সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের নির্বাচনে বিএনপির প্যানেল থেকে বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে চিঠি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তবে সংগঠনের দেওয়া চিঠিতে পুনর্নির্বাচনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করলেও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
দায়িত্ব গ্রহণে বারণ
গতকাল ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের নির্বাচনে বিএনপির প্যানেল থেকে বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে চিঠি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/সম্পাদকদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ১০মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আপনাকে/আপনাদের এই মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি/ আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। আপনি/আপনারা দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।’
আরও পড়ুন: বিচারপতি ইনায়েতুর রহিমের মায়ের মৃত্যু, প্রধান বিচারপতির শোক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে। আইনজীবী সমাজ ও দেশের আপামর জনগণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের ইঙ্গিত
এরপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ‘আমি কিন্তু ওই দিনই ভোট পুনর্গণনার দাবি করেছি। আমার সেই আবেদন তখন কমিশন গ্রহণ করেনি। পুরো প্যানেলে আমরা কমপক্ষে ১২ জন এগিয়ে ছিলাম। পুনর্নির্বাচনের দাবিতে আমরা এখনও অটল। আমার সভাপতি পদেও আমি পুনর্নির্বাচন চাই। পুনর্নির্বাচন হলে আমি খুশি হব, আইনজীবীরা খুশি হবেন। আর পুনর্নির্বাচন যদি না হয়, আমি সভাপতি পদসহ চারটি পদে বিজয় হয়েছি। এখনতো আর পদত্যাগের সুযোগ নাই, শুধু এই চারপদে পুননির্বাচনেরও সুযোগ নাই।’
তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের একজন শীর্ষ নেতার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। খোকন বলেন, ‘তার ভূমিকা রহস্যজনক। আওয়ামী লীগকে পুরো প্যানেল দিতে ওই নেতা ভোট গণনার সময় বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন। ভোট যাই হোক গণনা সুষ্ঠু হলে কম করে হলেও আমরা ১৩টি পদে জয়ী হতে পারতাম।’
খোকন চিঠির বিষয়ে বলেন, ‘কে কী বললো, সেটার দেখার বিষয় নয়। আমার পরাজয়ের কোনো ইতিহাস নাই। সে সময় তারা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা না হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে জয়ী হতে পারতাম।’
দায়িত্ব না নেওয়া সংক্রান্ত সংগঠনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচিত, দায়িত্ব নেওয়া বা না নেওয়ার কী আছে?’
আরও পড়ুন: ব্যারিস্টার খোকনকে সভাপতি পদে দায়িত্ব পালনে বিরত থাকতে চিঠি
নির্বাচনে বিজয়ী যারা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৪টি পদে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে সম্পাদক পদে শাহ মঞ্জুরুল হকসহ ১০টি পদে আওয়ামী লীগের প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিজয়ী বিএনপির অন্য তিনজন হলেন- সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ব্যারিস্টার খোকনকে সভাপতি পদে দায়িত্ব পালনে বিরত থাকতে চিঠি
আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে বিজয়ী অন্য ৯ জন হলেন- সহসভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও ড. দেওয়ান মো. আবু ওবায়েদ হোসেন, ট্রেজারার পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনছারী, সহ-সম্পাদক পদে মো. হুমায়ুন কবির ও হুমায়ুন কবির (পল্লব), সদস্য পদে রাশেদুল হক খোকন, মো. রায়হান রনী, মো. বেল্লাল হোসেন (শাহীন) ও খালেদ মোশাররফ (রিপন)।