পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ
আইনি নোটিশ

রাস্তা অবরোধ বন্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ

তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ কমাতে রাস্তা অবরোধ বন্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।

আজ রোববার (১৪ জুলাই) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অ্যাডভোকেট হাসান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের স্বত্ত্বাধিকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার সংশ্লিষ্টদের এ নোটিশ প্রেরণ করেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের ঠিকানায় এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪ পরীক্ষা এবং এইচএসসি ২০২৪ পরীক্ষা চলমান থাকাকালে সম্প্রতি বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বলপ্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসবের কারণে তীব্র যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে কর্মব্যস্ত দিনগুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে সভা, সমাবেশ, মিটিং, মিছিল, পরিবেশ দূষণ করে উচ্চস্বরে মাইক ও সাউন্ডবক্স ব্যবহার করে শোভাযাত্রা করে রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো কর্তৃক জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বলপ্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে কোনও প্রকার জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর ৪ ধারা ও প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুসারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের জান-মাল ও নিরাপত্তা সহকারে স্বাধীনভাবে রাস্তায় চলাচলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলন : শিক্ষার্থীদের আসামি করে পুলিশের মামলা

নোটিশে শুক্রবার ছাড়া অন্য দিনগুলোতে কোনও সংগঠন ও রাজনৈতিক দলকে রাস্তায় সভা, সমাবেশ, মিটিং, মিছিল, শোভাযাত্রার অনুমতি না দিতে বলে হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এই বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিক তার স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য সভা সমাবেশ মিটিং মিছিল করতে পারেন। কিন্তু, মিটিং-মিছিলের কারণে যেন কোনও দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি না হয় কিংবা অন্য কোনও নাগরিকের স্বাভাবিক জীবনযাপনের ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেই জন্যও যথাযথ অনুমতির প্রয়োজন। এছাড়া সভা সমাবেশের নিরাপত্তার জন্যও পুলিশের সাহায্য নেওয়া উচিত।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এই শহরের যেকোনও একটি রাস্তা বন্ধ থাকলে এর প্রভাবে পুরো শহরে গভীর রাত পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির পাশাপাশি অপচয় হয় কর্মঘণ্টা, জ্বালানির অপচয় এবং পরিবেশ দূষিত হয়।

লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার আরও বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ১২৭, ১২৮ ও ১২৯ ধারা এবং পুলিশ আইন ১৮৬১ এর ৩০, ৩১ ও ৩২ ধারা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন সময়ে জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো, বলপ্রয়োগ করা, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনের গতি কমানো, গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া, যানবাহন চলাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলেও আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০২৪ এর ৪ ধারা কিংবা প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুসারে কোনও প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা পুলিশ কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয় নাই। যার দায়ভার কোনভাবেই লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতাদের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

‘দায়িত্বশীল পদে থেকে জনদুর্ভোগ লাঘবে যথাযথ আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তারা নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবহেলা করেছেন’, বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।