মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : দিনদুপুরে অস্ত্রের মুখে পর্যটকদের কাছ থেকে মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করার ঘটনায় অস্ত্র মামলায় সশস্ত্র ছিনতাইকারীকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অবৈধ গোলা বারুদ রাখার দায়ে আসামিকে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত।
কক্সবাজারের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল নং-৩ এর বিচারক মাহমুদুল হাসান গত বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন- কক্সবাজারের টেকনাফের দক্ষিণ জালিয়া পাড়ার মৃত জালাল আহমদের পুত্র মোঃ জাফর আলম। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রউফ এবং এপিপি অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ। আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ।
পরে সংশ্লিষ্ট আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম-কে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এপিপি জিয়া উদ্দিন বলেন, বিজ্ঞ বিচারক কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান আসামীকে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) ধারায় অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং একই আইনের ১৯(এফ) ধারায় অবৈধ গোলা বারুদ রাখার দায়ে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন।
তিনি আরো বলেন, প্রদত্ত ২ মেয়াদের সাজা একই সাথে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে আসামি ১০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করলেই সাজা পূর্ণ হবে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০০০ সালের ১৭ আগস্ট সকাল ১১ টার দিকে কক্সবাজার শহরের হিলটপ সার্কিট হাউস সড়কের উপর ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক এ. সামাদের পুত্র আকবর হোসেন ও তার স্ত্রী, আনোয়ার হোসেনের পুত্র এনায়েত কবির এর কাছ থেকে আসামী মোঃ জাফর আলম সহ ৪ জন সশস্ত্র ছিনতাইকারী তাদের ভিডিও ক্যামেরা, স্বর্ণের চেইন সহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি জঙ্গলের ভিতর পালিয়ে যায়।
এসময় ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া লোকজনের শোর চিৎকার শুনে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের মোবাইল টিম সেখানে গিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা জানতে পারে।
পুলিশ তাৎক্ষণিক জঙ্গলের ভিতর অভিযান চালিয়ে আসামী মোঃ জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করে। অন্যান্য ছিনতাইকারীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। পরে মোঃ জাফর আলমের দেহ তল্লাশি করে তিন রাউন্ড গুলি সহ একটি দেশীয় তৈরি রিভলবার উদ্ধার করে। আসামীর কাছ থেকে ছিনতাই করা স্বর্ণের চেইনও উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানার এএসআই হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) এবং ১৯(এফ) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার কক্সবাজার সদর থানা মামলা নম্বর : ১৭/২০০০ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ২৮৯/২০০০ ইংরেজি এবং এসপিটি মামলা নম্বর : ০৬/২০০১ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাহমুদুল হাসান এর আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীপক্ষে জেরা, আলামত প্রদর্শন, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) এবং ১৯(এফ) ধারায় আসামী মোঃ জাফর আলমকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক রায় প্রদান করেন।