ধর্ষণ মামলায় এক আসামির জামিন মঞ্জুরের পর আদালতেই বাদীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। এজলাসে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তারা। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোছা. বিলকিছ আক্তারের আদালত মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামির নাম হাসানুজ্জামান। তিনি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রজেক্টে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ‘এ আসামি সিএমএম আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি। পরে তিনি মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন শুনানির জন্য ঢাকার ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান।’
আজাদ রহমান বলেন, ‘গত ১৭ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট আদালত বিয়ের শর্তে জামিন পাবেন মর্মে জানিয়ে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন শুনানিকালে আসামিকে হাজির করা হয়। বাদীও হাজির ছিলেন। আদালত ভিকটিমকে বিয়ে করার শর্তে জামিন দেন। এরপর ১২ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
এদিকে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পরে হাসানুজ্জামানকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তিনি শিগগিরই কারামুক্ত হবেন বলে জানান তার আইনজীবী।
জানা গেছে, ২০২০ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে হাসানুজ্জামানের সাথে বাদীর পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে আসামি ভিকটিমকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং তার সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় দেখা করতে চান। তারা বিভিন্ন জায়গায় দেখাও করেন।
প্রেমের সম্পর্কের কারণে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি গত বছরের ১৬ জানুয়ারি বিকেল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আদাবরের একটি বাসায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন। ওই সময় ভিকটিমকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করেন আসামি।
এরপর ভিকটিম আসামিকে বিয়ের কথা বললে বিভিন্ন তারিখ দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। আসামি বিভিন্ন সময় ভিকটিমের কাছ থেকে সাত লাখ টাকাও নেন। একপর্যায়ে চাপ দিলে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আসামি ভিকটিমকে জানিয়ে দেন, তিনি বিয়ে করবেন না।
গত ৬ মার্চ আদাবর থানায় মামলা করেন তিনি। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করে। দেড় মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন আসামি। এ অবস্থায় কারামুক্ত হতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন আসামি হাসানুজ্জামান।