রংপুরে রোগীর স্বজনের পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ‘রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক, ডাক্তারকে ডাকতে গেলেই মারলেন লাথি’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য রংপুর জেলা প্রশাসককে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তপূর্বক আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রেরণ করতে বলেছে মানবাধিকার কমিশন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান জানান, কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সুয়োমোটো আদেশনামার বিষয়বস্তুতে উল্লেখ করা হয়, রংপুরে রোগীর স্বজনের পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। চিকিৎসকের নাম সুকুমার মজুমদার। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি নিয়মিত রোগী দেখেন পপুলার-২ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার বিবরণ দিয়ে ভুক্তভোগী ছালমা বেগম বলেন, আমার চাচা দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ। ১৪ দিন আগে অসুস্থ চাচাকে নিয়ে ডা. সুকুমার মজুমদারকে দেখাই। এ সময় তিনি প্রেসক্রিপশন দিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। দুই সপ্তাহ পরও চাচার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পপুলার-২ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়ে আসি ডা. সুকুমার মজুমদারকে দেখাতে।
আরও পড়ুন: নিরাপরাধ মা ও শিশুর ২২ ঘণ্টা হাজতবাস: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন চায় মানবাধিকার কমিশন
কিন্তু চাচার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সত্ত্বেও তিনি সিরিয়াল দিচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে আমার চাচা নিঃশ্বাস নিতে পারছিলেন না। শেষে আমি ডাক্তারের রুমে গেলে উনি কোনো কিছু বলার আগেই আমার পেটে লাথি মারেস। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নারীকে লাথি মারার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডা. সুকুমার মজুমদার বলেন, ‘ওই নারী জোর করে চেম্বারে ঢোকার চেষ্টা করলে আমার সহকারী তাকে বাধা দেন। পরে জোর করে চেম্বারে ঢোকে। এতে রেগে গিয়ে আমি তাকে ধাক্কা দিই। তার পেটে লাথি মারার অভিযোগ মিথ্যা। তবে যেহেতু আমি তাকে রেগে গিয়ে ধাক্কা মেরেছি সেজন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকব।’
মানবাধিকার কমিশনের সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যেখানে সুস্থ করার কথা সেখানে চিকিৎসা সেবা চাওয়ায় একজন মুমূর্ষু রোগীর স্বজনের পেটে চিকিৎসক কর্তৃক লাথি মারার অভিযোগ অত্যন্ত অমানবিক ও অনভিপ্রেত। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া সমীচীন মর্মে কমিশন মনে করে। এ অবস্থায়, অভিযোগের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তপূর্বক ২০ আগস্টের মধ্যে কমিশনকে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রেরণ করতে রংপুর জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে।