কাজী হেলাল উদ্দিন:
Advocate ইংরেজি শব্দটি আমরা যখন বাংলায় লেখি তখন আমাদের লেখা বা বানানের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। কেউ লেখেন ‘এডভোকেট’ কেউবা ‘এ্যাডভোকেট’ অনেকে সংক্ষেপে লেখেন এড্ঃ বা এ্যাডঃ, কিন্তু এই পার্থক্য থাকা উচিৎ নয় বলে মনে করি।
এখন দেখা যাক এ বিষয়ে বাংলা একাডেমীর নিয়মে কি আছে।
ডক্টর এনামুল হক ও শিবপ্রশন্ন লাহিড়ী সম্পাদিত ব্যবহারিক বাংলা অভিধানে ৭৮ পৃষ্ঠায় লিখেছে, অ্যাডভোকেট এর অর্থ অধিবক্তা, হাইকোর্টের বা উচ্চ আদালতের উকিল। এখানে Advocate এর বানান লিখেছে অ্যা দিয়ে। অ্যাডভোকেট।
ঐ একই পুস্তকের ১৮৭ পৃষ্ঠায় ২য় কলামে লিখেছে, এডভোকেট এর অর্থ উচ্চ আদালতের উকিল বা ব্যবহারজীব। এখানে Advocate এর বানান লিখেছে এ দিয়ে। এডভোকেট।
ঐ একই অভিদানের পরিশিষ্টে বানান রীতিতে লিখেছে, “বাংলায় এ বা ে কার দ্বারা অবিকৃত এ এবং বিকৃত বা বাঁকা অ্যা এই উভয় উচ্চারণ বা ধ্বনি নিষ্পন্ন হয়।
তৎসম বা সংস্কৃত ব্যাস, ব্যায়াম, ব্যাহত, ব্যাপ্ত, জ্যামিতি ইত্যাদি শব্দের বানান অনুরূপ ভাবে লেখার নিয়ম রয়েছে। অনুরূপ তৎসম এবং বিদেশী শব্দ ছাড়া অন্য সকল বানানে অবিকৃত-বিকৃত নির্বিশেষে এ বা ে-কার হবে। যেমন: দেখে, দেখি, যেন, জেনো, কেন, কেনো, গেল, গেলে, গেছে।
বিদেশী শব্দের অবিকৃত উচ্চারণের ক্ষেত্রে এ বা ে-কার ব্যবহৃত হবে। যেমন: এন্ড (end), নেট, বেড, শেড।
বিদেশী শব্দের বিকৃত বা বাঁকা উচ্চারণে অ্যা বা য ফলা আকার ব্যবহৃত হবে। যেমন: অ্যান্ড (and), অ্যাবসার্ড, অ্যাসিড, ক্যাসেট, ব্যাক, ম্যাজিস্ট্রেট, ম্যানেজার, হ্যাট।”
বাংলা একাডেমীর এ এবং অ্যা এর ব্যবহার বিধি পড়ে আমি যতটা বুঝতে পেরেছি, বাংলা একাডেমীর বানান রীতি অনুসারে Advocate উচ্চারণে বিকৃতি আছে তাই, বাংলা বানান হবে ‘অ্যাডভোকেট’।
বাংলা একাডেমীর ঐ একই অভিধানের শব্দ ভাণ্ডার অনুযায়ী এডভোকেট বানানটিও সঠিক প্রতীয়মান হয়।
কলিকাতা থেকে দেবজ্যোতি দত্ত কর্তৃক ২০১০ খ্রিঃ সনে প্রকাশিত পঞ্চম সংস্করণ, সংসদ বাংলা অভিধানের শব্দ ভান্ডারে ‘অ্যাডভোকেট’ শব্দটি আছে, ‘এডভোকেট’ বানানে শব্দটি নেই।
লেখক: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।