Marbury v. Madison মামলার ব্যাখ্যা এবং Judicial Review এর সূচনা
রক-সলিড রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করা যাক। ১৮০০–০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় Adams প্রশাসন কিছু গণপ্রতিষ্ঠিত পদে (judges) দ্রুত নিয়োগপত্র (commissions) পেল্লাই করে দিল — এই চিত্রটি ইতিহাসে “midnight appointments” নামে পরিচিত। William Marbury-ও সেই নিয়োগপত্রের একজন প্রত্যাশী। William Marbury (1762–1835) ছিলেন একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী ও ফেডারেলিস্ট রাজনীতিবিদ।
তিনি শেষ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট John Adams-এর দেওয়া Justice of the Peace for the District of Columbia পদে নিয়োগ পান (commission)। তবে যখন Thomas Jefferson-এর সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন Jefferson-এর Secretary of State James Madison কিছু কমিশন সরবরাহ করা থেকে বিরত থাকেন; Marbury তাই Supreme Court-এ যেয়ে writ of mandamus চাইলেন — অর্থাৎ আদালতকে আদেশ জারি করে Madison-কে তার কমিশন হাতে দিতে বাধ্য করার আবেদন।
এখানে সবচেয়ে বড় আইনগত প্রশ্নগুলো ছিল: (ক) Marbury-এর কাছে কি কোনো enforceable right (আইনি অধিকার) আছে? (খ) যদি অধিকার থাকে, তাহা হলে কি তার জন্য remedy (আইনি প্রতিকার) রয়েছে? (গ) এবং সবচেয়ে সূক্ষ্ম: যদি remedy হিসেবে mandamusই উপযুক্ত হয়, তাহলে Supreme Court-এর কাছে এটা জারি করার jurisdiction (অধিকার/ক্ষমতা) আছে কি না? — অর্থাৎ, আপনি কোনো আদেশকে সরাসরি Supreme Court-এর সামনে আনতে পারেন কি?
Chief Justice John Marshall-এর রায়ে তিনটি ধাপে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া হয়েছে — কিন্তু কৌশলগতভাবে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন যেটা Court-এর দীর্ঘমেয়াদি দক্ষতা ও সম্মান বজায় রাখে। Marshall-এর যুক্তির সারমর্ম এভাবে বলা যায়।
প্রথমত, অধিকার (Right): Marshall মন্তব্য করেন যে Marbury-এর কমিশন প্রেসিডেন্ট দ্বারা সই ও সিল করা হয়েছে; ঐ সই-সীল আইনগতভাবে কার্যকর হওয়ার অনুষঙ্গ ছিল। অর্থাৎ কমিশনটি valid; তাই Marbury-এর কাছে একটি legal right আছে — তিনি উপযুক্ত ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারতেন। এখানে Marshall-এর যুক্তি ছিল: “যদি কোনো ব্যক্তির উপর একটি আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে সেই অধিকার কেবল কোনো অলক্ষ্য ধারণা নয়; তা বাস্তব প্রতিকারের (remedy) দাবিদার।” এই আপত্তিহীন প্রক্রিয়াগত নির্ণয় (fact + law) মারবুরি-কে ‘right holder’ হিসেবে শনাক্ত করল।
দ্বিতীয়ত, প্রতিকার (Remedy): Marshall-এর মতে, আইনগত অধিকার থাকলে আদালত-বিশিষ্ট উপযোগী প্রতিকারও থাকা চাই। আইনশাস্ত্রে প্রথাগত ধারণা- “ubi jus ibi remedium” — “where there is a right, there is a remedy.” যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা আইনের বাইরে গিয়ে ব্যক্তি-অধিকার লঙ্ঘন করে, তখন আদালত ঐ অফিসারকে নির্দেশ দিতে পারে যে সে তার কর্তব্য পালন করুক বা বিরত থাকুক — এটিই mandamus (ম্যান্ডামাস)। তাই Marbury-এর জন্য mandamus ছিল উপযুক্ত প্রতিকার বলে Marshall স্বীকার করেন।
তবে Marshall-এর বিযুক্ত কৌশল তৃতীয় ধাপে আসে — Supreme Court-এর এখতিয়ার (jurisdiction) নিয়ে। এখানে তিনি সংবিধানমূলক (constitutional) একটি গঠনমূলক প্রশ্ন তুলে ধরেন। মার্কিন সংবিধান Article III-এ Supreme Court-এর original jurisdiction এবং appellate jurisdiction পৃথকভাবে বর্ণিত আছে: কিছু নির্দিষ্ট ধরনের মামলার ক্ষেত্রে সংবিধান নিজেই Supreme Court-কে original jurisdiction দিয়েছে এবং “other cases”-এ Supreme Court-এর appellate jurisdiction থাকবে, “with such exceptions, and under such regulations as the Congress shall make.” (Marshall-এর পাঠ অনুযায়ী, এখানে Congress-এর ক্ষমতা appellate jurisdiction-কে নিয়ন্ত্রিত করতে পারে, কিন্তু সংবিধানের নির্দিষ্ট original jurisdiction-এ Congress নতুন কিছু যোগ করতে পারবে না।)
Judiciary Act of 1789-এর একটি ধারায় (Section 13) Congress-এর পক্ষ থেকে Supreme Court-কে সেই ধরনের writ-মামলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।যাতে Marbury সরাসরি Supreme Court-এর কাছে mandamus চাইতে পারে। Marshall-এর বিশ্লেষণ এখানে ছিল কঠোর: Congress-এর ঐ ধারা Article III-এর প্রকাশিত original jurisdiction-কে বাড়িয়ে দিয়েছে — অর্থাৎ আদালতের original jurisdiction-এ Congress হস্তক্ষেপ করে নতুন ক্ষমতা যোগ করেছে।
Marshall-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি unconstitutional কারণ সংবিধানই মূল্যবোধ নির্ধারণ করে কোথায় কী কর্তৃত্ব থাকবে; Congress সংবিধান-লঙ্ঘন করে Supreme Court-এর মূল (original) ক্ষমতা বাড়াতে পারবে না। আইনগত ভাবে তিনি বলেন যে এমন Statute-এর অংশ, যেটা সংবিধানের সঙ্গে বিরোধ করে, সেটি void; ইংরেজিতে সংক্ষিপ্ত শব্দও ব্যবহার হয়—ultra vires (beyond the powers) এবং ফলত void ab initio (প্রথম থেকেই শূন্য/অকার্যকর)।
এটি হল Marbury-এর ভাগ্যবিধান। Marshall স্বীকার করেছেন যে Marbury-এর কাছে অধিকার ও উপযুক্ত প্রতিকার আছে; কিন্তু Supreme Court-এর কাছে ঐ নির্দিষ্ট প্রতিকার জারি করার power নেই, কারণ Judiciary Act-এর ঐ বিধানটি Article III-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং তাই বলবৎ নয়।
ফলে Court-এর কড়া সিদ্ধান্ত হলো — Marbury-এর আরজি বাতিল; mandamus ইস্যু করা যাবে না। এতে Marbury ব্যক্তিগতভাবে হারেন; তবে আইনত দেখলে Supreme Court জিতল— কারণ Marshall প্রতিষ্ঠা করে দিলেন যে কোনো আইন (statute) সংবিধানের বিরুদ্ধ হলে আদালত তা ঘোষণা করে ‘unconstitutional’ বলে অকার্যকর ঘোষণা করতে পারে। এই হলো Judicial Review-এর ক্লাসিক সূচনা: আদালত সংবিধানের অতিরিক্ত ক্ষমতা হিসেবে আইনকে পরীক্ষার (review) ও বাতিলের ক্ষমতা ঘোষণা করল।
এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি ধারণা (legal terms) সংক্ষেপে তবে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা জরুরি:
Writ (রিট)
প্রথাগত common law-এর একটি আদেশ বা নির্দেশ, যাকে আদালত জারি করে কোনো পক্ষকে কোনো কাজ করতে বা থেকে রাখতে বাধ্য করে। বিভিন্ন ধরনের writ আছে — habeas corpus, mandamus, prohibition, certiorari, quo warranto ইত্যাদি।
Writ of Mandamus (ম্যান্ডামাস) : সরকারী বা public official-কে আইনত তাদের কর্তব্য পালনে বাধ্য করার আদেশ। Marbury-এর কেসে সে-ই চাওয়া হয়েছে: Madison-কে কমিশন হস্তান্তর করতে বলার আদেশ।
Original Jurisdiction (মূল এখতিয়ার) : কোন আদালত-এ সরাসরি মামলা শুরু করা যায় — সংবিধান বা আইন এটা নির্ধারণ করে। Supreme Court-এর ক্ষেত্রে Article III-এ নির্দিষ্ট বিষয়েই original jurisdiction দেয়া আছে।
Appellate Jurisdiction (আপিল এখতিয়ার) : কোন আদালত কোনো নিম্ন আদালতের রায় বা আদেশ-এর বিরুদ্ধে আপিল শুনবে। সাধারণত Supreme Court-এর বেশিরভাগ কার্যক্রম appellate পর্যায়ে হয়।
Ultra Vires (অল্ট্রা ভাইরেস) : কোনো সরকারি কর্মকাণ্ড বা statute যদি কর্তৃত্বের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তা ‘ultra vires’ — অধিকারবহির্ভূত।
Void ab initio (প্রথম থেকেই শূন্য) : এমন কোনো আইন বা কর্তৃত্ব যা প্রথম দিন থেকেই কার্যকর নয় বলে ঘোষিত হয়—অর্থাৎ ঐ ধারা কখনোই আইনগত শক্তি পায়নি।
Remedy (প্রতিকার) : আইনগত বা equitable প্রতিকার—যেমন damages, injunction, mandamus—যা আদালত নির্দিষ্ট করে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্স্থাপনের জন্য দেয়।
আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় Marshall-এর কৌশল নিখুঁতভাবে institutional। রাজনৈতিক বাস্তবতায় তিনি Jefferson-এর প্রশাসনের সামনাসামনি বড় ধরনের টেকসই সংঘাতে যেতে চাইলেন না। যদি তিনি সরাসরি Madison-কে mandamus জারি করে Jefferson-কে পাল্টা ঘাড়ে চাপাতেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে ঐ মুহূর্তে আদালতের স্বাধীনতা এবং স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে ঘাটতি সৃষ্টি করত এবং উচ্চ রাজনৈতিক সংঘাত জন্মাত।
Marshall-এর বিকল্প কৌশল ছিল: তিনি রায় লিখে সংসদীয় statute-এর ঐ অংশকে অবৈধ ঘোষণা করলেন (Judicial supremacy বা constitutional review প্রতিষ্ঠা করলেন), কিন্তু সেই একই রায়ে Marbury-কে relief না দিয়ে একটি তাত্ত্বিক জয় ও প্রতিষ্ঠানগত জয় দুটোই অর্জন করলেন। সংক্ষেপে — তিনি Court-এর প্রভুতা (institutional authority) অর্জন করলেন, ব্যক্তিগত মামলা হারিয়ে ফেলার বিনিময়ে। এই ‘institutional statesmanship’-এর জন্য Marshall-কে পরে “The Great Chief Justice” বলা হয়।
Marbury v. Madison-এর ঐতিহাসিক ও কাঠামোগত ফলাফল অনেকমুখী : এটি প্রথম পরিষ্কার ও স্থায়ীভাবে স্বীকৃত করল যে আদালতই সংবিধানের অর্থ নির্ধারণ করে; কোনো statute-কে সংবিধানের সঙ্গে বিরোধী পেলে আদালত তা declare unconstitutional করে বাতিল করতে পারে। ধারণাগতভাবে এটি ‘judicial review’-এর জন্ম — অর্থাৎ বিচারবিভাগের একটি মৌলিক কাজ হয়ে দাঁড়ালো “to decide what the law is” এবং সেই সঙ্গে সংবিধানকে সর্বোচ্চ আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
শেষে সংক্ষিপ্তকরণে বলা যায়—Marbury-এর ঘটনাক্রমে ব্যক্তিগত বিচারে সে-ই হেরেছেন, কিন্তু সামগ্রিকভাবে মার্কিন বিচারব্যবস্থা জিতে যায়: Marshall-এর রায় Judicial Review-এর তত্ত্বগত ভিত্তি স্থাপন করল, Supreme Court-কে সংবিধান-বিতর্কে শেষ কথা বলার ক্ষমতা দিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানিক সাম্য-বিভব (constitutional equilibrium) গঠনে আদালতকে স্থায়ী ভূমিকা দিল। এতটুকুই—তথ্য, আইন ও কৌশলের এক মিশেলে এই রায় অভূতপূর্বই ইতিহাস গড়ল।
Judicial Review মূলত দুইটি দিক থেকে কার্যকর হয়: ১. Procedural Constitutionality (প্রক্রিয়াগত সাংবিধানিকতা) ২. Substantive Constitutionality (বিষয়গত সাংবিধানিকতা)
Procedural Constitutionality (প্রক্রিয়াগত সাংবিধানিকতা)
Procedural Constitutionality বলতে বোঝায়, কোনো আইন বা সরকারি পদক্ষেপের প্রণয়ন প্রক্রিয়া সংবিধান অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে কি না। অর্থাৎ আদালত দেখতে চায়, আইন বা প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের প্রকৃতিগত প্রক্রিয়া সংবিধানে নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করেছে কি না।এর মূল ভিত্তি এসেছে U.S. Constitution এবং American Judicial Review tradition থেকে। বিশেষ করে Marbury v. Madison (1803) মামলার পর যখন আদালত সংবিধানের সাথে মিলিয়ে কোনো আইন প্রণয়নের বৈধতা যাচাই করতে শুরু করে।
এখানে মূল বিষয় হলো: আইন বা প্রশাসনিক পদক্ষেপের process যথাযথ হয়েছে কি না, না কি সংবিধান লঙ্ঘন করে তা তৈরি হয়েছে।
প্রধান উপাদান:
· সংবিধানের ধারা অনুযায়ী আইন প্রণয়নের পদ্ধতি মেনে হয়েছে কি না।
· প্রয়োজনীয় নোটিশ, কোরাম, সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া পূরণ হয়েছে কি না।
· কোনো প্রশাসনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়ম ও বিধি মেনে কার্যকর হয়েছে কি না।
উদাহরণ: কোনো আইন সংসদে পাশ হওয়ার সময় প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা (two-third majority for amendment), যথাযথ বিল প্রক্রিয়া, সংসদের ক্ষমতা সীমার মধ্যে আছে কি না—এসব যাচাই করা।
Substantive Constitutionality
Substantive Constitutionality এখানে প্রশ্ন হয়—আইনের বিষয়বস্তু (content) কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? এটি কি মৌল অধিকার, ন্যায়বিচার, মৌল কাঠামো বা সংবিধানের মূল দর্শনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?
