বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের প্রবেশ পদ সহকারী জজ নিয়োগে গৃহীত পঞ্চদশ বিজেএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সুপারিশপ্রাপ্তদের পুলিশ ভেরিফিকেশ যেন শেষই হচ্ছে না। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর ৭ মাস পার হলেও সম্পন্ন হয়নি ১৫তম বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা (বিজেএস) সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ।
ফলে তিন ধাপে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ পাওয়ার পরও প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না ১০৩ জন প্রার্থী। পুলিশ যাচাই প্রতিবেদনে আটকে আছে বিজেএসসির ১৫তম ব্যাচ।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন (বিজেএসসি) সূত্রে জানা গেছে, সহকারী জজ নিয়োগের জন্য পঞ্চদশ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার (১৫তম বিজেএস) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ২০২২ সালের মে মাসে। সে বছরই প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা নেয় কমিশন।
আরও পড়ুন: ষোড়শ বিজেএস লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ আগস্টের দ্বিতীয় ভাগে
মৌখিক পরীক্ষা শেষে চলতি বছরের জানুয়ারি ২৪ জানুয়ারি চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১০৩ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। কিন্তু প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় চাকরিতে যোগদান করতে পারছেন না প্রার্থীরা। অর্থাৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১৫ মাস, ফলাফল প্রকাশের সাত মাস পর হলেও শেষ হয়নি নিয়োগ প্রক্রিয়া।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
‘নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানেন না’ উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, বিজেএসের মাধ্যমে সহকারী জজ নিয়োগের বিষয়টি জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন দেখভাল করে। কমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
এ বিষয়ে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. সীমা জামান বলেন, যারা ১৫তম বিজেএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল তাদের মৌখিক পরীক্ষা হয়েছে, নিয়োগের জন্য সুপারিশও করা হয়েছে। এখন পুলিশ ভ্যারিফিকেশন চলছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জানুয়ারিতে ফলাফল প্রকাশের পরই পুলিশ বাড়িতে গিয়ে যাচাই করেছে, তথ্য সংগ্রহ করেছে। এরপর পাঁচ থেকে ছয় মাস পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। এতে সামাজিক বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
রাষ্ট্রপতির আহ্বান
গত ৭ আগস্ট বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২ পেশ করতে যান। তখন বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া গতিশীল করতে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনকে আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
এ সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচার পাওয়া জনগণের অধিকার, তাই বিচারক স্বল্পতার কারণে বিচারপ্রার্থীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হয় সে লক্ষ্যে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া আরো গতিশীল করতে হবে।
বিচারক নিয়োগের পাশাপাশি আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিসহ সময়োপযোগী পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিচারকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার ওপরও জোর দেন তিনি।