আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন
আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন

শিশু দেখিয়ে দুই সন্তানের বাবাকে জামিন: আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আলোচিত সাইবার হ্যাকার চক্রের প্রধান আসামি পলাশ রানাকে শিশু দেখিয়ে ভুয়া জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে জামিন আদায়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহীনুল ইসলাম তালুকদার গণমাধ্যমকে জানান। মামলার বাদী গাইবান্ধা জেলা শিশু আদালতের পেশকার সালাহউদ্দিন।

আদালতের নথি অনুযায়ী, সরকারি ভাতা হ্যাক করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৫ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর গ্রাম থেকে পলাশ রানা (২৫), তার সহযোগী সুমন মিয়া, সাইদুল ইসলাম ও আবু সাইদ লিটনকে যৌথবাহিনী আটক করে।

তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মোবাইল সিম, মোবাইল ফোন ও প্রযুক্তি সরঞ্জাম উদ্ধার হয়। পরবর্তীতে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রথমে ২০ জুলাই আমলী আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে ২৭ জুলাই জেলা দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন।

তবে তথ্য গোপন রেখে তিনি ৩ আগস্ট জেলা শিশু আদালতে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে পলাশ রানার বয়স ১৭ বছর ৭ মাস দেখিয়ে জামিন আবেদন করেন এবং আদালত তা মঞ্জুর করে।

পরবর্তীতে ১২ আগস্ট জেলা দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী সরওয়ার হোসেন বাবুল এ জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

আইনজীবী সরওয়ার হোসেন বাবুল জানান, পলাশ রানার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ১ জুন ২০০০ (বয়স ২৫ বছর ২ মাস), অথচ নতুন জন্মনিবন্ধনে জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১৫ জানুয়ারি ২০০৮। মামলার এজাহারেও আসামির বয়স ২৫ বছর উল্লেখ রয়েছে।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু বকর সিদ্দিক ছানা বলেন, আদালতের নির্দেশে পলাশ রানার জামিন বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে জেলা শিশু আদালতের বিচারক আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন।

পেশকার সালাহউদ্দিন বলেন, “আদালতের নির্দেশে বাদী হয়ে থানায় এজাহার জমা দিয়েছি।”

অভিযোগ অস্বীকার করে আইনজীবী শেফাউল ইসলাম রিপন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। মামলা হলে আদালতে মোকাবিলা করা হবে।”