কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে আলোচিত মোরশেদ আলী ওরফে বলী মোরশেদ হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি মোহাম্মদ আলীর জামিন আদেশ বাতিল করে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার (২৫ জুলাই) এ আদেশ দেন।
আগামী সাতদিনের মধ্যে তাকে কক্সবাজারের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করতে বলেছেন আদালত।
একই সঙ্গে এ জালিয়াতির ঘটনা তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট এস এম ফায়েজ, অ্যাডভোকেট শাহ মনজুরুল হক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ফজলুল হক। আর এ মামলায় তথ্য প্রদানকারী হিসেবে ছিলেন আইনজীবী শোয়েব খান, মতিন উদ্দিন আনোয়ার।
আরও পড়ুন: জালিয়াতি করে হাইকোর্ট থেকে হত্যা মামলার আসামির জামিন
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাং ঘর বাজারে গত ৭ এপ্রিল বিকেলে মোরশেদ আলী মোরশেদ বলিকে প্রকাশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং গুলি করে খুন করা হয়। এ ঘটনায় দু’দিন পর ৯ এপ্রিল ২৬ জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মো. জাহেদ আলী।
আলোচিত এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি মোহাম্মদ আলী মোহাম্মদসহ পাঁচ আসামিকে ১৬ এপ্রিল গ্রেফতার করে র্যাব-১৫ এর একটি টিম। পরে গত ১২ মে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঁচ আসামির জামিন চেয়ে করা আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
পরে তারা জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। ২৩ জুন আসামি মোহাম্মদ আলীর জামিন নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এসময় হাইকোর্টের জামিন আবেদনে মামলার এফআইআরের সার্টিফায়েড কপি জমা দেওয়া হয়। সেখানে আসামি মোহাম্মদ আলীকে ২২ নম্বর আসামি দেখানো হয়। মূলত তিনি মামলার ২ নম্বর আসামি। পরে ৩০ জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান তিনি।
এছাড়া জামিন আবেদনের সঙ্গে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি জাল আদেশের কপিও দাখিল করা হয়েছে। ওই জাল আদেশের কপিতে মোহাম্মদ আলীর একার জামিন নামঞ্জুর করা এবং এফআইআরে ২২ নম্বর আসামি বলে উল্লেখ করা আছে। মূল আদেশের কপিতে আসামি ছিল ৫ জন এবং মোহাম্মদ আলী ২ নম্বর আসামি বলে উল্লেখ রয়েছে।
গত ৭ এপ্রিল কক্সবাজারের পিএমখালীর বাসিন্দা মোরশেদ ইফতারি কেনার জন্য স্থানীয় চেরাংঘর স্টেশনে গেলে সেখানে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই জাহেদ আলী। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০ আসামি রয়েছে। মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।