সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় নারীর পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। দলীয় কাঠামোর প্রতিটি স্তরে নারীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তিনি বলেন, “আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে নারী শুধু ভোটার বা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক নন, বরং সংসদীয় নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখবে।”
গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত ‘জাতীয় রাজনীতিতে নারীর অর্থপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব’ বিষয়ক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ৬৫ শতাংশ নারী সক্রিয় নেতৃত্বে ছিলেন, যা নারীশক্তির জাগরণের বাস্তব প্রমাণ। “২০২৫ সালে এসে এই অগ্রযাত্রাকে ধর্ম বা পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে পিছিয়ে দেওয়া অন্যায্য,” তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নারীরা সাধারণভাবে ধর্মপ্রাণ হলেও, তারা সকল পেশায় পারদর্শিতার প্রমাণ দিয়েছেন। ধর্ম কখনোই নারীর প্রতি বৈষম্য সমর্থন করে না, তাই ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা ব্যবহার করে নারীদের পিছিয়ে রাখার চেষ্টা আজ অগ্রহণযোগ্য।
উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, নারী-পুরুষ উভয়েই দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিচ্ছেন। “নেতৃত্বের অঙ্গনেও যদি সুযোগ দেওয়া হয়, নারীরা তাদের যোগ্যতা ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করবে,” তিনি বলেন।
নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনি ব্যয় বহনে ও নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণে সহায়ক পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে আরও বেশি নারী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নিলোফার চৌধুরী মনি ও শ্যামা ওবায়েদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, নারী সংগঠন, শ্রমজীবী নারী নেটওয়ার্ক ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নারীর নেতৃত্বই হতে পারে একটি ন্যায্য, অংশগ্রহণমূলক ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের চাবিকাঠি।