মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম: বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়ে দাবী জানিয়েছেন যে, অতিসত্ত্বর বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন করতে হবে। বিচারকদের সংগঠনটি আরও দাবী করেন যত তাড়াতাড়ি বিচার বিভাগের জন্য পৃথক পূর্ণাঙ্গ সচিবালয় গঠন হবে ততই সংবিধান মতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে। এটা ন্যায়্য দাবী নিঃসন্দেহে।কিন্তু কেন হচ্ছে না পৃথক সচিবালয়।আদালতের আদেশ ও রায় এর পরেও বাস্তবায়নে সদিচ্ছার অভাব নাকি রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে এখানে। তাছাড়া মাজদা’র হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় প্রদান করেন তার মধ্যে অন্যতম নির্দেশনা ছিল বিচার বিভাগের জন্য পূর্ণাঙ্গ পৃথক সচিবালয় গঠন করতে হবে। আজও সেই রায়ের অন্যতম নির্দেশনা ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আলোর মূখ দেখেনি যদিও বিগত সরকার গুলো বাস্তবায়নের কথা বারবার উচ্চারণ করলেও আদৌও কেউ তা করেনি।
আমরা জানি ২০০৭ সালে ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে ম্যাজিস্ট্রেসী আলাদা হয়, তবে পৃথক হলেও স্বতন্ত্র সচিবালয় না থাকায় এবং বিচারকদের বদলী, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা বিষয়ক দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকায় ম্যাজিস্ট্রেসী পৃথককরণ খুব একটা কাজে আসেনি। তার অর্থ হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মোটাদাগে নিশ্চিত হয়নি।২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিলো বিধায় নির্বাহী বিভাগ থেকে ম্যাজিস্ট্রেসী পৃথক হয়েছিল। তারপর পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার একটানা ১৬ বছরের মতো ক্ষমতায় থাকলেও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে ততটা মাথা ঘামায়নি। বলা যায়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে নিজেদের ক্ষমতা কেন্দ্রিক আধিপত্য কমে যাবে এই আশঙ্কায় হয়তো তাঁরা করেনি। এর আগে বিএনপি ও চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকলেও তাঁরা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেনি।মূলত বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে কেউই পুরোপুরি চাইনি।এখনো চাই কিনা তা পৃথক সচিবালয় গঠনসহ বিচার বিভাগের অন্যান্য সংস্কার বাস্তবায়নে আন্তরিকতার উপর নির্ভর করছে।
রাজনৈতিক সরকার বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তাঁরা সবাই বিচারক ও বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলী ও পদোন্নতি আইন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত থাকায় বিচারকগণ ঢাকায় থাকতে, দূরে বদলী ও পদায়নের ভয়ে নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে পারেননি। এখনো সেভাবেই চলছে। দীর্ঘ ১৭ বছরের জুলুম নির্যাতনে অতিষ্ঠ জনগণ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর। তারমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হচ্ছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। বিচারক তথা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ পৃথক সচিবালয় যার নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুপ্রিম কোর্ট।বিচারকদের বদলী পদায়ন ও পদোন্নতি হবে নিয়মমাফিক এবং আইনানুগ পন্থায়। সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যে অধস্তন আদালতের বিচারক বদলী পদায়ন নীতিমালা প্রণয়নের খসড়া সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে বিচারকদের মতামত চেয়েছে। দারুণ ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। তাঁর মধ্যে উল্লেখ্য ছিল বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় এবং কিভাবে পূর্ণাঙ্গ সচিবালয় করা হবে তার রপরেখা সম্বলিত প্রস্তাব ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। যার ফলে অন্তত আশার সঞ্চার হয়েছে যে বিচার বিভাগের সংস্কার ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অগ্রসরমান।
ইতোমধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারে ০৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিচার বিভাগ সংস্কার তাঁর মধ্যে অন্যতম। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন বিচার সংশ্লিষ্ট সকল স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলাপ আলোচনা করছে। সকল স্টেক হোল্ডারগণ বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠনে ঐক্যমত পোষণ করেছেন। বিচার বিভাগ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সকল কমিশনারগণ অত্যন্ত সুক্ষ ভাবে সবকিছু পর্যালোচনা করে বিচারক ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নিবেন এই প্রত্যাশা।
সংবিধান সংশোধন করে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলী, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা বিষয় রাষ্ট্রপতির পক্ষে আইন মন্ত্রণালয় করে থাকে।সংবিধানের ১১৬ক নং অনুচ্ছেদ এ উল্লেখ রয়েছে-এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ এবং ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।সেখানে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেয়ার কথা থাকলেও বিগত রাজনৈতিক সরকার গুলো এ ক্ষেত্রে চরম ফ্যাসিবাদী আচরণ করেছে। বিচার বিভাগের জন্য পূর্ণাঙ্গ পৃথক সচিবালয় না হলে এই ফ্যাসিবাদী আচরণ চলতে থাকবে। সেজন্য যতদ্রুত সম্ভব এই সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট আইন উপদেষ্টা মহোদয় দেশ ও জনগণের স্বার্থে এবং ছাত্রদের চাহিদা মোতাবেক বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতে এগিয়ে এসেছেন এবং আসবেন।
ইতোপূর্বে গত ২১ সেপ্টেম্বর’২৪ বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেন। উক্ত ভাষণে দেয়া প্রতিশ্রুতি মতো সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মতামত নেওয়ার পরে গত ২৭ অক্টোবর’২৪ বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় গঠনের প্রস্তাবনা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক পৃথকীকরণের বিষয়টি নিয়ে কোন গড়িমসি বরদাশত করবে না ছাত্র-জনতা।আশা করা যায় বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের জন্য অঅইন মন্ত্রণালয় খুব শিগগিরই পদক্ষেপ নেবেন।
বাংলাদেশ একটি সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও আমাদের দেশে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে, দীর্ঘদিন যাবত বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব প্রয়োগের প্রবণতার যে চর্চা অব্যাহত রয়েছে, তা রোধ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের দেশে আইনের শাসন ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা চর্চার সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ, আমাদের সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন৷ নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নিশ্চিতকরণকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সূত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম.
