করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকারের দেয়া ত্রাণ বিতরণ না করে তাতে অনিয়ম ও আত্মসাৎ রোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে শাস্তির জন্যে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী।
সোমবার (১৩ এপ্রিল ) ইমেইলে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের প্রতি এ নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন। নোটিশ পাঠানোর সংবাদটি তিনি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কমকে নিশ্চিত করেছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হলো, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন বলেন, আজ সকালে এক টেলিভিশনের নিউজে দেখলাম, যেখানে একজন মানুষ নিজের রক্ত বিক্রি করে চাল কিনেছেন। না খেয়ে আছেন কত মানুষ। অনেকে লজ্জায় হাত পাততে পারেন না, সেখানে সরকারের দেয়া ত্রাণ থেকে চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং নেতাকর্মীরা চাল এবং ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ করছেন। এটা খুবই দুঃখজনক।
তাই আত্মসাৎ রোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্যে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি।
তিনি বলেন, যেহেতু করোনাভাইরাস সারাবিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে, যার ব্যাপকতা আমাদের প্রিয় স্বদেশকে দারুণভাবে আক্রান্ত করেছে এবং এর প্রভাবে জনজীবন স্থবির হয়ে গেছে এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বস্ব নিয়োগ করে এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য প্রচেস্টা আব্যহত রেখেছেন। আমরা কেন লোভ সামলাতে পারবো না।
আইনজীবী বলেন, যেহেতু করোনা দুর্যোগকালীন সময়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ করার জন্য মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ পালন করতে তাদেরকে এক প্রকার ঘরে আবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে। সঙ্গত কারণে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে এবং দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো ও সাধারণ অসহায় মানুষগুলো দারুণভাবে সরকারের বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের এই দুর্দশা লাঘবের জন্য এই দুর্যোগকালীন সময়ে তাদের খাদ্যসহায়তাসহ নগদ অর্থসহ সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি যে উক্ত দুর্যোগকালীন সময়ে যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে সেই ত্রাণ বিতরণে নানারকম অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমনকি যে চাল গরিব-দুঃখি মানুষের বিতরণের জন্য সরকার থেকে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে সেখানেও বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের এই চালগুলো আত্নসাৎ ও চুরির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে যা সরকারের উচ্চমহল থেকে বারবার সতর্ক করার পরও এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনোভাবেই নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না।
আইনজীবী বলেন, যেহেতু আমরা একটি দুর্যোগ কালীন সময় অতিক্রম করছি এবং ত্রাণ বিতরণে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে স্বচ্ছতার নির্দেশ দেওয়া হলেও কেউ কেউ সেটা মানছেন না, ফলে ওই সমস্ত দুষ্কৃতকারী ব্যক্তিদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।