এর উৎপত্তি Natural Law tradition এবং Due Process jurisprudence থেকে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 14th Amendment Due Process Clause (substantive due process) থেকে।
উদাহরণ: কোনো আইন যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংসদে পাশ হলেও যদি সেটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা বা মৌল কাঠামো লঙ্ঘন করে, তবে সেটি substantively unconstitutional হবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
সংবিধানের 102 অনুচ্ছেদ
Article 102(1): এখানে বলা হয়েছে, যদি কোনো নাগরিক তার মৌলিক অধিকার (Part III তে বর্ণিত) লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করেন, তবে তিনি হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।হাইকোর্ট তখন যে কোনো সরকারি কর্মকর্তা, সংস্থা, বা সরকারি কার্যসম্পাদনকারী ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবেন যাতে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ হয়।
উদাহরণ: যদি সরকার বেআইনিভাবে আপনার মত প্রকাশের স্বাধীনতা (Article 39) সীমিত করে, আপনি 102(1)-এর মাধ্যমে হাইকোর্টে রিট করতে পারবেন।
Article 102(2): এখানে বলা হয়েছে, যদি অন্য কোনো কার্যকর আইনি প্রতিকার না থাকে, তবে হাইকোর্ট নিম্নলিখিত রিট অর্ডার দিতে পারবে—
(a) কোনো aggrieved person-এর আবেদনে
Mandamus / Prohibition: কারও প্রতি নির্দেশ দিতে পারবে যেন সে বেআইনি কোনো কাজ না করে, অথবা যা করার জন্য আইনে বলা আছে, সেটি করে।
Certiorari: ঘোষণা করতে পারবে যে কোনো সরকারি পদক্ষেপ বা কার্যক্রম বেআইনি এবং অকার্যকর।
(b) যে কোনো ব্যক্তির আবেদনে: Habeas Corpus:
যদি কাউকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়, হাইকোর্ট নির্দেশ দিতে পারবে তাকে হাজির করার জন্য, এবং দেখবে আটক বৈধ কি না।
Quo Warranto: যদি কেউ কোনো সরকারি পদে থাকে, আদালত জিজ্ঞেস করতে পারবে – “তুমি কোন ক্ষমতায় এই পদে আছো?”
উদাহরণ: বেআইনিভাবে আটক ব্যক্তিকে মুক্ত করার জন্য হাইকোর্টে হেবিয়াস করপাস রিট হয়।
কোনো অযোগ্য ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় পদে বসলে, তার বিরুদ্ধে কো ওয়ারেন্টো রিট হয়।
Article 102(3): কিছু আইন আছে (Article 47-এর অধীনে) যেখানে হাইকোর্ট কোনো অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ (interim order) দিতে পারবে না। যেমন – যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত আইন।
Article 102(4):
যদি রিট আবেদনে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চাওয়া হয়, তবে হাইকোর্ট নিশ্চিত হতে হবে—
· এতে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হবে না,
· জনস্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না,
· এবং অ্যাটর্নি জেনারেলকে শুনানির সুযোগ দিতে হবে।
Article 102(5):“Person” বলতে শুধু ব্যক্তি নয়, স্ট্যাটিউটরি পাবলিক অথরিটি, আদালত বা ট্রাইব্যুনালকেও বোঝানো হয়েছে, তবে সামরিক আদালত বা শৃঙ্খলাবাহিনী সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।
বাংলাদেশের সংবিধানে Judicial Review
সংবিধানে “judicial review” শব্দটি সরাসরি নেই।
কিন্তু Article 7(2) বলছে: “এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং এর সাথে অসঙ্গত কোনো আইন শূন্য ও বাতিল।”
আর Article 102 বলছে যে, High Court Division নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এবং কোনো কর্তৃপক্ষকে অধিকার-বহির্ভূত কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য আদেশ দিতে পারে।
এই দুটি অনুচ্ছেদ একসাথে Judicial Review-এর সাংবিধানিক ভিত্তি তৈরি করে।
বাংলাদেশে Judicial Review-এর বৈশিষ্ট্য
Supremacy of the Constitution (Article 7, 26, 102)
→ সংবিধান-বিরোধী কোনো আইন আদালত বাতিল করতে পারে।
Fundamental Rights Protection
→ Article 102 সরাসরি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় Judicial Review কার্যকর করে।
Checks and Balances
→ নির্বাহী (Executive) বা আইন প্রণেতাদের (Parliament) ক্ষমতা সীমার মধ্যে রাখে।
Landmark Cases (Judicial Review under Art. 102)
Anwar Hossain Chowdhury v. Bangladesh (1989, 8th Amendment Case)
→ আদালত বলেছিল, সংসদের ক্ষমতা সীমাহীন নয়। Judicial Review-এর মাধ্যমে Basic Structure Doctrine প্রতিষ্ঠিত হয়।
Secretary, Ministry of Finance v. Masdar Hossain (Judicial Independence Case, 1999)
→ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে Judicial Review ব্যবহার হয়।
Bangladesh Italian Marble Works v. Bangladesh (2005, 5th Amendment Case)
→ আদালত ঘোষণা করে যে Martial Law বিধান সংবিধান-বিরোধী, তাই Judicial Review-এর মাধ্যমে অসাংবিধানিক কাজ বাতিল হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানের Article 105—এটি মূলত Appellate Division-এর review jurisdiction নির্ধারণ করে। Judicial review-এর প্রসঙ্গে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা, কারণ এটি দেখায় যে সর্বোচ্চ আদালত (Supreme Court-এর Appellate Division) নিজস্ব রায় বা আদেশ পুনরায় পর্যালোচনা (review) করতে পারে, তবে কিছু সীমাবদ্ধ শর্তের অধীনে।
Article 105 ও সীমাবদ্ধ ক্ষমতা
Article 105 স্পষ্টভাবে Appellate Division-কে তার নিজের judgment বা order review করার ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই ক্ষমতা অসীম নয়। সংবিধানই এটির সীমা নির্ধারণ করেছে। আদালত কেবলমাত্র সংসদের প্রণীত আইন এবং Appellate Division-এর নিজস্ব প্রণীত rules অনুযায়ী review করতে পারবে। অর্থাৎ, আদালত নিজের ইচ্ছানুযায়ী review শুরু করতে পারবে না; আইন ও নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এটি একটি institutional safeguard। কারণ, Supreme Court-এর মতো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান যদি review ক্ষমতাকে অসীমভাবে ব্যবহার করে, তাহলে তা বিচারিক স্বায়ত্তশাসন বা democratic accountability-এর মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে। এটি Judicial Supremacy বা judicial overreach-এর সম্ভাবনা কমায়।
Review-এর নিয়মাবলী ও প্রক্রিয়া
1988 সালে Appellate Division নিজস্ব Rules প্রণয়ন করে। এই rules অনুযায়ী review-এর scope দুই ভাগে বিভক্ত:
