পরিশ্রম, সদিচ্ছা আর অদম্য জেদ থাকলে কাউকে থামিয়ে রাখা যায় না। এই প্রবাদের সত্যতাই যেন আরও একবার প্রমাণ করলেন ভারতের কেরালা রাজ্যের শিবু দামোদরন। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অটোচালক থেকে আজ আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন বছর বত্রিশের এই যুবক। খবর এই সময়ের
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম জীবনে ব্যাংককর্মী হতে চেয়েছিলেন ত্রিচুর জেলার আস্থামিচিরার কাট্টিক্কারাক্কুন্নু গ্রামের বাসিন্দা শিবু দামোদরন। সেই মতো অর্থনীতিতে স্নাতক হওয়ার পরে ব্যাংকের চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। যদিও সাফল্য অধরা থেকে যায়। এর পরে শুরু হয় অন্য লড়াই। পারিবারিক আর্থিক অনটনের কারণে ব্যাংকে চাকরির আশা ছেড়ে রুটিরুজির জন্য ত্রিচুর এবং বেঙ্গালুরুতে কাপড়ের দোকানে কাজ করেন তিনি। পরে গ্রামে ফিরে অটো চালানো শুরু করেন। শুরু হয় নতুন লড়াই।
এখানেই হয়তো সব শেষ হয়ে যেতে পারত। তবে থামতে নারাজ ছিলেন শিবু। ব্যাংক কর্মী হতে পারার অতীতের ব্যর্থতাকে ভুলে নয়া লক্ষ্য স্থির করেন তিনি। ঠিক করেন আইনজীবী হবেন। প্রবল আর্থিক সমস্যার মধ্যেও সে মতো ল’কলেজে এলএলবি কোর্সে ভর্তি হন। তবে সবটাই গোপনে। পরে অবশ্য তাঁর গোপনে আইনচর্চার কথা মহল্লার সবাই জেনে যায়। কলেজ সময়ে কলেজ, বাকি সময়ে অটো চালানো- এ ভাবেই চলতে থাকে শিবুর জীবন। গত ১৬ ডিসেম্বর একজন আইনজীবী হিসেবে নিজের নাম নথিভুক্ত করেন দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এই যুবক। ক্রিমিনাল ল’ইয়ার হিসেবে এক প্রবীণ আইনজীবীর অধীনে ইতোমধ্যেই প্র্যাকটিস শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
শিবু জানিয়েছেন, তাঁর এই সাফল্যের ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভুমিকা নিয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের লেখা। কালামের বই ‘উইংস অফ ফায়ার’ তাঁকে অনুপ্ররণা যুগিয়েছে। ছেলেকে কালো গ্রাউন পরে দেখে বেজায় খুশি শিবু দামোদরনের বাবা দামোদরন ও মা থংকামণি।
শিবু দামোদরনের এই লড়াইয়ের সঙ্গে অটো একাত্ম হয়ে গিয়েছে। তাই আইনজীবী হলেও আগামিদিনে জীবন থেকে অটোকে দূরে সরাতে চান না তিনি।