কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার এস আই সৈয়দ দেলোয়ার হোসেনকে স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতন, যৌতুক ও প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
ঢাকার ২নং নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবুল মঞ্জুর হোসেন তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ১০ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে ওই আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে এ মামলায় আগাম জামিন নিতে আসলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আজ বুধবার (১৭ অক্টোবর) তিনি জামিন আবেদন করলে আদালত আগামী ২৩ অক্টোবর জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
অভিযোগে জানা যায়, কোতোয়ালি থানার বর্তমান উপ-পরিদর্শক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেনের ২০০৬ সালে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানায় পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ওই এলাকার রেহানা বেগম রত্না নামে এক গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রত্না জানান, প্রথম স্বামীর সংসারে তিনি ভালো থাকলেও কনস্টেবল দেলোয়ারের ফাঁদে পড়ে তিনি তাকে বিয়ে করেন। পরে দেলোয়ার নানা ছলে তার একটি ফ্ল্যাট বিক্রি ও অপর ফ্ল্যাট বন্ধক রেখে এবং স্বর্ণা গহনা বিক্রি করে নগদ প্রায় ৪৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব টাকা দিয়ে দেলোয়ার পটুয়াখালীতে বাড়ি নির্মাণ করে। একপর্যায়ে দেলোয়ার কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে পদোন্নতি পেয়ে রত্নার কাছে আরও টাকা দাবি করে। চাহিদা অনুসারে টাকা দিতে না পারায় দেলোয়ার তাকে প্রায়ই মারধর করতো। এর মাঝে ১১ বছর অতিক্রম হয়। চলতি বছর দেলোয়ার এস আই পদে পদোন্নতি পায়। পদোন্নতি পেয়েই সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। রত্না তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পুলিশ সদর দফতর এবং কুমিল্লার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এরইমধ্যে দেলোয়ার রত্নাকে তালাক দিয়ে আরেকটি বিয়ে করেন। পরে রত্না ঢাকার ২নং নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দুটি হলো, যৌতুক ও নারী নির্যাতন এবং হাতিয়ে নেওয়া অর্থ উদ্ধারে জন্য।
রত্নার আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির জানান, ‘জুডিসিয়াল তদন্ত শেষে গত ১০ অক্টোবর নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল এস আই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মঙ্গলবার এ মামলায় আগাম জামিন চাইতে আদালতে হাজির হলে বিচারক এস আই দেলোয়ারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বুধবার সে জামিনের আবেদন করলে আদালত আগামী ২৩ অক্টোবর জামিনে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া বলেন, ‘দেলোয়ার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে ছুটি নিয়েছিল। কিন্তু তাকে কারাগারে পাঠানোর খবর পেয়ে আমি তার মোবাইলে ফোন করি। কিন্তু তার ফোনটি বন্ধ পেয়েছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়ে থাকলে বিধি অনুযায়ী আমাদের কাছে একটি কাগজ আসবে।’