১. Civil Proceedings
আদালত নিজের উদ্যোগে (suo motu) বা কোনো party-এর আবেদন অনুযায়ী review করতে পারে।
Grounds হলো CPC Order XLVII, Rule 1-এর মতো, যেমন:
· Fraud (প্রতারনা): যদি রায়ে কোনো পক্ষকে প্রতারণার মাধ্যমে প্রভাবিত করা হয়।
· Mistake (ত্রুটি): রায়ে কোনো যথার্থতা বা আইনি ত্রুটি থাকলে।
· Newly discovered evidence (নতুন প্রমাণ): যা রায়ে প্রভাব ফেলতে পারে কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে উপলব্ধ ছিল না।
· Any other sufficient reason: যা রায়কে প্রভাবিত করে বা ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত করে।
উদাহরণ: যদি কোনো সিভিল মামলায় রায় দেওয়ার সময় প্রমাণের সত্যতা ভুলভাবে ধরা হয়, Appellate Division সেই রায় পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
২. Criminal Proceedings
Grounds হলো Error apparent on the face of the record।
Order XXVI, Rule 1 অনুযায়ী, review কেবল তখনই সম্ভব যখন রেকর্ডে স্পষ্ট ও সহজে বোঝা যায় এমন ত্রুটি (apparent error) থাকে।
অর্থাৎ, অন্তর্ব্যক্তিগত বা পরোক্ষ ভুল কেবল review-এর যোগ্য নয়; স্পষ্ট ও প্রকাশ্য ত্রুটি থাকতে হবে।
উদাহরণ: কোনো সাজা দেওয়ার সময় আদালতের রেকর্ডে sentence বা charge-এর ভুল উল্লেখ থাকলে Appellate Division review করতে পারে।
Critical Analysis
1. Scope & Limitation
· Review ক্ষমতা কেবল Appellate Division-এর জন্য সীমিত। High Court Division-এর এই ধরনের স্ব-সংশোধন ক্ষমতা নেই।
· ক্ষমতা সংবিধান ও আইন দ্বারা নির্দিষ্ট। এটি judicial overreach প্রতিরোধ করে।
· Review হল previous judgment বা order সংশোধনের জন্য; নতুন মামলা শুরু করা নয়।
2. Purpose & Institutional Importance
· Review ক্ষমতা আদালতকে institutional correction করার সুযোগ দেয়।
· এটি judicial error, procedural lapse বা অন্য বৈধ ত্রুটি সংশোধন করতে ব্যবহৃত হয়।
· অন্যদিকে, review ক্ষমতা সীমিত থাকায় আদালত legislative supremacy বা democratic process-এর সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।
3. Procedural vs Substantive Implications
· Civil cases-এ review সাধারণত procedural বা প্রক্রিয়াগত ত্রুটি সংশোধনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
· Criminal cases-এ review substantive বা প্রকাশ্য ত্রুটি সংশোধন করে; যেমন ভুল charge, ভুল sentence বা রেকর্ডের ত্রুটি।
· এটি Judicial Review-এর একটি উপ-ধারা, যেখানে আদালত নিজস্ব কার্যক্রমকে পুনঃপর্যালোচনা করে, কিন্তু নতুন substantive interpretation বা constitutional question নিয়ে সাধারণত কাজ করে না।
Case Reference & Application
বাংলাদেশে review-এর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে Appellate Division Rules (1988) এবং Article 105 দ্বারা প্রণীত। যদিও সরাসরি landmark case কম, কিন্তু প্রায়শই civil appeals এবং criminal appeals-এ review powers প্রয়োগ হয়েছে। উদাহরণ:
Civil context: একাধিক commercial litigation-এ রায়ে প্রমাণের অসঙ্গতি থাকলে Appellate Division review করে correction করেছে।
Criminal context: Sentence বা conviction-এ রেকর্ডে ভুল থাকলে appellate review হয়েছে, যেমন error apparent on the face of the record-এর ground-এ।
গুরুত্বপূর্ণ হলো: review ক্ষমতা institutional integrity বজায় রাখতে এবং judicial error হ্রাস করতে ব্যবহৃত হয়, যা একটি কার্যকর judicial system-এর মূল দিক।
বাংলাদেশে Jurisdiction as to Review হল Supreme Court-এর Appellate Division-এর স্ব-সংশোধন ক্ষমতা, যা Article 105 এবং 1988 Rules-এর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এটি:
· আদালতের institutional authority ও credibility রক্ষা করে।
· Judicial error ও procedural lapse সংশোধন করে ন্যায়বিচারের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।
· সীমিত, নিয়ম-ভিত্তিক এবং শুধুমাত্র পূর্বের judgment বা order-এর সংশোধনের জন্য কার্যকর।
এক কথায়, এটি একটি institutional safeguard, যা judicial supremacy ও legislative supremacy-এর মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করে।
Judicial Review-এর সাথে সম্পর্ক
বাংলাদেশে Judicial Review মূলত High Court Division-এর Article 102 এর অধীনে ব্যবহৃত হয়। তবে Article 105-এর review jurisdiction হচ্ছে একটি ভিন্ন বিষয়—
· Judicial Review (Art. 102) → জনগণ বা ব্যক্তি মামলা দায়ের করে executive/legislative action-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করতে পারে।
· Review Jurisdiction (Art. 105) → Supreme Court (Appellate Division) তার নিজের পূর্বের রায়কে আবার পরীক্ষা করতে পারে যদি মনে করে কোনো ভুল হয়েছে।
অর্থাৎ, Judicial Review হলো আদালতের ক্ষমতা সরকারের কর্মকাণ্ড বা আইন পরীক্ষা করা, আর Review (Art. 105) হলো আদালতের নিজের রায় সংশোধন বা পুনর্বিবেচনা করার ক্ষমতা।
Anwar Hossain Chowdhury v. Bangladesh (8th Amendment Case, 1989)
পটভূমি:
১৯৮২ সালে সামরিক আইন জারির পর হাইকোর্ট বিভাগের বিভিন্ন জেলায় স্থায়ী বেঞ্চ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে সংবিধানের ৮ম সংশোধনী আনা হয়, যার মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ১০০ সংশোধন করে রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা দেওয়া হয় ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ ও আঞ্চলিক এখতিয়ার নির্ধারণ করার।
এই সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করেন আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, যুক্তি দিয়ে যে—
· এটা সংবিধানের মৌল কাঠামো নষ্ট করছে।
· বিচার বিভাগের এককতা ও স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানছে।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত (১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর) :
আপিল বিভাগ ঘোষণা করে যে ৮ম সংশোধনীতে সংশোধিত অনুচ্ছেদ ১০০ বাতিল।কারণ, এটা সংবিধানের মৌল কাঠামো (basic structure doctrine) ধ্বংস করেছে।আদালত বলেছে, সংবিধান সংশোধন ক্ষমতা সীমাহীন নয়; সংসদ মৌল কাঠামো পরিবর্তন করতে পারে না।
সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ (Critical Analysis):
পজিটিভ দিক :
· আদালত প্রথমবারের মতো মৌল কাঠামো মতবাদ (basic structure doctrine) স্বীকৃতি দেয়।
· বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
· সংসদের সীমাহীন সংশোধন ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ হয়।
নেগেটিভ দিক/সমালোচনা :
· সমালোচকরা বলেন, আদালত এখানে judicial activism করেছে—সংবিধানে মৌল কাঠামো মতবাদ সরাসরি লেখা নেই, আদালত নিজেই এই নীতি আবিষ্কার করেছে।
· সংসদের সার্বভৌমত্বকে খর্ব করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা হয়।
· রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে বিতর্ক ওঠে।
প্রায়োগিক দিক :
হাইকোর্টকে বিভিন্ন জেলায় বিভক্ত করা সম্ভব হয়নি, ফলে জনগণকে ঢাকায় আসতেই হয়। এতে ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার (access to justice) কিছুটা সীমিত থাকে।
কিন্তু বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় এই রায় বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে এক মাইলফলক।
Procedural Aspect:
আদালত লক্ষ্য করল, সংসদ High Court Division-এর বেঞ্চ বিভাজনের প্রক্রিয়া সংবিধান অনুযায়ী অনুসরণ করেনি।সংবিধান বলে judiciary-এর organization পরিবর্তনের জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে যেতে হবে।
8th Amendment procedural test-এ ব্যর্থ: প্রয়োজনীয় quorum, notice এবং সংবিধানিক ধাপ ঠিকভাবে অনুসৃত হয়নি।
Substantive Aspect:
বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা, judicial review-এর ক্ষমতা, এবং High Court Division-এর মৌলিক কাঠামো Basic Structure-এর অংশ।Amendment-টি এই basic structure ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল। আদালত বলল, Parliament-এর ক্ষমতা unlimited নয়; সংবিধানের মৌলিক কাঠামো রক্ষা অপরিহার্য।তাই substantive test-এও Amendment অসাংবিধানিক।
Critical Analysis:
· আদালতের রায় Institutional safeguard হিসেবে কাজ করেছে।
· Procedural এবং substantive দুটি দিক থেকে বিচার করে আদালত দেখিয়েছে যে, সংবিধান শুধু প্রক্রিয়া নয়, মূল কাঠামো ও মৌলিক নীতিও রক্ষা করে।
· এই রায় বাংলাদেশে basic structure doctrine প্রয়োগের সূচনা।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন: Parliament-এর legislative supremacy সংবিধানের অগ্রাধিকারের চেয়ে প্রাধান্য পাবে কি না? আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বনাম বাংলাদেশ (১৯৮৯, ৪১ DLR (AD) ১৬৫) – ৮ম সংশোধনী মামলা তে আপিল বিভাগ (Chief Justice শাহাবুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বে) স্পষ্ট করে বলেছিল—Parliament আইন প্রণয়ন করতে পারবে, কিন্তু সেই ক্ষমতা সীমাহীন নয়। সংবিধানের মৌল কাঠামো (basic structure doctrine) ধ্বংস করার মতো কোনো আইন বা সংশোধনী সংসদ করতে পারবে না।
মামলার রায় থেকে :
“The Parliament cannot destroy the basic structure of the Constitution under the garb of amendment. Judicial independence and supremacy of the Constitution stand above legislative supremacy.” – Anwar Hossain Chowdhury v. Bangladesh, 41 DLR (AD) 165 (1989).
Impact :
· Judicial review-এর শক্তি প্রতিষ্ঠা।
· Legislature-এর ক্ষমতা সীমিত।
· High Court Division-এর independence রক্ষা।
2. Bangladesh Italian Marble Works Ltd. v. Government of Bangladesh (5th Amendment Case, 2010)
Background:
ঘটনাপ্রবাহ (Facts):
২০০০ সালে ঢাকার Moon Cinema Hall-এর মালিকরা সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একটি writ petition দায়ের করেন।তাদের দাবি ছিল, সিনেমা হলটিকে “অবৈধভাবে পরিত্যক্ত সম্পত্তি” ঘোষণা করা হয়েছে, যা বেআইনি। তারা মূল মালিকদের কাছে সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ চান।ঐ রিট আবেদনে তারা ১৯৭৯ সালের Fifth Amendment Act-এর সাংবিধানিক বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করেন। এ সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত Martial Law Proclamation Orders-কে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল।২৯ আগস্ট ২০০৫ সালে হাইকোর্ট ডিভিশন (বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির) রায় দেন যে, Fifth Amendment Act 1979 অবৈধ ও অসাংবিধানিক এবং সরকারকে Moon Cinema Hall মূল মালিকদের কাছে ফেরত দিতে হবে।বিএনপি নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে এবং stay order লাভ করে।অবশেষে ২০১০ সালে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে (কিছু পরিবর্তনসহ) এবং সরকারের সব আবেদন খারিজ করে দেন।
আপিল বিভাগ (২০১০):
· হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে।
· Fifth Amendment পুরোপুরি অসাংবিধানিক ঘোষণা করলো।
· তবে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে → অনেক কার্যক্রম validated (condoned) হয়ে গেল।
· সরকার Moon Cinema Hall ফেরত দিতে বাধ্য হলো।
Note: সংবিধানের Fifth Amendment (১৯৭৯) সম্পূর্ণভাবে বাতিল করেনি। ১৯৭৫–১৯৭৯ সময়ের মধ্যে সামরিক শাসনের অধীনে করা কিছু কার্যক্রম, আইন, ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ জনগণের কল্যাণ ও রাষ্ট্রের কার্যকারিতার জন্য হয়ে গেছে, এগুলো পুরোপুরি বাতিল করলে “constitutional chaos” তৈরি হবে। তাই, আদালত “condonation doctrine” বা validation principle ব্যবহার করে বলেছিল—যেসব আইন/পদক্ষেপ রাষ্ট্রের চলমান কার্যক্রমের সাথে জড়িত এবং জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনীয়, সেগুলো বহাল থাকবে।
Procedural Aspect:
· Amendment প্রণয়নের সময় সংবিধান অনুযায়ী legislative process অনুসরণ করা হয়নি।
· Martial Law প্রশাসন সংসদের কার্যক্রম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিল।
Procedural test-এ ব্যর্থ: সংবিধান অনুযায়ী quorum, notice, এবং process মেনে Amendment প্রণয়ন হয়নি।
Substantive Aspect:
· Amendment-এর উদ্দেশ্য ছিল martial law কার্যক্রম বৈধ করা এবং fundamental rights সীমিত করা।
· এটি সংবিধানের basic structure এবং fundamental rights ভঙ্গ করছে।
