সাবেক ওরিয়েন্টাল ব্যাংক বর্তমানে আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের ৪৮৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের শুনানিতে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি সশরীরে হাজির হয়ে দুদকের ওই উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি এ ঘটনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি রুল জারি করেছেন আদালত। বিএফআইইউ, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইসিবি ইসলামি ব্যাংক ও দুদককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও ইফতাবুল কামাল অয়ন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনীরুজ্জামান ও সৈয়দ হাসান জোবায়ের। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের তৎকালীন সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড হেড অব এইচআর কাজী মানজুর হোসেন ২৫ জনকে আসামি করে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন
ওবায়দুল করিম, চৌধুরী মো. কায়েস সামী, সাবেক এম. ডি ডেইরি স্প্রিং, এস এম হারুন সাবেক এস.ভিপি, প্রিন্সিপাল শাখা, একিউএম মাহমুদ উল্লাহ এসএভিপি, মোহাম্মদ ইয়ামিন সাবেক এসএভিপি, মো. ফজলুর রহমান এভিপি, প্রিন্সিপাল অফিস, কামরুল ইসলাম সাবেক ইভিপি, আলমগীর কবির সাবেক এভিপি, তারিকুল আলম ই.ও, এএনএম আসিফুর রহমান এস. ভিপি, মহিউদ্দিন আহমেদ এভিপি, সৈয়দ মাহমুদ হাসান এভিপি, তৌহিদ উদ্দিন খন্দকার সিনিয়র অফিসার বংশাল শাখা, আলমগীর কবির এভিপি নবাবপুর শাখা, মো. এমদাদ হোসাইন ভূঁইয়া ই,ও, নবাবপুর শাখা, মো. ফিরোজ কবির সিনিয়র অফিসার নবাবপুর শাখা, ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী ইভিপি, ডিএমডি, ট্রাস্ট ব্যাংক, মুশতাক আহমেদ এসভিপি, ব্যবস্থাপক, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা শাখা, সৈয়দ সরফরাজ শাহ এভিপি স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ঢাকা, এজেডএম সালেহ ভিপি, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড কাওরান বাজার শাখার খন্দকার শাহরুখ আহমেদ, এভিপি আইএফসি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার আরিফুর রহমান ই,ও, ওয়ান ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখার মঞ্জুরুল আলীম, প্রধান কার্যালয়ের সাইফুল আজিজ পাভেল এইও, প্রধান কার্যালয়ের আবুল হোসেন চোকদার।
মামলার অভিযোগে আসামিদের পারস্পরিক যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ব্যাংকিং কর্মকর্তার তাচ্ছিল্য আচরণে মিথ্যা হিসাব দেখিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ৪৮৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে দাবি করা হয়।
কিন্তু দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর এজাহারনামীয় আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন।
এরপর ২০১৫ সালে সৈয়দ সরফরাজ শাহসহ ৫ ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিট মামলার শুনানি কালে হাইকোর্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলবসহ রুল জারির আদেশ দিলেন।