অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর (মানিক) ওপর হামলা হয়েছে। গাড়িতে হামলা চালিয়ে দেহরক্ষী ও তাঁকে মারধর করা হয়েছে। রাজধানীর নয়াপল্টনে বুধবার (২ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির সমাবেশ চলাকালে সেখানকার রাস্তায় এ ঘটনা বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী।
ঘটনা সম্পর্কে শামসুদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে আমার রেকর্ডিং ছিল। সে জন্য বিকেলে মতিঝিল থেকে পল্টন হয়ে আমার গাড়িতে যাচ্ছিলাম। পল্টন থানার কাছে গিয়ে দেখি জামায়াত-বিএনপির মিছিল–মিটিং চলছে। এ সময় সমাবেশ থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, সব গাড়ি যেতে পারবে। কোনো গাড়ি আটকানো হবে না।’
ওই ঘোষণা শুনে তাঁর গাড়ি এগোনোর চেষ্টা করে জানিয়ে শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার গানম্যান পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম) গাড়ি থেকে নেমে যান রাস্তা ক্লিয়ার করার জন্য। তখন বিকেল সোয়া চারটা, মিটিং থেকে কয়েকজন বলল আটকাও। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার গাড়ি ঘেরাও করে ফেলল। আমি গাড়ির জানালা খুললাম, তখন আমাকে মারধর শুরু করা হলো। আমার মাথায়, কপাল ও দাঁতে আঘাত করল তারা। এতে আমার দাঁত থেকে রক্ত ঝরেছে।’
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তাঁর কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি–সংবলিত ব্যাগ কেড়ে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘এ সময় তারা স্লোগান দিয়ে বলছিল, আওয়ামী লীগের দালাল মানিককে শেষ কর। তারা আমার গাড়ি ভাঙচুর করে।’
পুলিশ বলেছে, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ও তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা, তাঁকে বহন করা গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগে পল্টন থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বিএনপির ৪০–৫০ জন নেতাকর্মী এই হামলা করেছেন। তবে আসামি কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে দায়ের করা একটি মামলায় মঙ্গলবার আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, শামসুদ্দিন চৌধুরী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি অবসরে যান। এরপর থেকে তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিতে সক্রিয় রয়েছেন। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছেন তিনি।