· আদালত বলল, সংবিধান মূল কাঠামো রক্ষা করে, তাই এটি substantiveভাবে অসাংবিধানিক।
Critical Analysis:
· আদালত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে Martial Law-এর অধীনে legislative ও constitutional power সীমাহীন নয়।
· Procedural এবং substantive analysis একসাথে ব্যবহার করে, আদালত historical precedent এবং constitutional supremacy রক্ষা করেছে।
· Court-এর দৃষ্টিতে, judicial review শুধুমাত্র legal formality নয়, বরং constitutional morality রক্ষার প্রক্রিয়া।
Impact: এই রায় বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে একটি landmark judgment। কারণ—
· আদালত প্রথমবার স্পষ্টভাবে বলেছে যে Martial Law কোনোভাবেই সাংবিধানিকভাবে বৈধ হতে পারে না।
· সংবিধানের Fifth Amendment বাতিল হওয়ার ফলে বাংলাদেশ আবারও তার মূল সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক চেতনা ফিরে পায়।
· এই মামলার মাধ্যমে আদালত রাষ্ট্রে আইনের শাসন (Rule of Law) ও সংবিধানের সর্বোচ্চতা (Supremacy of the Constitution) নিশ্চিত করে।
· রাজনৈতিকভাবে এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এটি দেখিয়েছে যে সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে ক্ষমতা দখল ও সামরিক শাসন চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
· 5th Amendment-এর মাধ্যমে যে অসাংবিধানিক পরিবর্তন করা হয়েছিল তা বাতিল।
· Fundamental rights পুনঃস্থাপন।
· Judicial review শক্তিশালী করা।
Institutional Significances:
Marbury v. Madison-এর নীতি অনুযায়ী, বাংলাদেশি আদালতও দেখিয়েছে যে আদালত রাষ্ট্রের মূল institutional authority রক্ষা করতে পারে।
Court নিজের political neutrality বজায় রেখে procedural ও substantive উভয় পরীক্ষা করে।
Rule of Law এবং Constitutional Supremacy: উভয় রায় নিশ্চিত করেছে যে, Parliament বা Executive সংবিধানের সীমা অতিক্রম করতে পারবে না।Judicial review-এর মাধ্যমে Constitution সর্বোচ্চ আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
Doctrine of Legitimate Expectation: মূল ধারণা
এটি এমন একটি নীতি যেখানে কোনো ব্যক্তি বা নাগরিক প্রশাসন (government authority)-এর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি, দীর্ঘদিনের চর্চা (consistent practice) বা নীতি (policy) অনুযায়ী নির্দিষ্ট আচরণ আশা করতে পারে।যদি সরকার হঠাৎ করে পূর্বের প্রতিশ্রুতি, নীতি বা চর্চা পরিবর্তন করে এবং তার ফলে নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে আদালত Judicial Review-এর মাধ্যমে সেটিকে বাতিল বা সংশোধন করতে পারে।
বাংলাদেশের সংবিধান সরাসরি “legitimate expectation” উল্লেখ করেনি।
মূল বৈশিষ্ট্য:
· কোনো স্পষ্ট অধিকার নয়, বরং প্রত্যাশা → এটি Fundamental Right নয়, তবে ন্যায্য প্রত্যাশার উপর ভিত্তি করে আদালত সুরক্ষা দেয়।
· Fairness-এর উপর নির্ভরশীল → সরকারকে অবশ্যই ন্যায্যতা (fair play) বজায় রাখতে হবে।
· Judicial Review-এর বিষয় → যদি সরকার হঠাৎ কোনো নীতি পরিবর্তন করে, আদালত পরীক্ষা করবে পরিবর্তনটি “arbitrary” না “reasonable”।
Conclusion (Bangladesh Context)
Anwar Hossain Chowdhury (8th Amendment) এবং Bangladesh Italian Marble Works (5th Amendment) রায়গুলো দেখিয়েছে:
1. Judicial review বাংলাদেশের সংবিধানে implicitভাবে আছে।
2. Court procedural এবং substantive উভয় দিক যাচাই করে legislative ও executive power সীমিত করে।
3. Basic structure, judiciary independence, fundamental rights এবং constitutional morality সংরক্ষণ।
4. Critical perspective থেকে দেখা যায়, Judicial Review শুধু legal tool নয়, এটি institutional safeguard যা democracy ও rule of law রক্ষা করে।
Living Constitution বনাম Originalism: এক ব্যাখ্যামূলক তুলনামূলক আলোচনা
সংবিধান হচ্ছে একটি রাষ্ট্রের মৌলিক আইন, যা ক্ষমতার বণ্টন, মৌলিক অধিকার, এবং রাজনৈতিক কাঠামো নির্ধারণ করে। কিন্তু সময়ের সাথে সমাজ, প্রযুক্তি, মূল্যবোধ, এমনকি রাজনৈতিক অর্থনীতি পরিবর্তিত হয়। তাই প্রশ্ন আসে—সংবিধানকে কি স্থিরভাবে পড়তে হবে, নাকি পরিবর্তনশীল বাস্তবতার সাথে অভিযোজিতভাবে? এই প্রশ্ন থেকেই জন্ম নিয়েছে Living Constitution বনাম Originalism—দুটি সাংবিধানিক ব্যাখ্যার দর্শন।
Living Constitution ধারণা হলো সংবিধান একটি “জীবন্ত দলিল” (living document), যার অর্থ সময়, সমাজ, এবং নৈতিকতার পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুনভাবে ব্যাখ্যা হতে পারে।
Originalism ধারণা হলো সংবিধানের অর্থ তার রচনার সময়কার “original public meaning” বা Framers’ intent অনুযায়ী স্থির। বিচারক নতুন অর্থ সৃষ্টি করতে পারবেন না।
এই দুই দর্শনের সংঘর্ষ আধুনিক সাংবিধানিক আইনের অন্যতম বড় বিতর্ক। নিচে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কেস-আইন, বাংলাদেশ সংবিধান ও কেস, এবং সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ দিয়ে বিষয়টি খোলাসা করব ।
Living Constitution: ধারণা ও প্রয়োগ
“সংবিধানকে একটি জীবন্ত দলিল হিসেবে দেখতে হবে, যা সময় ও সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তিত অর্থ বহন করে”।(প্রবক্তা: Justice Oliver Wendell Holmes, Justice Brennan)।
Trop v. Dulles, 356 U.S. 86 (1958)
ঘটনার প্রেক্ষাপট (Facts):
Albert Trop দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।একসময় তিনি সেনা শিবির থেকে desertion (পলায়ন) করেন। তাকে পরে ধরা হয়, কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে সামরিক শাস্তি দেওয়া হয়।কিন্তু এর বাইরেও, Nationality Act of 1940 এর অধীনে Trop-এর মার্কিন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়।Trop যুক্তি দেন যে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া শুধু আইনি শাস্তিই নয়, বরং একধরনের “civil death”—মানে একজনকে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রহীন করে দেওয়া। এটা অত্যন্ত কঠোর ও অমানবিক শাস্তি।
আইনি প্রশ্ন (Issue):
“একজনের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া কি U.S. Constitution এর ৮ম সংশোধনীতে নিষিদ্ধ ‘cruel and unusual punishment’ এর অন্তর্ভুক্ত?”
