সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কার্যালয় সংলগ্ন জেলা পুরাতন আইনজীবী সমিতির ভবনের দরজা ভেঙ্গে রাতের অন্ধকারে আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ভবনের ভিতরের ৫টি টেবিল ও ৬টি জানালা ভাংচুর করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. আ.ক.ম রেজওয়ানউল্লাহ সবুজ বলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবনে প্রতিদিন প্রায় ৩০ আইনজীবী লাইব্রেীতে বই পড়েন। মক্কেলের সাথে কথা বলাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ করেন। সোমবার (১৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় আইনজীবীরা চলে যাওয়ার পর অফিস সহকারী সোহরাব হোসেন তালা লাগিয়ে বাড়িতে চলে যান। এই সুযোগে রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা আইনজীবী সমিতির পুরাতন ভবনের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ৫টি টেবিল ও ৬টি জানালা ভাংচুর করে। মঙ্গলবার সকালে অফিস সহকারী সোহরাব হোসেন এসে দেখেন দরজা ভাঙ্গা ও ভিতরের আসবাবপত্র তছনছ করা হয়েছে। এতে প্রায় লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করলেও কোন কিছু চুরি হয়নি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। এব্যাপারে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আবুল হোসেন (২) বলেন, পুলিশ সুপার কার্যলয়ের পাশে অবস্থিত জমিতে ১৮৭২ সালে জেলা আইনজীবী সমিতি, বার লাইব্রেরী ও বাথরুমসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ভবন নির্মিত হয়। পরবর্তীতে সমিতির উত্তর পাশে পুলিশ সুপারের কার্যালয় স্থাপিত হয়। ২০১৪ সালে তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর এই জমি দখলের প্রক্রিয়া শুরু করলে আইনজীবী সমিতির তৎকালিন সভাপতি এড. শাহ আলম বাদি হয়ে ২০১৪ সালের পহেলা ডিসেম্বর সাতক্ষীরা সদর সহকারি জজ আদালতে মামলা ( দেঃ- ২৭৯/১৪) করেন। এ মামলায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী ও জেলা প্রশাসককে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়। একই দিনে একইসাথে মামলায় বর্ণিত সমিতির ক ও খ তপশীলভুক্ত সকল জমি যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে দখলে থাকতে পারেন সেজন্য আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই জমির কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণ না করার কথা বলে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেন কোর্ট। তারপরও পুলিশ সুপার কর্তৃক দখলের চেষ্টা করা হলে এ ব্যাপারে হাইকোর্টে রীট করা হয়। এই জমিতে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণ না করার কথা বলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ামী মাস পর্যন্ত নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
তিনি আরও বলেন, এই ভবনের মধ্যে আমাদের প্রায়োজনীয় আইন বিষয়ক বই, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন খেলাধুলার সামগ্রী আছে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৩০জন আইনজীবী লাইব্রেরীতে বই পড়েন। মক্কেলের সাথে মামলার বিষয়ে কথা বলে থাকেন এবং অনেকে সময় খেলাধুলা করেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে দুর্বত্তরা এই জেলার প্রাচীনতম আইনজীবী সমিতির ভবনের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়েছে এটি খুবই দু:খজনক। এব্যাপারে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তি দাবী করছি।