গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে যথাযথ গাইডলাইন প্রণয়নে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (২৮ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপসচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আইনজীবীরা জানান, বর্তমান সরকারের উদ্যোগে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫ প্রণয়ন করা হলেও এর বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে গৃহকর্মীদের ওপর প্রতিনিয়ত নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু গৃহকর্মীরা এ বিষয়ে প্রতিকার চাইতে শ্রম আদালতে যেতে চাইলেও আইন নেই বলে পারেন না। তাই রিটটি করা হয়। ওই রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও আইনজীবী মারুফুল আলম বলেন, গৃহকর্মীদের নিয়ে ২০১৫ সালে একটি সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা করা হয়েছিল, কিন্তু তা অসম্পূর্ণ। ওই নীতিমালায় এটা বলা নেই যে, গৃহকর্মী কাজ করতে গিয়ে যদি আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহলে তার ক্ষতিপূরণকে দেবে। কোথায় গিয়ে পাবেন। এখন তিনি যদি শ্রমিক হতেন তাহলে শ্রম আদালতে যেতে পারতেন।
নীতিমালায় বলা আছে, আপনি ক্ষতিপূরণ পাবেন কিন্ত কত পাবেন কোথায় পাবেন কীভাবে পাবেন তা বলা নেই। এটা অসম্পূর্ণ। সেখানে বলা আছে গৃহকর্মীদের ছুটি ছাটা থাকবে, কিন্তু তা কত দিন থাকবে, না দিলে কোথায় যাবেন তার কিছুই বলা নেই। মাতৃত্বকালীন ছুটির কথা বলা থাকলেও এর সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ কিছুই বলা নেই।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী বলেন, এ অস্পষ্টতা দূর করে সঠিক নীতিমালা প্রণয়নের জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয় ও শ্রম মন্ত্রণালয়কে একটা চিঠি দিই। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এরপর গত ১৮ আগস্ট গৃহকর্মীদের পক্ষে কাজ করে আসা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাহান আরা হক এবং মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পক্ষে অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম বাদী হয়ে রিটটি দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।