অগ্রক্রয় কি, কেন, কিভাবে?
আইন-আদালত (প্রতীকী ছবি)

পৃথক ফৌজদারি ও পারিবারিক আদালত প্রতিষ্ঠায় প্রজ্ঞাপন জারি

প্রথমবারের মতো পৃথক দায়রা (ফৌজদারি) ও পারিবারিক আদালত প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। এজন্য সাত শতাধিক নতুন বিচারকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত দায়রা আদালতের জন্য ২০৩টি, যুগ্ম দায়রা আদালতের জন্য ৩৬৭টি এবং পারিবারিক আদালতের জন্য ১৬৩টি বিচারকের পদ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সরকারের এই পদক্ষেপে বিচারপ্রক্রিয়ায় গতি আসবে, মামলার জট কমবে এবং বিচারপ্রার্থীরা স্বস্তি পাবেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

বর্তমানে দেশের আদালতগুলোতে ৪৫ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন, অথচ বিচারক সংখ্যা মাত্র ২ হাজারের মতো। এই ঘাটতির কারণে একজন বিচারককে একইসঙ্গে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের দায়িত্ব পালন করতে হয়। এতে বিচার কার্যক্রম মন্থর হয়ে পড়ে এবং মামলার জট দিন দিন বাড়ছে।

শুধু অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতগুলোতেই গত মে মাস পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি দেওয়ানি মামলা এবং ১ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন ছিল। যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একই সময়ে ৫ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মামলা জমে আছে। পারিবারিক আদালতের ক্ষেত্রেও একই চিত্র—সহকারী জজ বা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতগুলোতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পারিবারিক মামলা ঝুলে আছে।

আইনে দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং পারিবারিক আদালতের পৃথক ব্যবস্থা স্পষ্টভাবে বলা আছে। যেমন দ্য সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট ১৮৮৭ দেওয়ানি আদালত, দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ দায়রা আদালত এবং পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩ পারিবারিক আদালতের বিধান দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এতদিন বিচারকদের একসঙ্গে একাধিক এখতিয়ারে মামলা পরিচালনা করতে হয়েছে। এতে ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছে এবং বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

বিচার বিভাগের এ সংকট সমাধানে গত ২১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন আইন মন্ত্রণালয়কে পৃথক আদালত গঠনের জন্য চিঠি পাঠায়। সেখানে বলা হয়, একই বিচারকের ওপর একাধিক দায়িত্ব চাপানোর কারণে প্রত্যাশিত মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব হচ্ছে না। মামলাজট নিরসন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পৃথক আদালত গঠন অপরিহার্য।