আমাদের সংবিধানে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক রাখার কথা বলা হলেও সমকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতায় এদেশে বিচার বিভাগের কার্যকর পৃথকীকরণ অসম্পূর্ণই থেকে গেছে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, এমন একটি প্রেক্ষাপট সত্ত্বেও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৭৯/১৯৯৯ নম্বর সিভিল আপিল মামলার রায়ে (যা মাসদার হোসেন মামলা নামেই অধিক সমাদৃত) নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের পূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরার মাধ্যমে আমাদের দেশে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির বাস্তবায়নের পথকে সুগম করে দিয়েছে। ওই রায়ে ক্ষমতার পৃথকীকরণের যে রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে, তার অন্যতম মৌলিক ভিত্তি হলো দেশের বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা।
ওই মামলার রায়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বর্তমানে প্রচলিত দ্বৈত-শাসন কাঠামো তথা অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, শৃঙ্খলা প্রভৃতি বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের যে যৌথ এখতিয়ার রয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে বিলোপ করে বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাকে ক্ষমতার পৃথকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করেছে।
এ কথা সত্য যে, বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক সরকারের অনীহার কারণে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সম্ভব হয়নি। এ কারণে বিগত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বর্তমান সময় হচ্ছে, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের শ্রেষ্ঠ সময়। এ প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা।সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, ২৮ অক্টোবর।কেননা, কেবলমাত্র পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আমাদের দেশে দক্ষ, নিরপেক্ষ ও মানসম্পন্ন বিচার কাজের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই বলে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সকল সদস্যদের পক্ষে বিবৃতিতে বলেন, বিচার বিভাগের অর্থবহ স্বাধীনতা নিশ্চিতকল্পে একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। প্রধান বিচারপতি এরই মধ্যে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন। যা বর্তমানে সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক ও জুডিসিয়াল সার্ভিস এসাসিয়েশনের বিবৃতি। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠাসহ বিচারকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে এসোসিয়েশনের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি অধস্তন আদালতের বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট তথা হাইকোর্ট বিভাগকে সাচিবিক সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগের এই তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ নয়। কেননা বিদ্যমান কাঠামোতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে অধস্তন আদালত সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব আসার পর হাইকোর্ট বিভাগ তার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের মর্ম অনুসারে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ হাইকোর্ট বিভাগের একচ্ছত্র অধিকার। তাই সাংবিধানিক এই বাধ্যবাধকতা সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক।
বিচার বিভাগের বিদ্যমান সমস্যা সমূহের সমাধান করতে হলে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় অত্যাবশ্যক।উক্ত সচিবালয় গঠন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় যতদ্রুত সম্ভব নিশ্চিত করতে হবে। পুরো রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগের মধ্যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে আন্তরিকতা দেখাবে তা হয়তো অন্য কোন রাজনৈতিক সরকার দেখাবে না। কায়েমি স্বার্থে রাজনৈতিক সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ইতোপূর্বে আগ্রহ দেখায়নি এরপর ও যে রাজনৈতিক সরকার আসবে তারা ও হয়তো ততটা আগ্রহী হবে না। এটা এই উপমহাদেশের ভৌগোলিক ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাব ও দিক।রাস্ট্র সংস্কারের যে মওসুম এখন চলছে তাতে এই প্রত্যাশা করা যেতেই পারে যে, বিচার বিভাগ সংস্কার সমূহের মধ্যে সর্বাগ্রে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করে অধস্থন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি এবং শৃঙ্খলা বিষয়ক নিয়ন্ত্রণ এখনই সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আনা।বিচার বিভাগে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার বিলোপ সাধনের এখনই সর্বোচ্চ সময়।
লেখক: মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম (পিএইচডি), আইন গবেষক ও কলামিস্ট। Email-bdjdj1984du@gmail.com