মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজার বিচার বিভাগে নতুন সংযোজন হিসেবে ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিচারক কাজী সহিদুল ইসলাম এজলাসে নিয়মিত বিচার কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে এ নতুন আদালতের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম জানান, নতুন বিচারক মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদের কাছে যোগদান করেন।
অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে আপাতত অন্য একটি আদালতের এজলাস ব্যবহার করে বিচার কার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিচারক কাজী সহিদুল ইসলাম এজলাসে প্রবেশ করলে এপিপি অ্যাডভোকেট শেফাউল করিম রানা ও আদালতের কর্মচারীরা ফুল দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৩ এর প্রজ্ঞাপনে তাঁকে চট্টগ্রামের সিজেএম পদ থেকে কক্সবাজারের ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়।
বিচার বিভাগে সম্প্রসারণ
কক্সবাজারে আগে কেবল একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের পদ ছিল। মামলার চাপ বিবেচনা করে ২০২২ সালে আরও চারটি পদ সৃষ্টি হয়। ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর নতুন করে ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা জজের পদ অনুমোদন পাওয়ায় বর্তমানে মোট ৬টি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত কার্যক্রম চালাচ্ছে।
বর্তমানে দায়িত্বে থাকা বিচারকরা হলেন—
-
মোহাম্মদ আবদুল কাদের (প্রথম আদালত)
-
মামুনুর রশিদ (দ্বিতীয় আদালত)
-
মো. রবিউল আলম (তৃতীয় আদালত)
-
রোকেয়া বেগম (চতুর্থ আদালত)
-
নিশাত সুলতানা (পঞ্চম আদালত)
-
কাজী সহিদুল ইসলাম (ষষ্ঠ আদালত)
মামলার জট কমাতে নতুন পদক্ষেপ
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ছৈয়দ আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, নতুন আদালত চালু হওয়ায় মামলার জট কিছুটা কমবে এবং নিষ্পত্তির গতি বাড়বে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, জেলা পর্যায়ে অন্তত ২ জন এবং চকরিয়ার জন্য ১ জন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রয়োজন। এজন্য তিনি অতিরিক্ত পদ সৃষ্টির দাবি জানান।
বিশ্বস্ত সূত্র মতে, কক্সবাজার বিচার বিভাগে বর্তমানে ২ হাজারের বেশি হত্যা মামলা বিচারাধীন। একইসঙ্গে প্রায় দেড় হাজার মাদক মামলাও রয়েছে যেখানে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের সাজা হতে পারে।
বিচারক সংকটের কারণে অনেক পুরোনো হত্যা মামলা ১৫-১৬ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে সাক্ষীর মৃত্যু, আলামত নষ্ট হওয়া ও নথি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নতুন আদালতের জন্য প্রয়োজনীয় এজলাস, খাস কামরা ও সেরেস্তা নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদ। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুত অবকাঠামো সংকট কেটে গেলে বিচার কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।