ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা: বিজেএসএ
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (লোগো)

বিচারকদের নিয়ে অশোভন বক্তব্য, নওগাঁর পিপির অপসারণ দাবি

বিচারকদের নিয়ে অশোভন মন্তব্য, হুমকি এবং আদালত অবমাননাকর বক্তব্য প্রদানের অভিযোগ তুলে নওগাঁর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু জাহিদ মো. রফিকুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেছে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন।

সংগঠনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতে এ দাবী জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, ইদানিং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরগুনা (পাথরঘাটা), নওগাঁসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আদালতের আইনানুগ আদেশকে কেন্দ্র করে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি আদালত প্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী স্থানে সভা, সমাবেশ, মিছিল ও প্রতিবাদের নামে আদালত ও বিচারকদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, হুমকি-ধমকি এবং আদালত অবমাননাকর কর্মকান্ড সংঘটন করছেন।

শুরুতে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হলেও সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে এসব কর্মকান্ডকে বিচার ও বিচারকদের উপর চাপ সৃষ্টির একটি প্রবণতা হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে। সর্বশেষ নওগাঁ জেলার বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু জাহিদ মো. রফিকুল ইসলাম একটি সভায় অপ্রাসঙ্গিকভাবে বিচারকদের উদ্দেশ্যে অশোভন বক্তব্য, হুমকি এবং আদালত অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান করেন যা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। উক্ত বক্তব্যের ভিডিও আমাদের গোচরীভূত হয়েছে।

আরও পড়ুনআদালত চত্বরে সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষায়িত ফোর্স গঠনের দাবী

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উক্ত বক্তব্য দ্বারা তিনি ‘দ্য বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার্স এন্ড বার কাউন্সিল অর্ডার, ১৯৭২’, ‘দ্য বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার্স এন্ড বার কাউন্সিল রুলস, ১৯৭২’ এবং ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ক্যানন্স অব প্রফেশনাল কনডাক্ট এন্ড এটিকেট’ এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া উক্ত কর্মকান্ড ‘দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০’ সহ ‘আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২’ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এমন কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি পেশাগত অসদাচরণ, এখতিয়ার লঙ্ঘন, আদালত অবমাননা এবং ফৌজদারি অপরাধ করছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। তিনি পাবলিক প্রসিকিউটরের মত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার আইনগত ও নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন।

তার এরূপ বক্তব্য নওগাঁ জেলাসহ সারা দেশের বিচারকদের মধ্যে ভীতি, অসন্তোষ এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পরেও তিনি স্বপদে বহাল থাকলে তা বিচারকদের সাহসিকতার সাথে এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশকে ব্যহত ও বিনষ্ট করবে।

এমতাবস্থায়, সারা দেশের আদালত প্রাঙ্গণে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও বিচারকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মনোবল সমুন্নত রাখতে উক্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নওগাঁর বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু জাহিদ মো. রফিকুলের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ তাঁকে আগামী দশ কার্যদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটরের পদ থেকে অপসারণের জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।