হত্যা, ধর্ষণ ও ডাকাতির মতো গুরুতর অপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আগাম জামিন দেয়া যাবে না বলে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৩১ জনকে হাইকোর্টের দেয়া আগাম জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনাসহ এই রায় দিয়েছেন।
প্রকাশিত এই রায়ে হাইকোর্টকে কেবলমাত্র ব্যতিক্রমী মামলার ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে আগাম জামিন বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
সঙ্গে সঙ্গে, আপিল বিভাগ যে কোনো মামলায় কাউকে আট সপ্তাহের বেশি আগাম জামিন দেয়া যাবে না বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন। আগাম জামিন দেয়ার পর সেটা কোনোভাবেই মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিলের পর তা কার্যকর থাকবে না।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন। পরে বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর ওই রায়ের ৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এইসব নির্দেশনা দিয়ে তা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনসহ ৩১ নেতার জামিন বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলো গত সপ্তাহে।
২০১৮ সালে এসব নেতাদের বিভিন্ন মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে ওই রায় দেন আপিল বিভাগ।
এদিকে এই রায়ের কপি পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহসহ ১৬ জনকে নিম্ন (বিচারিক) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
যে ১৬ জনকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে তারা হলেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মঞ্জুর মোরশেদ, বরকতউল্লাহ বুলু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মো. শাহজাহান, অ্যাডভোকটে শাখাওয়াত হোসেন, হাজী সালাহউদ্দিন ও মো. আমিনুর রহমান।
তবে, আত্মসমর্পণের পর এইসব ব্যক্তিরা জামিনের আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট আদালত আইন ও তথ্য অনুসারে জামিনের জন্য তাদের প্রার্থনা বিবেচনা করার জন্য আদালতকে বলা হয়েছে।