ফাঁসির রায় মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কানাডায় পলাতক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নূর চৌধুরী। তাকে ফিরিয়ে আনা আদৌ সম্ভব কী না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন বিশ্লেষকদের মতে আইনিভাবেই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক আসামি নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে দেশে ফেরানো সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ায় ১৯৮৩ সালে হত্যা মামলায় জোসেফ জন কিন্ডলার নামে একজনের মৃত্যুদণ্ড হয়। সাজার হাত থেকে বাচতে কানাডায় পালিয়ে যান আসামি। কিন্তু যুক্তরোষ্ট্রের আবেদনের প্রেক্ষিতে কিন্ডলারকে ফেরত দেয় কানাডা। তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না এমন কোনো শর্তও দেয়নি কানাডা।
পরের বছর একই অবস্থার মুখোমুখি হন, চিটাট এনজি নামে আরেক মার্কিন নাগরিক। তাকেও যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হয়।
প্রচলিত আছে, যে দেশে মৃত্যুদণ্ড আছে; সেখানে আসামিকে প্রত্যাবাসন করে না কানাডা। কিন্তু এই দুটি মামলার আদেশ তার ব্যতিক্রম।
তাই আন্তর্জাতিক আইন বিশ্লেষক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলছেন, ‘প্রথমত, মিলার ফ্যাসিস কুইন মামলাসহ কানাডিয়ান সুপ্রিম কোর্টের অসংখ্যা মামলা রয়েছে যেখানে আদালত বলছে কোনো অপরাধীকে স্বদেশে ফিরিয়ে দেবার ক্ষেত্রে অপরাধীর কি সাজা হবে সেটা যদি কানাডিয়ান চার্টার দিয়ে রেগুলেট করা হয় তবে তা উক্ত দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। দ্বিতীয়ত, জোসেফ জন কিন্ডলা ও চিটাট এনজির মামলাগুলো যদি উদাহরণ হিসেবে আদালতে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা যায় তাহলে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।’
এ প্রক্রিয়ায় কবে নাগাদ নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনা যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তুরিন আফরোজ বলেন, সুনির্দিষ্ট সময়ের কথা বলা মুশকিল। আইনি প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধাপ পার হওয়া সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে চিটাট এনজির মত নূর চৌধুরী যদি আপিল না করে তবে সময় কম লাগবে। আর যদি রিভিউ করে তাহলে সময় বেশি লাগবে।
এরইমধ্যে কানাডার আদালতে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে আবেদন করেছে বাংলাদেশ।
২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে, নূর চৌধুরীসহ ৬ জন এখনও পলাতক রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন পিটিশন কার্যক্রম শুরু করেছে কয়েকটি সামাজিক সংগঠন।