ঢাকা শহরে যারা বায়ুদূষণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে সপ্তাহে দুবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার (২৮ জানুয়ারি) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে হবে, যাতে ধুলো ছড়িয়ে বায়ুদূষণ বাড়াতে না পারে। পাশাপাশি ‘ধুলোবালিপ্রবণ’ এলাকাগুলোয় দিনে দুবার করে পানি ছিটাতে হবে।
ঘেরাওয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতেও বলেছেন হাইকোর্ট।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে প্রকাশিত খবর ও প্রতিবেদন যুক্ত করে গত রবিবার পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন। শুনানি হয় সোমবার।
রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। আদালতে তিনি বলেন, সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ, পরিবেশ আইন ১৯৯৫ এবং পরিবেশ বিধিমালা ১৯৯৭-এ বায়ুদূষণ রোধসংক্রান্ত পদক্ষেপের নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও কর্তৃপক্ষ ঢাকা শহরের চরম বায়ুদূষণ প্রতিরোধে ব্যর্থ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের রিপোর্টে বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০টি বায়ুদূষণকারী শহরের মধ্যে ঢাকা তৃতীয় হয়েছে। বর্তমানে যেভাবে দূষিত হচ্ছে, তাতে আমাদের সবারই বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হবে।
শুনানি নিয়ে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি একটি রুলও জারি করেছেন। এতে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১১ বিবাদীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।