মানবদেহে আঘাত সংক্রান্ত অপরাধে মূল ভিকটিমকে সাক্ষী করাসহ সঠিক ধারায় মামলা লিপিবদ্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম। একইসঙ্গে বিভিন্ন পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরও তৎপর হতে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করতে বলেছেন তিনি।
আজ শনিবার (১২ মার্চ) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ১৬ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
এসময় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল আলম দ্রুত ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন এবং প্রতিবেদন দাখিল, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করা এবং তাদের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে কার্যকর ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন।
এছাড়া জালিয়াতির মামলাগুলোতে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪৬৩ এবং ৪৬৪ ধারার উপাদান আছে কিনা তাও সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি আলোচিত মামলার প্রতিবেদন দেওয়ার আগে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির মতামত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মো. রবিউল আলম আরও বলেন, যেসব আসামির বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা হয়নি এবং যাঁরা কোনো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত নন, তাঁদের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটদের দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডারস অ্যাক্ট, ১৯৬০–এর বিধানগুলো অনুসরণ করতে হবে।
ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ একে অপরের পরিপূরক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিচার বিভাগকে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বলে উল্লেখ করেন রবিউল আলম। তিনি মনে করেন, বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়ানো ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে আন্তরিকতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে হবে। একযোগে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বিচারপ্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কারও অবহেলা কাম্য নয়।
কনফারেন্সে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মনীষা মহাজন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান।
কনফারেন্সে উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেটরা মামলার সাথে জব্দতালিকা পাঠানো, খসড়া মানচিত্রে ঘটনাস্থল সুনির্দিষ্টকরণ, সাক্ষীর ১৬১ ধারার জবানবন্দি লিপিবদ্ধের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন, সাক্ষীর ওয়ারেন্টের প্রতিবেদনের উপর জোর দেন।
সভায় সিআইডি, র্যাব, পিবিআই, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার, চট্টগ্রাম কারাগার, আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।