বর্তমানে জনস্বার্থের মামলার সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, বর্তমানে যাঁরা জনস্বার্থে মামলা করেন, তাঁরা জনস্বার্থের পরিবর্তে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে নিজের স্বার্থে রিট দায়ের করে থাকেন। কতিপয় ব্যক্তি প্রচারে ব্যস্ত থাকেন। প্রকৃত জনস্বার্থে মামলাগুলো আদালতে উপস্থাপিত হয় না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল স্থগিতের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ করে ঘোষিত আদেশে হাইকোর্ট এমন অভিমত দিয়েছেন। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন।
কে জনস্বার্থে মামলা নিয়ে আসতে পারবে, কে আসতে পারবে না, এ–সংক্রান্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বনাম আবু সাঈদ খান মামলার রায়ের নির্দেশনাগুলো উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, জনস্বার্থের মামলার যেমন সুবিধা আছে, তেমনি এর অসুবিধাও আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনস্বার্থের মামলাগুলোতে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি দেখা দেয়। অনেকেই একপ্রকার জুডিশিয়াল অ্যাক্টিভিজমে ব্যস্ত থাকেন।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে রিট খারিজ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা নিয়ে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ গত ২৯ নভেম্বর জনস্বার্থে ওই রিট করেন। রিটের ওপর শুনানি শেষে সোমবার আদেশ দেওয়া হয়।
আদেশের পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ বলেন, ‘রিট খারিজ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল বৈধ ও বহাল রইল। অর্থাৎ ঘোষিত তফসিল সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুসারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম যথারীতি চলবে।’
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
আদেশ শেষে রিট আবেদনকারী ইউনুছ আলী আকন্দের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, এসব মামলা নিয়ে আর আসবেন না। ১৮ কোটি মানুষের যেগুলোতে উপকার হবে, সেসব বিষয় নিয়ে আসবেন। কোনো ভেস্টেড কোয়ার্টারের (স্বার্থান্বেষী মহল) উদ্দেশ্য থেকে মামলা করবেন না।