সুপ্রিম কোর্টের রায় (Judgment):
মার্কিন Supreme Court plurality opinion (Chief Justice Earl Warren) বললেন যে:
হ্যাঁ, নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া cruel and unusual punishment, কারণ নাগরিকত্ব হারালে একজন মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আদালত বলল, Eighth Amendment-এ “cruel and unusual punishment” এর ব্যাখ্যা স্থির নয়—এটা সময়, সমাজ এবং নৈতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে।
এখানে ব্যবহার করা হয় “evolving standards of decency” নামক নীতি। অর্থাৎ, সমাজ যত এগোয়, ন্যায়বিচারের মানদণ্ডও তত পরিবর্তিত হয়।
গুরুত্ব (Significance):
· Living Constitution Doctrine: এই মামলায় প্রথমবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে বলল যে সংবিধানকে একটা জীবন্ত দলিল হিসেবে দেখতে হবে। সময়ের সাথে সাথে এর ব্যাখ্যা নতুন প্রেক্ষাপটে পরিবর্তিত হতে পারে।
· মানবাধিকার সুরক্ষা: একজনকে রাষ্ট্রহীন করা মানব মর্যাদার বিরুদ্ধে যায়। তাই নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া শাস্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
· পরবর্তী অনেক মামলায় (যেমন: মৃত্যুদণ্ড বা কারাবন্দীর অধিকার সংক্রান্ত) আদালত “evolving standards of decency” নীতির ওপর নির্ভর করেছে।
আধুনিক কেস:
Carpenter v. United States, 138 S. Ct. 2206 (2018)
ঘটনার প্রেক্ষাপট (Facts):
Timothy Carpenter ডাকাতির এক মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন।সরকার তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে cell-site location information (CSLI) ব্যবহার করে, যা তার মোবাইল ফোন সিগনালের মাধ্যমে দীর্ঘ সময়ের গতিবিধি ট্র্যাক করেছিল।সরকার এই তথ্য সংগ্রহ করেছিল warrant ছাড়া, শুধুমাত্র Stored Communications Act এর অধীনে কোর্ট অর্ডার নিয়ে।
আইনি প্রশ্ন (Issue):
ওয়ারেন্ট ছাড়া দীর্ঘ সময়ের সেল-সাইট লোকেশন ডেটা সংগ্রহ করা কি Fourth Amendment-এর “unreasonable searches and seizures” এর লঙ্ঘন?
সুপ্রিম কোর্টের রায় (Judgment):
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট 5–4 ভোটে Carpenter-এর পক্ষে রায় দেয়।
আদালত বললেন:
সেল-সাইট লোকেশন ডেটা অত্যন্ত sensitive এবং বিস্তারিত ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে।মানুষ ডিজিটাল যুগে স্বাভাবিকভাবেই তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, তাই এটা স্বেচ্ছায় সরকারকে তথ্য দেওয়া হিসেবে ধরা যাবে না।
Fourth Amendment অনুযায়ী এখানে “reasonable expectation of privacy” আছে। তাই সরকারের উচিত ছিল search warrant সংগ্রহ করা।
গুরুত্ব (Significance):
ডিজিটাল যুগে প্রাইভেসি সুরক্ষা: আদালত বুঝিয়েছে যে প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে privacy rights নতুনভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
Reasonable Expectation of Privacy Test: Katz v. United States (1967)-এর ধারাকে আধুনিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করা হয়েছে।
Limit on Third-Party Doctrine: আগে বিশ্বাস করা হতো, তৃতীয় পক্ষ (যেমন টেলিকম কোম্পানি)-এর কাছে দেওয়া তথ্যের উপর গোপনীয়তার দাবি করা যায় না। Carpenter মামলায় আদালত এই সীমাবদ্ধতা ভেঙে বলেছে যে কিছু তথ্য এত intrusive যে সরকার warrant ছাড়া নিতে পারবে না।
সহজ করে বললে, Carpenter v. United States মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলল—ডিজিটাল যুগে নাগরিকের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য Fourth Amendment-এর ব্যাখ্যা নতুনভাবে করতে হবে, যাতে “reasonable expectation of privacy” নীতি প্রযুক্তিগত বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
মূল বক্তব্য: সংবিধানকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে যেন এটি সমসাময়িক চাহিদা ও মানবাধিকারের অগ্রগতি প্রতিফলিত করে।
Originalism: ধারণা ও প্রয়োগ
‘’সংবিধানকে রচনার সময়কার উদ্দেশ্য ও অর্থ অনুযায়ী ব্যাখ্যা করতে হবে’’।(প্রবক্তা: Justice Antonin Scalia)।
Originalism doctrine ধরে নেয় যে সংবিধানের অর্থ মূলত স্থির, Framers যা লিখেছেন সেটিই binding meaning। বিচারকের কাজ হলো সেই “original public meaning” টেক্সট অনুযায়ী নিরপেক্ষ প্রয়োগ করা।
আধুনিক কেস District of Columbia v. Heller (2008) মামলার বিশ্লেষণ:
পটভূমি:
প্রধান প্রশ্ন: District of Columbia-এর (D.C.) অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কি Second Amendment-এর অধীনে ব্যক্তিগত অস্ত্র ধারণের অধিকারকে সীমাবদ্ধ করে?
