ধর্ষণের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া বিজিবি সদস্যের বিচার চেয়ে হাইকোর্টের এজলাসের সামনে দাঁড়ানো সেই কিশোরীর নারাজি আবেদন গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। আসামিকে অব্যাহতির আদেশ ছয়মাসের জন্য স্থগিত করে বিজিবি সদস্য আক্তারুজ্জামানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২৯ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বদরুন নাহার।
গত রোববার (২৬ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় কিশোরীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড এ আপিল করে। আপিলে নারাজি আবেদন গ্রহণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
এর আগে গত ১৫ জুন সকালে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদদীনের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে বিচার দাবী করেন ভুক্তভোগী কিশোরী।
এদিন সকালে ওই বেঞ্চে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে এক কিশোরী তার মাকে নিয়ে আদালতের ডায়াসের সামনে এসে দাঁড়ান। এ পর্যায়ে আদালত ওই কিশোরীর কাছে তার এবং তার সঙ্গে থাকা নারীর পরিচয় জানতে চান।
জবাবে ভুক্তভোগী কিশোরী আদালতকে বলেন, ‘আমি…। আমার বয়স ১৫ বছর। ওনি (সঙ্গে থাকা নারী) আমার মা। আমি ধর্ষণের শিকার। একজন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য আমাকে ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু নীলফামারীর আদালত তাকে খালাস দিয়ে দিয়েছেন। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের টাকা-পয়সা নাই। আমরা আপনার কাছে বিচার চাই।’
এসময় আদালত ওই কিশোরীর কাছে জানতে চান অভিযোগ বিষয়ে তার কাছে কোনো কাগজপত্র আছে কি না? জবাবে ওই কিশোরী মামলার কাগজ আছে জানালে আদালত উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে লিগ্যাল এইডের কোনো আইনজীবী আছেন কি না, জানতে চান।
এসময় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের আইনজীবী বদরুন নাহার দাঁড়িয়ে আদালতকে সাড়া দেন।
পরে আদালত ওই আইনজীবীকে ভুক্তভোগী কিশোরীর অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে নিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে এবং জরুরি ভিত্তিতে দেখতে বলেন।
জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার এক ভ্যানচালকের সন্তান ওই ভুক্তভোগী কিশোরী। কিশোরী মেয়েকে নিয়ে বিজিবি সদস্য আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর মামলা করেন কিশোরীর মা।
তবে তদন্তের পর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অপরাধের প্রমাণ না পাওয়ার কথা বলা হলে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গত ১৭ মে আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। এরপরই ওই কিশোরী বিচার চেয়ে হাইকোর্টে আসেন।