প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫টি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে ময়মনসিংহ জেলায়। ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে ময়মনসিংহ জেলায় বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। এ জেলায় গত এক বছরে ১৯ হাজার ৬৯২টি বিয়ে রেজেস্ট্রি হয়। বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে ৪ হাজার ৮০৮টি। যা প্রতি মাসে গড়ে ৪শ। দিনের হিসেবে প্রতিদিন প্রায় ১৫টি বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে।
গ্রামের তুলনায় শহরে এ হার অনেক বেশি। প্রায় ৭০ ভাগ ডিভোর্স হচ্ছে নারীদের। ময়মনসিংহ সদরে গত বছর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে ২৬০টি। এ সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সব রেকর্ডকে।
ময়মনসিংহ জেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়ে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে।
ময়মনসিংহ সরকারি আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ অনুষদের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর জরিনা মজুমদারের মতে, ব্যক্তিত্ব, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব, আত্মঅহমিকা ও একে অপরকে সময় না দেয়া- এসব বিষয়ের জন্যই মূলত বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। সামাজিক ব্যক্তিত্বের কারণে মূলত আজকের এই পরিণতি।
জাতীয় মহিলা পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদা বেগম সাজু বলেন, স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকা ও মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ। তবে এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো পারিবারিক ও সামাজিক কাউন্সেলিং।
বিবাহ বিচ্ছেদ ঠেকাতে তরুণ প্রজন্মের কাছে বাঙালি সমাজের আবহমানকালের পারিবারিক সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি তাদেরকে সুস্থ ও সুন্দর পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সমাজ বিশেষজ্ঞরা।
জেলা প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম