মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম: হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পরে নিহতের পরিবার দোষী ব্যক্তির প্রথম যে শাস্তির দাবী করে তা হলো ফাঁসি বা মৃত্যুদন্ড। হত্যাকান্ডের শিকার ব্যক্তি প্রভাবশালী হোক আর সাধারণ জনগণ হোক হত্যার ঘটনার পরে পোস্টারিংসহ মানববন্ধন হয় সেখানেও দাবী করা হয় ঘাতকের ফাঁসি চাই। এই ফাঁসি অবধি যেতে গেলে ভিকটিমের পরিবারের জান, মাল ও সময় সবকিছু খরচের প্রশ্ন রয়েছে।
অনেক সময় দেখা যায় আসামীরা প্রভাবশালী হলে বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে এবং বিচারকে পদে পদে বাধাগ্রস্থ করতে চাই। সাক্ষীকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। এমনকি তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুরো বিচার প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। হত্যার অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পরে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন করা। কারা কারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তা বের করা। আদালতে বিচারের প্রশ্ন আসে তারপরে।
ফেণীর ফুলগাজীর নুসরাত হত্যা, বরগুণার মিন্নীর প্রেমিক রিফাত হত্যা, জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা সংঘটিত বিশইজৎ হত্যা ও বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডসহ বিডিআর হত্যা মামলা গত এক যুগের সবচেয়ে আলোচিত মামলা। এসব মামলার বিচার সম্পন্ন করতে জনগণের জোরালো দাবী থাকায় বিচার সম্পন্ন হয়েছে।
ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার সব স্টেকহোল্ডার যেমন পুলিশ, আদালত সুন্দরভাবে কাজ করেছে। এভাবে অসংখ্যা হত্যা মামলার বিচার হয়েছে তবে কিছু হত্যা মামলার বিচার কালে কালে ও যুগে যুগে প্রশ্নবিদ্ধও হয়েছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার হয়েছে তবে ভিকটিম বা আসামী কোন পক্ষই ন্যায়বিচার পায়নি এরকম একটা প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে আশাবাদী যে ন্যায় বিচারের সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্টে সকল আসামী খালাসের বিরুদ্ধে আপিল হলে নিশ্চয়ই এখনও ন্যায়বিচার হতে পারে।আসামীদের সাজা হোক বা না হোক সঠিক তদন্তের ব্যবস্থা তো ও হতে পারে।
একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ঘটনা ঘটেছে বিএনপি ও চারদলীয়জোট যখন ক্ষমতায় ছিল সেসময়ে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিচার সম্পন্ন হয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে গ্রেনেড ছুড়ে একাধিক মানুষ হত্যা করা হলেও তার সঠিক তদন্ত হয়নি। অথবা উল্টো নিরপরাধ মানুষ আটক করে বিচার বিভ্রাট ঘটানোর চেষ্টা করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার ও তাদের অনুগত পুলিশ ও অন্যান্য এজেন্সী। ঠিক তদ্রূপ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মনগড়া তদন্ত সম্পন্ন করে ইচ্ছেমতো রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যার অভিযোগ এনে দায়সারাভাবে তদন্ত পূর্বক পরিকল্পিত বিচারের মাধ্যমে অনেক নিরীহ ও নির্দোষী ব্যক্তিদের সাজা প্রদান করে। যাকে অনেকে সেই সময় ফরমায়েসী রায় বলে অভিহিত করে।
অনেকে বলার চেষ্টা করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার নিয়ে বিএনপি ও চারদলীয়জোট রাজনীতি করেছিল এবং জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছলো। তেমনি আওয়ামী লীগ সরকারও সঠিক বিচার ও তদন্ত না করিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করেছে। মিথ্যা চার্জশীট তৈরি করে নিরাপরাধ মানুষকে জড়িয়েছ এবং তাদের বিরুদ্ধে সাজা প্রমাণ করতে বিচারের নামে অবিচার করেছে। আসামী ও ভিকটিমদের পরিবার ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বিচারক ও বিচারকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করায় বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট করার পায়তারা হয়েছে।
এ থেকে সহজেই অনুমেয় যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কত জরুরী বা পৃথক তদন্ত সংস্থা কেন দরকার বা পৃথক প্রসিকিউশন সার্ভিস যে কত দরকারি? বিচার বিভাগকে বা পুলিশকে বা সরকারি আইনজীবীদেরকে কেউ যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের নিমিত্তে ব্যবহার না করতে পারে তার সঠিক বন্দোবস্ত ও বাস্তবায়ন জরুরী।
ন্যায়বিচারকে জনগণের দোঁড়গোড়ায় পৌছে দিতে হলে বিচার বিভাগ তথা বিচারকের বদলি পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা বিষয় নিষ্পত্তির জন্য বিদ্যমান সাংবিধানিক দ্বৈতশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ও কেন হয়নি তা নিয়ে বিস্তার গবেষণার দাবি জানাচ্ছি। ন্যায় বিচার তথা গনতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিকল্প নেই।
আইনে আছে এক হাজার অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায় যাক কিন্তু একজন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন সাজা না পায় সেদিকে অবশ্যই বিচারককে খেয়াল রাখতে হয়। প্রত্যোকটি অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে সাজা দিতে হলে উক্ত অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হতে হয়। কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ থাকলে আসামীকে সাজা দেওয়ার সুযোগ আইনে নাই।
দেশের বিচার ব্যবস্থা যে কিভাবে চলছে তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। বিদেশে কারোর বিরুদ্ধে মামলা হলে ধরে নেওয়া হয় যে আসামীর সাজা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বিদেশে কারোর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনার সুযোগ নেই। কেউ যদি মিথ্যা অভিযোগ আনয়ন করেন এবং তা প্রমাণিত হয় তবে আসামীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।
আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থায় মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা মোকদ্দমা করার অবারিত সুযোগ রয়েছে।তাছাড়া মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে প্রমাণিত হলে দন্ডবিধির ২১১ ধারায় যৎসামান্য শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে যার ফলে মিথ্যা হয়রানিকর মামলা কমছেই না।বিদেশের বিচার ব্যবস্থার মতো মিথ্যা অভিযোগ দায়েরকারীর বিরুদ্ধে আমাদের বিচার ব্যবস্থায় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় নিয়ে নানা মনে নানা রকম ভাবনা কাজ করছে। সাধারণ জনগণ যাঁরা ফৌজদারী আইন কানুন বুঝে না তাঁরা ভাবছে গ্রেনেড হামলায় এতো লোক মারা গেলো তাতে কেউ দোষী হলো না এটা কেমন ন্যায়বিচার। নাকি বিচারের নামে প্রহসন। আবার আইনের মারপ্যাচে যারা খালাস পেয়েছে তারা মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছে এভাবে যে তাঁরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
হত্যার ঘটনায় এটা সত্য যে ভিকটিম নিশ্চিত মৃত্যু বরণ করেন এবং কারোর দ্বারা হত্যাকান্ডের শিকার হন। হত্যার ঘটনা জঘন্য অপরাধ এবং ধর্মীয় দৃষ্টিতে জীবন হত্যা মহাপাপ। রাষ্ট্রীয় আইনে হত্যার অপরাধের সাজা হচ্ছে হয় মৃত্যুদন্ড না হলে যাবজ্জীবন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে উঠে এসেছিল একটা রাজনৈতিক সমাবেশে প্রকাশ্য দিবালোকে একাধিক গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ২৪ জন নিহত এবং তিন শতাধিক মানুষ আহত হন।
আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। হামলার পরদিন মতিঝিল থানার তত্কালীন এসআই শরীফ ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। থানা পুলিশ, ডিবির হাত ঘুরে সিআইডি এই মামলার তদন্তভার পায়। ঘটনার চার বছর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ১১ জুন হত্যার অভিযোগ এবং বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির। জঙ্গি দল হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে সেখানে আসামি করা হয়।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ২০০৮ সালের ২৯ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে তাদের বিচারও শুরু হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে। সিআইডির বিশেষ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩ জুলাই আসামির তালিকায় আরো ৩০ জনকে যোগ করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।
সেখানে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ চারদলীয় জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের নাম আসে। দুই মামলায় মোট ৫২ আসামির বিচার শুরু হলেও অন্য মামলায় তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় মোট ৪৯ আসামির বিচার করেন বিচারিক আদালত। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ওই মামলার রায় হয়।
রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত। সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। (সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক ১ ডিসেম্বর ২৪)
কিছু প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের উপস্থিতিতে বিশাল জনসভায় এমন ন্যাক্কারজনক হামলা কে করলো? রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করতে এমন হামলা হয়েছিল কিনা? নাকি সরকারি দলকে বেকায়দায় ফেলতে বিরোধীপক্ষ নিজেরাই গ্রেনেড হামলার খেলা খেলেছিল? বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ১৬ বছর ক্ষমতায় ছিলো এবং বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার সম্পন্ন করেছেন। ৪৯ জন আসামির মধ্যে ১৯ জনকে ফাঁসি, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়।
ঘটনার সময় যাঁরা ক্ষমতায় ছিলো বিচার সম্পন্নকালে তারা বিরোধী রাজনীতিক দল। গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে প্রায় অর্ধেক আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন ঢাকার একটা আদালত। পরবর্তীতে রায় প্রদানকারী সেই বিচারক পুরষ্কার হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিযুক্ত হন। সেই রায়ের পরেও এরকম প্রতিক্রিয়া হয়েছিল যে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলায় সঠিক তদন্ত না করে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করতে অন্যায়ভাবে এই রায় দেওয়া হয়। যার ফলে এখন উক্ত মামলার সকল আসামি হাইকোর্টে এসে খালাস পেয়েছে।
এতো মানুষ নিহত, আহত হলো এবং আসামি সব খালাস, ব্যাপার কি তার ব্যাখ্য নিশ্চয়ই রায়ের গর্ভে উল্লেখ থাকবে। তবে কেন খালাস পেয়েছে আসামিরা সংক্ষিপ্ত আকারে সেটি আসামীপক্ষের আইনজীবীগণ বলেছেন। মোটা দাগে বলা হয়েছে মামলায় কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিল না। মানে ঘটনার সময় কে কে গ্রেনেড ছুড়েছিল তা কেউ দেখেনি এবং যার দোষ স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাজা হয় সেই দোষ স্বীকারোক্তির আইনগত কোন মূল্য ছিল না ইত্যাদি ইত্যাদি।
সাধারণ মানুষ ভাবছে মামলার ঘটনা, তদন্ত এবং সময় একই কিন্তু বিচারকগণ একই ঘটনায় বিচারে ভিন্ন ভিন্ন রায় দিলো। ব্যাপার কি? বিচারের সমস্যা নাকি বিচারকের সমস্যা এটা এখনই বোঝা যাবে না। বিচার সম্পন্ন হওয়ার কয়েকটি ধাপের মধ্যে এখনো শেষ ধাপ বাকী রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত বোঝা যাবে না যে একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারের সমস্যা নাকি বিচারকের সমস্যা। অধস্থন আদালত যেখানে সকল আসামীকে সাজা দিলো সেখানে হাইকোর্টে এসে সকল আসামী খালাস পেলো কিভাবে তার চূড়ান্ত বিচার হবে আপিল বিভাগ তথা সুপ্রিম কোর্টে। তাই ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ন্যায়বিচার হয়নি তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
হাইকোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল বলেন, পুরো রায় হাতে পাওয়ার পরে সকল আসামীর খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। (সূত্রঃ প্রথম আলো, ১ ডিসেম্বর ২৪) বিজ্ঞ এটর্নি জেনারেল সাহেব অবশ্যই আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে নীতির উপর অবিচল থাকবেন। হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ নিয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার রাজনীতি করায় তাদের শাস্তি তারা পেয়েছে বা পাচ্ছে তারা মানে এখন সকলেই মোটামুটি দেশছাড়া বা পলাতক নাইলে জেলখানায়।
তাই এখন যারা দায়িত্বশীল আছেন তাদের ইতিহাসের শিক্ষা নিয়ে এগুতে হবে।হত্যার শিকার ব্যক্তি যে পক্ষের বা মতের হোক না কেন, বিচার প্রক্রিয়ায় বা তদন্তে যারা দায়িত্বশীল তাদের যথাযথ অর্পিত দায়িত্ব পালন আবশ্যক।তার ব্যত্যয় হলে সৃষ্টিকর্তা আপন শক্তির মাধ্যমে প্রকৃতির বিচারে সামিল করবেন। প্রয়োজনে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ন্যায়বিচার পেতে সবাইকে সহযোগিতা করা উচিত।
প্রকৃত দোষী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও বিচার সচিবালয় পৃথক না করে পতিত হাসিনা সরকার যে ভুল করেছিল বলা যায় তাঁর খেসারত দিতে হচ্ছে একুশে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ভিকটিম ও তাদের পরিবারকে। শুধু গ্রেনেড হামলা মামলা নয় সকল মামলার ভিকটিম ও আসামীপক্ষের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে এবং ন্যায্য বিচার প্রতিষ্ঠা করতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিকল্প নেই।
লেখক: মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, (পিএইচডি ফেলো) আইন গবেষক ও কলামিস্ট।