ভারতে জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হবে আগামী মাসে। দেশজুড়ে চলছে জোর নির্বাচনী প্রচার। নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যেই ভারতের একটি আদালত দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা নিষিদ্ধ করেছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২০০৪ সালে প্রণীত মাদ্রাসা শিক্ষার আইনকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারে মুসলিমবিরোধী যে ভাবমূর্তি ছিল, তা আরও উজ্জ্বল হলো বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপির আমলে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলমানদের বিরুদ্ধে নেওয়া নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মধ্যে আরও একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলো। আর জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপের কারণে মোদি মুসলিম ভোট হারাতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
ইসলামভিত্তিক স্কুল কার্যক্রম হচ্ছে মাদ্রাসা। যেখানে মূলত ইসলাম শিক্ষা দেওয়া হয়, পাশাপাশি জাতীয় কারিকুলামে থাকা পাঠ্যবইও পড়ানো হয়। শুক্রবারের রায়ে বলা হয়, এই আইন ভারতের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থি। রায়ে মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা শিক্ষার্থীদের প্রচলিত স্কুলগুলোতে শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাঠানোর কথাও বলা হয়েছে।
শুক্রবারের রায়ে বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী ও বিবেক চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার এটাও নিশ্চিত করবে যে রাজ্যের ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সী কোনো শিশু যেন যথাযথভাবে স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থেকে বাদ না পড়ে।
অংশুমান সিং রাঠোর নামে এক আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট মাদ্রাসা নিষিদ্ধের এ রায় দেন। অংশুমান সিং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কিনা বা তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে বা তাদের মতাদর্শে উৎসাহিত হয়ে হাইকোর্টে এই আবেদন করেছেন কিনা, জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই রায় ২৭ লাখ শিক্ষার্থী এবং ২৫ হাজার মাদ্রাসার প্রায় এক লাখ শিক্ষকের জীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ইফতিখার আহমেদ জাভেদ। ভারতে মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ মুসলমান।
উত্তর প্রদেশের ক্ষমতায় থাকা বিজেপির মুখপাত্র রাকেশ ত্রিপাঠী বলেছেন, রাজ্য সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে নয়। বরং তারা মুসলমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর রয়টার্সের।