মোঃ জুনাইদ: নিজের পেশাগত কারণে মানুষ অনলাইনে কি রকম আইনগত পরামর্শ চায়, কি কি সমস্যার সম্মুখীন হন, এমনকি কোর্টে এসেও কি কি অসুবিধার মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে আমি জানতে আগ্রহী। এই কারণে আমি ফেসবুকে অনেকগুলো জমি-জমা সংক্রান্ত গ্রুপে মানুষের বিভিন্ন সমস্যা ও গ্রুপে আইনজীবী সহ বিভিন্ন মানুষের দেওয়া সমাধান গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ি।
পেশাগত সীমাবদ্ধতার কারণে কোনো ধরনের লাইক, কমেন্ট বা রেসপন্স না করে শুধু পর্যবেক্ষণ করি। এই পর্যবেক্ষণে আমার মনে হয়েছে – এই দেশে অধিকাংশ মানুষের কাছে বিদ্যমান ভূমি আইন ব্যবস্থা নিয়ে জানা শোনা স্পষ্ট নয়। কোন সমস্যার সমাধান ভূমি অফিসে হয় আর কোন সমস্যার সমাধান কোর্টে গিয়ে করতে তা নিয়ে বিভ্রান্তি আছে বেশিরভাগ শিক্ষিত লোকজনের মধ্যেও!
সম্প্রতি পেশাগত কারণে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখেছি – অনেক বড় বিরোধ ও প্রথম পর্যায়ে সমাধান করা সম্ভব। মামলা করার পর বহু ঘাটের পানি খেয়ে, মধ্যস্বত্তভোগীদের অসহযোগিতা ও অনিচ্ছার কারণে তিক্ততা এত বাড়ে যে তখন আপোষে অনেকেই আর আগ্রহী হন না।
অথচ সরকারী জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোতে সিভিল ও ফৌজদারী মামলায় বিচারের কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিচারকদের কাছে আপনি খুব সহজেই বিরোধের প্রথম পর্যায়ে বিরোধটি আপোষে নিস্পত্তি করে নিতে পারেন। এই অফিসে গরীবদের জন্য বিনামূল্যে আইনজীবী নিয়োগের পাশাপাশি যে কোনো ব্যক্তিকে আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনগত পরামর্শ প্রদানের সুযোগ আছে। আপনার সমস্যাটি জটিল হলে এবং বিভিন্ন জন বিভিন্নরকম সমাধানের কথা বললে আপনি অনতি বিলম্বে আপনার জেলার লিগ্যাল এইড অফিসে যোগাযোগ করে বিনামূল্যে পরামর্শ নিন আর আপোষে দ্রুততম সময়ে বিরোধ মীমাংসার সুযোগ গ্রহণ করুন।
লেখক: জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ), রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।