আদালতের সহিত অবমাননাকর কাজে লিপ্ত থাকা ও আদালতের দরজায় লাথি মারা এবং কাঠগড়া থেকে আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার অপরাধে দায়েরকৃত জিআর মামলায় মৌলভীবাজারে মুহুরী রনজিত কুমার নাগকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আসামী রনজিত কুমার নাগ মৌলভীবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশ মোতাবেক স্বেচ্ছায় আত্বসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবদেন করলে আদালত তাকে সি/ডব্লিউ মূলে জেল হাজতে প্রেরণের এ আদেশ প্রদান করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মৌলভীবাজার বারের মুহুরী রনজিত কুমার নাগের বিরুদ্ধে আদালতের সহিত অবমাননাকর কাজে লিপ্ত থাকা ও আদালতের দরজায় লাথি মারা এবং কাঠগড়া থেকে আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধে আদালতের বেঞ্চ সহকারী কর্তৃক দ্রুত বিচার আইনে মৌলভীবাজারর মডেল থানায় বিগত ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে একটি জিআর ২৫৬/২৪ ইং মামলা দায়ের করা হয়।
আসামী রনজিতের পক্ষে জামিন শুনানী করেন তৃণমূল বিএনপির নেতা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার এবং মৌলভীবাজার বারের অ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজারে ৬ আইনজীবী সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা
অন্যদিকে বাদী বা রাষ্ট্র পক্ষে শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন চৌধুরী, জিপি অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ চৌধুরী, নারী ও শিশু নিযাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট বকসী জোবায়ের আহমদ, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নুল হক, সিনিয়র অ্যাডভোকেট আব্দুল মুহাইমিন শেফাক, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম রুহেল, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নিয়ামুল হক, অ্যাডভোকেট সায়েদ আহমদ আদনান, অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান মনির, অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ, অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তপন কান্তি দে, অ্যাডভোকেট জালাল আহমদ, অ্যাডভোকেট বিল্লাল আহমদ, অ্যাডভোকেট মতলিব আহমদ, অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ সহ বারের সিনিয়র ও জুনিয়র শতাধিক আইনজীবী।
মৌলভীবাজার বারের সকল আইনজীবী তার জামিন শুনানীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও বারের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব আদালতের সহিত ঘৃণিত অপরাধে জড়িত আসামীর পক্ষে জামিন শুনানীতে অংশগ্রহণ করায় বারের সকল আইনজীবীগণ এর প্রতিবাদ করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে নানান স্লোগানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
আইনজীবীরা বলেন, যেখানে বারের সকল আইনজীবী আদালতের সহিত ঘৃণিত অপরাধে জড়িত আসামীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, সেখানে তিনি কিছু টাকার জন্য আসামীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া মানে সকল আইনজীবী ও আদালতের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার শামিল। আসামী রনজিত যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে তা মৌলভীবাজার আদালত প্রাঙ্গনে আর কোনদিন ঘটে নাই। তাঁর মতো একজন সিনিয়র আইনজীবীর নিকট থেকে বারের আইনজীবীরা এমনটা আসা করেন নাই বলেও জানান এবং এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেন।