বাংলাদেশে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলসহ বহুজাতিক ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বেআইনিভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ (ডাটা মাইনিং) ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার ঠেকাতে এ নোটিশ দেওয়া হয়।
আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ প্রেরণ করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর নিকট ডাকযোগে ও ইমেইলের মাধ্যমে নোটিশটি পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৩(খ)-এ বর্ণিত “চিঠিপত্র ও অন্যান্য যোগাযোগের গোপনীয়তার অধিকার” একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু বর্তমানে ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান ইতিহাস, ব্রাউজিং ডেটা, যোগাযোগ ও আগ্রহের তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করছে। এর ফলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
আইনি নোটিশে সরকারকে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে—
-
জাতীয় ডেটা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন – যেখানে বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
-
স্বাধীন ডেটা প্রোটেকশন অথরিটি গঠন – যা বহুজাতিক ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করবে।
-
বিটিআরসিকে ক্ষমতায়ন – গোপনীয়তা রক্ষায় বাধ্যতামূলক নির্দেশিকা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষমতা প্রদান।
-
তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা – কোম্পানিগুলোকে জানাতে হবে তারা কোন তথ্য সংগ্রহ করছে, কীভাবে ব্যবহার করছে ও কার কাছে বিক্রি করছে।
-
কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা – ডাটা মাইনিং বন্ধ না করলে দোষীদের বিরুদ্ধে জরিমানা, ফৌজদারি দায় এবং কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা আরোপ।
নোটিশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে উল্লিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ না হলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে জনস্বার্থে রিট আবেদন দায়ের করা হবে।