গাছ কাটা
গাছ কাটা

যশোর-নড়াইল মহাসড়কের গাছ না কাটার ওপর হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা

সাম্প্রতিককালে তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি ও জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মধ্যেও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে মর্মে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (HRPB) বিগত গত ৫ মে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে।

উক্ত রিট পিটিশনের গত ৭ মে আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করেন এবং স্থিতি অবস্থার বিষয়ে আদেশের জন্য ৮ মে দিন ধার্য রাখেন। পরবর্তীতে ১২, ১৩ এবং আজ রোববার (১৯ মে) আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এইচআরবিপি এর পক্ষে একটি সাপ্লিমেন্টারি এফিডেফিট দাখিল করে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, যশোর নড়াইল ছয় লেন রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কোন টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। তা সত্ত্বেও উক্ত রাস্তার দুপাশে শত শত গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।

তিনি আদালতে বলেন, প্রচন্ড তাপদহে মানুষের প্রয়োজনে গাছগুলো কাটা বন্ধ রাখা প্রয়োজন।

তিনি আদালতে আরো বলেন, গাছ সংরক্ষণ করেও ছয় লেনের রাস্তার কাজ করা সম্ভব। তাতে জনগণ উপকৃত হবে।

শুনানিতে সরকার পক্ষে আদালতে দাবি করা হয় যে, গাছ কাটা যাবে না এমন কোন আইন দেশে নাই এবং গাছ কাটা বন্ধ হলে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে।

তার বিপরীতে অ্যাডভোকেট মোরসেদ বলেন, মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ২০৩০ সালে দাবদাহে অন্যতম শীর্ষ নগরী হবে ঢাকা। সুতরাং, গাছ সংরক্ষণ করে এখনই ব্যবস্থা না নিলে জনগণের ভোগান্তি দূর করা সম্ভব হবে না। এমনকি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুসারে বেঁচে থাকার অধিকার যা মৌলিক অধিকার তাও বিঘ্নিত হবে।

আরও পড়ুন: আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের ব্যাখ্যা তলব

আজ রোববার (১৯ মে) শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান এবং বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ, যশোর নড়াইল ছয় লেনের সড়ক নির্মাণে বর্তমানে রাস্তার পাশে থাকা গাছ কাটার উপরে স্থিতি অবস্থার আদেশ জারি করেছেন।

একইসাথে আদালত আদেশ উল্লেখ করেন ছয় লেন সড়কের টেন্ডার আহ্বান করার পরে উক্ত স্থিতি অবস্থার আদেশ বাতিল হবে।

এইচআরবিপি-এর পক্ষে রিট পিটিশনার হলেন এডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এডভোকেট মোঃ এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈই।
বিবাদীরা হলেন সচিব কেবিনেট বিভাগ; মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়; সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়; সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়; সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ; ডিরেক্টর জেনারেল পরিবেশ বিভাগ; মেয়র, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন; প্রধান প্রকৌশলী, এলজিইডি, প্রধান বন সংরক্ষক; প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক মহাসড়ক বিভাগ ও আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশ।

বাদি পক্ষে শুনানী করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল এবং অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডিএজি বিপুল বাগমার এবং সড়ক বিভাগের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট এসএম জহিরুল ইসলাম।