সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবছর ন্যূনতম একটি এনরোলমেন্ট পরীক্ষা সম্পন্নকরণ ও লিখিত পরীক্ষার স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে লিখিত পরীক্ষার উত্তর পত্রে ওএমআর (OMR) সংযুক্তিসহ চার দফা দাবিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।
আজ সোমবার (১৬ মার্চ) সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণ ও সনদপ্রদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের পক্ষে আইনুল ইসলাম, নাহিদুর রহমান (নাহিদ), মোঃ আজমুল হাসান জিহাদ, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ রাহাত জলিল এবং মোঃ আসাদুজ্জামান এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
২০১৭ সালের ২১শে জুলাই একটি এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার পর দীর্ঘ ২ বছর ৭ মাস পর গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী, ২০২০ইং তারিখে আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ায় বার কাউন্সিলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নিবন্ধিত শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, এতো দীর্ঘ সময় পরে একেকটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে আইনজীবী হিসেবে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের পারিবারিক-সামাজিক-আর্থিকসহ নানারকম চাপের কারনে একটি নিরুৎসাহিত পরিবেশ তৈরি হয়।
স্মারকলিপিতে, সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক ২০১৭ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী” দারুল ইহসান ট্রাস্ট বনাম বাংলাদেশ বার কাউন্সিল” মামলায় প্রদত্ত রায়ের নির্দেশনাতেও বলা ছিলো যে, “The Bar Council shall complete the enrollment process of the applicants to be enrolled as advocates in the district court each calendar year.” উল্লেখ করে নিয়মিত পরীক্ষা গ্রহণ এবং এনরোলমেন্ট পরীক্ষাকে উচ্চ মানসম্পন্ন পরীক্ষার স্তরে উর্ত্তীর্ণ করতে চলমান কার্যক্রম এবং আপিল বিভাগের ওই রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা ও চার দফা দাবিসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে পেশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী ৪ দফা দাবিগুলো হল-
- ২০১৭ সালের আপিল বিভাগের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি বর্ষপঞ্জির নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে প্রিলিমিনারি (MCQ), লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।
- মুজিববর্ষে অর্থাৎ ২০২০ সালে আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার বাকি দুই ধাপ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে উত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করতে হবে।
- লিখিত পরীক্ষার স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ও লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কাজী মোঃ নজিবুল্লাহ হিরুর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষার খাতায় নাম ও রোল লিখার জন্য (OMR) সংযোজন ২০২০ সালের লিখিত পরীক্ষা থেকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
- বার কাউন্সিল নির্বাচনের যেমন ক্যালেন্ডার রয়েছে ঠিক তেমনি এনরোলমেন্ট পরীক্ষা প্রিলিমিনারি, রিটেন ও ভাইভার জন্য একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করতে হবে। যেমন: প্রতিবছর ফেব্রুয়ারীর শেষ শুক্র/শনিবার এমসিকিউ পরীক্ষা, প্রতিবছর মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা এবং দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভাইভা পরীক্ষা সম্পন্ন করে ফলাফল প্রকাশ।
বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ চার দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপির অনুলিপি বার কাউন্সিলের সচিব, ভাইস চেয়ারম্যান, এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এবং লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান বরাবরও প্রদান করা হয়।