পাবনায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আপোষনামা হলেও তার শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এডিআর নং- ৩২৭/২০২৫ হিসেবে ১৯ আগস্ট ২০২৫ তারিখে আবেদনটি করেন মোঃ সিরাজুল ইসলাম বিশ্বাস, পিতা—মৃত আব্দুল গণি বিশ্বাস, গ্রাম—বড়ইচারা, পোস্ট—জয়নগর, থানা—ঈশ্বরদী, জেলা—পাবনা।
তার অভিযোগের প্রতিপক্ষ তার আপন ভাই মোঃ রেজাউল হক বিশ্বাস ও তার দুই ছেলে মাহফুজ ও মাহবুব।
আবেদনকারী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রতিপক্ষগণ দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া আচরণ করছে, আইন ভঙ্গ করছে এবং ভূমি জবর দখল করছে।
এর আগে প্রতিপক্ষ রেজাউল হক ২৬ জুন ২০২৫ তারিখে লিগ্যাল এইড অফিস, পাবনা-তে একটি দেওয়ানী অভিযোগ দায়ের করেন (এডিআর নং- ২১৪/২০২৫)।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ জুলাই ও ১৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারী জজ, উভয় পক্ষ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে মধ্যস্থতা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মধ্যস্থতার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়, লিগ্যাল এইড অফিসারের উপস্থিতিতে জমি মাপযোগ করে প্রাপ্য অংশ চিহ্নিত করা হবে এবং উভয়েই শান্তিপূর্ণভাবে দখলে থাকবে।
আরও পড়ুন : দেনমোহর জালিয়াতি : স্বামীর মামলায় স্ত্রী ও কাজীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
সে অনুযায়ী ২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের নেতৃত্বে এবং সার্ভেয়ার মোঃ আতিয়ার রহমানের পরিমাপে জমি মাপযোগ ও সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়। উভয় পক্ষের সম্মতিতে আপোষনামায় সই হয় এবং প্রতিপক্ষ রেজাউল হক ঘোষণা করেন যে, তার আর কোনো অভিযোগ থাকবে না।
কিন্তু অভিযোগকারীর দাবি, এর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রতিপক্ষ আপোষ ভঙ্গ করে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি করে। তারা তার দেওয়া বাঁশ ও নেটের ঘেরাবেড়া ভাঙচুর করে এবং সম্ভাব্য জমি ক্রেতাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
রেজাউল হক নাকি প্রকাশ্যে বলেন, “এরকম মাপযোগ অনেক হয়েছে, অনেকবার আমি আপোষনামায় সই করেছি, আবার ভঙ্গ করেছি, কোনো আইন-আদালত আমাকে কিছু করতে পারবে না।”
আবেদনকারী সিরাজুল ইসলাম অভিযোগপত্রের সঙ্গে ভাঙচুরের স্থিরচিত্র সংযুক্ত করে আইনগত সহায়তা চান।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার তার আদেশে উল্লেখ করেন—একটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়ের শর্ত ভঙ্গ করা সরকারী আইনগত সহায়তার অবমাননার শামিল। একইসঙ্গে আপোষ ভঙ্গ করে বেআইনীভাবে জমিতে প্রবেশ, ভাঙচুর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ।
ফলে আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ২১ঘ ধারার ক্ষমতাবলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইন চার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রতিপক্ষ রেজাউল হক গংদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে গতকাল ৩১ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিল করেছেন ওসি।