ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। এই কথাটা যে কতটা সত্যি, তা প্রমাণ হল আরও একবার। আমেরিকার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স করার সুযোগ পেলেন প্রজ্ঞা। তাও আবার একটা নয়, দু-দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ভাবছেন এই প্রজ্ঞা কে? আইনে স্নাতক এক ভারতীয় যুবতী সে। তাঁর বাবা কাজ করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। তবে বিচারপতি বা আইনজীবী হিসাবে নয়, রাঁধুনি তিনি। তাঁর মেয়েই আমেরিকার দুই নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়- ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া ও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেল শুধুমাত্র মেধার জোরে। প্রজ্ঞার এই সাফল্যকে সম্মান জানান ও উদযাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং অন্যান্য বিচারপতিরা।
বছর পঁচিশের প্রজ্ঞা আমেরিকার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার সুযোগ পেয়েছে, তাও আবার স্কলারশিপে, এই কথা জানতে পেরেই আনন্দ প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও অন্যান্য বিচারপতিরা।
গত বুধবার (১৩ মার্চ) ভারতের শীর্ষ আদালতের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিরা লাউঞ্জে একত্রিত হন। সেখানে ডাকা হয় প্রজ্ঞা ও তাঁর মা-বাবাকে। প্রধান বিচারপতি প্রজ্ঞাকে উত্তরীয় পরিয়ে, ফুলের তোড়া ও বই উপহার দেন।
প্রজ্ঞার বাবা অজয় কুমার সামল সুপ্রিম কোর্টের ক্যান্টিনের রাঁধুনি। তাঁর মেয়ের এই সাফল্যের কথা জানতে পেরেই সপরিবারে অজয় কুমারকে আসতে বলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
তিনি বলেন, “আমরা জানি এতদূর অবধি প্রজ্ঞা একাই সবকিছু সামলে এসেছে, তবে আমরা এইটুকু নিশ্চিত করব যে ও যা চায়, তাই যেন পায়। আমরা আশা করি ও উচ্চশিক্ষা শেষ করে দেশকে সেবা করতে ফিরে আসবে।”
প্রধান বিচারপতি প্রজ্ঞাকে সংবিধানের উপরে লিখিত তিনটি বই উপহার দিয়েছেন। প্রতিটি বই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সই করা। তবে শুধু প্রজ্ঞাকেই নয়, তাঁর মা-বাবার অক্লান্ত পরিশ্রমকেও সম্মান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। তাঁদের শাল পরিয়ে সম্মানিত করা হয়।
প্রজ্ঞা জানিয়েছেন, তাঁর বাবা পেশাগত কারণে যেহেতু সারাদিন আইনজীবী ও বিচারপতিদের মাঝে থাকেন, তাঁর মুখ তাঁদের সাফল্য, পরিশ্রমের কাহিনি তাঁকে ছোটবেলা থেকে অনুপ্রাণিত করেছিল। সেই কারণেই সে-ও আইনকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে। প্রজ্ঞাই তাঁর পরিবারের প্রথম আইনজীবী।