দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এক মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, একজন বিচারক যে রায়ই দিক, এর জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে না।
মংলা কাস্টম হাউজের সাবেক কমিশনার ও বাংলাদেশ সচিবালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা বাতিলের আবেদন শুনানিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে নুরুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহারিন ও একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। পাশাপাশি দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ওমর ফারুক।
প্রসঙ্গত, বন্ড হাউজের বিরুদ্ধে অনিয়মের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬০ টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটি অনিয়মের কথা বললেও সাবেক কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম ন্যায় নির্ণায়ক (বিচারক) হিসেবে তার আদেশে মেসার্স পোর্টল্যান্ড সার্ভিসেসকে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ থেকে মুক্তি দেন। পরে কাস্টম এক্সারসাইজ ও ভ্যাট ট্রাইব্যুনাল সাবেক কমিশনারের জারি করা ন্যায় নির্ণায়কের (নুরুল ইসলামের) আদেশ রদ ও রহিত করে রিমান্ডের মাধ্যমে মামলাটি পুনরায় ন্যায় নির্ণায়নের জন্য পাঠালে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ পুনরায় নির্ধারিত হয়।
এ অবস্থায় নুরুল ইসলাম ন্যায় নির্ণায়ক (বিচারক) হিসেবে তার আদেশে মেসার্স পোর্টল্যান্ড সার্ভিসেসকে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়ায় তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। ২০০৭ সালের ২৯ জুন দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুল হোসেন বাদী হয়ে নুরুল ইসলাম ও মেসার্স পোর্টল্যান্ড সার্ভিসের মালিক এম এ তোহাকে আসামি করে খুলনার খালিশপুর থানায় এ মামলা করেন।
পরে নুরুল ইসলামের পক্ষে মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
সেই আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, একজন বিচারক (ন্যায় নির্ণায়ক নুরুল ইসলাম) রায় যা-ই দিক, তার জন্য বিচারকের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে না।
এরপর আদালত নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুদকের মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেন আদালত।