরূহ বিষয়। আমরা প্রচলিত আইন অনুয়ায়ী বিচার করি। এতে ন্যায় বিচার হয় কি না জানি না।

মামলা করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় না, এতে ক্রোধ বাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করলে উভয়পক্ষের সুসম্পর্ক তৈরি হয়। তাই মেডিয়েশনের প্রয়োগের ওপর জোর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল বলেন, প্রচলিত আইনি কাঠামোর মধ্যে মামলাজট নিরসন সম্ভব নয়। তাই, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। মেডিয়েশনের মাধ্যমে মামলার পাহাড় কমাতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিচার বিভাগে যত মামলা পেন্ডিং আছে, নতুন মামলা গ্রহণ না করে যদি শুধু পেন্ডিং মামলা নিষ্পত্তি করতেই ২৫/৩০ বছর লেগে যাবে। এ কারণে মেডিয়েশনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

একটি সুন্দর দেশ আমাদের লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দর দেশ গড়তে হলে আইনের শাসন থাকতে হবে। মামলাজট মুক্ত বিচার বিভাগ গড়তে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিমসের চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী। সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলাল। সঞ্চালনা করেন বিমসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক ইউস্যা হোসনা। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৬৫ জন ডেলিগেট অংশগ্রহণ করেছে।