নরসিংদী রেলস্টেশনে আধুনিক পোশাকের অজুহাতে এক তরুণীকে হেনস্তা করার ঘটনায় করা মামলায় ‘মূলহোতা’ শিলা আক্তার মার্জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।
জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। মার্জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জহুরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেন।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট মার্জিয়াকে ৬ মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। তার জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে সকালে নরসিংদী রেল স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। মেয়েটির পরনে ছিল জিন্স ও টপস। তাই দেখে স্টেশনে অবস্থানরত এক নারী প্রথমে ওই তরুণীকে হেনস্থা করে। পরে আরও কয়েকজন ব্যক্তি তার ওপর হামলার চেষ্টা চালায়।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নিয়ে তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন। পরে স্টেশন মাস্টারের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ও ৩০ ধারায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন।
পরে ৩০ মে শিবপুররের মুনছেপের চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিলাকে আটক করে র্যাব-১১।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর মূলহোতা শিলা আক্তার মার্জিয়া ওরফে শায়লা আত্মগোপনে চলে যান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা এলাকায় শিলার খালার বাসায় অভিযান চালিয়ে রাত ৩টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে তাকে রেলওয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঘটনার এই মূলহোতা শিলা আক্তার নামে পরিচিত হলেও তার মূল নাম মার্জিয়া। তিনি পেশায় একজন ঘটক।
এরপর গত ৩০ মে শিলা আক্তারকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছিলেন আদালত।