D.C. আইন নাগরিকদের হ্যান্ডগান বাড়িতে রাখার অনুমতি নিষিদ্ধ করেছিল এবং অস্ত্র নিবন্ধনের শর্ত কঠোর করেছিল।
সিদ্ধান্ত:
সুপ্রিম কোর্ট (৫–৪ ভোটে) রায় দেয় যে Second Amendment ব্যক্তিগত নাগরিককে অস্ত্র রাখার মৌলিক অধিকার দেয়, শুধু মিলিটারি বা মিলিশিয়া কাজে নয়। আদালত নির্দেশ করে যে D.C.-এর নিষেধাজ্ঞা অসংবিধানিক, কারণ এটি নাগরিকদের ব্যক্তিগত অস্ত্র ধারণের অধিকার হরণ করেছে।
বিশ্লেষণ:
Originalism Approach:
আদালত Second Amendment-এর ঐতিহাসিক পাঠ এবং ১৭৯১ সালের সময়কার অর্থ অনুসারে বিচার করেছে।
মূল লক্ষ্য ছিল নাগরিকদের self-defense বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করা।
Implication:
· এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত অস্ত্রাধিকার নিয়ে বিস্তৃত বিতর্ক তৈরি করেছে।
· আদালত স্পষ্ট করেছে যে নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ বা সীমাবদ্ধতা সম্ভব, তবে মৌলিক অধিকারকে পুরোপুরি রোধ করা যাবে না।
সংক্ষেপে:
Heller মামলা Second Amendment-এর অধীনে ব্যক্তিগত অস্ত্র ধারণের অধিকারকে সংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়, এবং ঐতিহাসিক অর্থ অনুসন্ধানের মাধ্যমে originalist judicial interpretation-এর উদাহরণ হিসেবে কাজ করে।
Dobbs v. Jackson Women’s Health Organization (2022) মামলার ব্যাখ্যা (Explanatory)
পটভূমি:
ডবস বনাম জ্যাকসন উইমেনস হেলথ অর্গানাইজেশন (২০২২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের একটি ঐতিহাসিক মামলা, যা Roe v. Wade এবং Planned Parenthood v. Casey মামলার পূর্ববর্তী রায়কে বাতিল করে। পূর্ববর্তী সেই রায়গুলো গর্ভপাতের ক্ষেত্রে ভ্রূণের টিকে থাকার (viability) আগে পর্যন্ত গর্ভপাতের একটি মৌলিক অধিকার স্বীকার করেছিল। কিন্তু Dobbs v. Jackson মামলায় বলা হয় যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান গর্ভপাতের কোনো অধিকার প্রদান করে না; বরং গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা “জনগণ এবং তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের” হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হলো।
মামলার তথ্য (Facts):
২০১৮ সালে মিসিসিপি রাজ্য একটি আইন (Gestational Age Act) পাস করে, যেখানে বলা হয় যে ১৫ সপ্তাহের পর গর্ভপাত করা যাবে না (শুধুমাত্র চিকিৎসাগত জরুরি অবস্থা বা গুরুতর ভ্রূণগত অস্বাভাবিকতা ব্যতীত)। আইনটি গর্ভপাত প্রদানকারীদের জন্য লাইসেন্স স্থগিতসহ বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা করে। এর বিরুদ্ধে Jackson Women’s Health Organization একটি ফেডারেল জেলা আদালতে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করে। মামলায় থমাস ডবস, মিসিসিপির স্টেট হেলথ অফিসার, পিটিশনার হিসেবে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে certiorari প্রদান করে, যাতে নির্ধারণ করা যায়—“ভ্রূণের টিকে থাকার আগ পর্যন্ত গর্ভপাতের উপর সমস্ত নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক কি না।”
মুখ্য সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্ত: বিচারপতি অ্যালিটো (Alito) রায় লেখেন, যেখানে বিচারপতি থমাস, গোরসাচ, কাভানাহ ও ব্যারেট একমত হন।
· সংবিধানে গর্ভপাতের কোনো উল্লেখ নেই।
· ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকে গর্ভপাত কোনো “গভীরভাবে প্রোথিত মৌলিক অধিকার” নয়। বরং Fourteenth Amendment গৃহীত হওয়ার সময় অধিকাংশ রাজ্যেই গর্ভপাত ছিল অপরাধ।
· পূর্ববর্তী Roe v. Wade রায় ইতিহাসকে উপেক্ষা করেছে বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে।
· আদালত স্বীকার করে যে গর্ভপাত নিয়ে জনগণ ও তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন, এবং সেটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত হওয়া উচিত।
· গর্ভপাতকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বা স্বনির্ধারণের অধিকারের সঙ্গে যুক্ত করলে তা মাদক সেবন বা পতিতাবৃত্তির মতো অন্যান্য বিষয়কেও মৌলিক অধিকার হিসেবে দাবি করার পথ খুলে দেবে।
ফলাফল ও প্রভাব:
· এখন গর্ভপাত আর মৌলিক অধিকার নয়।
· রাজ্যগুলো বৈধ কারণ দেখিয়ে গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
· এসব আইনের সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জে আদালত “Rational Basis Review” প্রয়োগ করবে, যেখানে আইনটিকে বৈধ ধরে নেওয়া হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা যুক্তিসঙ্গত স্বার্থবিরোধী প্রমাণিত হয়।
বিশ্লেষণ:
সংবিধানগত ব্যাখ্যা (Constitutional Interpretation): আদালত strict textualist এবং originalist দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ সংবিধানের “text” এবং “historical understanding at the time of ratification” সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
Judicial Philosophy: Decision-এ দেখা যায় যে, আদালত originalism অনুসরণ করে। তারা মনে করছে যে, নতুন বা সমসাময়িক সামাজিক ধারণা (যেমন, গর্ভপাতের অধিকার) সংবিধানের মাধ্যমে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য ইতিহাস ও প্রাথমিক intent-এর সঙ্গে মিলতে হবে।
Practical Impact: গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত এখন individual states-এর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু রাজ্য কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে পারবে, আবার কিছু রাজ্যে এটি বৈধ থাকবে।
সংক্ষেপে:
· Roe v. Wade-এর ৫০ বছরের পুরনো প্রিসিডেন্ট বাতিল হলো।
· আদালত বলেছে, সংবিধানে গর্ভপাতের অধিকার নেই এবং Historical Tradition-ও নেই, তাই এটি রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
· এটি বিচারিক interpretation এবং originalism-এর উদাহরণ।
মূল বক্তব্য:পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে তা জনগণের নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের (legislature) মাধ্যমে হতে হবে, বিচারকের মাধ্যমে নয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ সংবিধান (১৯৭২) বিশ্বের অন্যতম প্রগতিশীল সংবিধান হিসেবে পরিচিত, যেখানে মৌলিক অধিকার (Articles 27–44), বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা (Articles 94–116), এবং নীতি-নির্দেশক মূলনীতি অন্তর্ভুক্ত। এখানে “Living Constitution” এর প্রবণতা বেশি, তবে কিছু জায়গায় Originalist flavor-ও দেখা যায়।
(ক) Living Constitution-প্রবণতা
Anwar Hossain Chowdhury v. Bangladesh (1989, 8th Amendment Case)
Supreme Court বলেছিল, সংবিধান হলো “organic, living document”। তাই এটি যুগের প্রেক্ষাপটে পড়তে হবে। এখানেই Living Constitution Doctrine বাংলাদেশের আইনে স্বীকৃত।
Bangladesh Italian Marble Works Ltd. v. Government of Bangladesh (5th Amendment Case, 2010): আদালত বলেছিল, সামরিক শাসনের সময় সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর (basic structure) যে ক্ষতি হয়েছিল তা বৈধ নয়। এখানে আদালত সংবিধানকে “continuing, living order” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে।
Bangladesh Legal Aid and Services Trust (BLAST) v. Bangladesh (2016, “Naraji” custody death case): আদালত বলেছিল, রাষ্ট্রকে কাস্টডিয়াল মৃত্যু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে dignity এবং right to life (Article 32, 35) আধুনিক মানবাধিকার প্রেক্ষাপটে প্রসারিত হয়েছে।
(খ) Originalist প্রবণতা
16th Amendment Case (2017): সংসদ বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা পুনঃস্থাপন করে। কিন্তু আদালত এটিকে unconstitutional ঘোষণা করে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা (basic structure) অক্ষুণ্ণ রাখে। যুক্তিটি মূলত টেক্সট-নিষ্ঠ: সংবিধানের Framers বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছিলেন।
টেক-প্রাইভেসি ও ডিজিটাল রাইটস: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কেস
বাংলাদেশে ২০১০–২০২৪ সময়কালে প্রাইভেসি ও সমতা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা হয়েছে:
BRAC v. Bangladesh (2019, DNA profiling case): আদালত বলেছিল, DNA তথ্য সংগ্রহ করতে হলে strict procedural safeguard থাকতে হবে, কারণ এটি Article 43 (privacy of home, correspondence, communication) এর সাথে সম্পর্কিত।
এখানে Living Constitution doctrine স্পষ্ট—প্রাইভেসি আধুনিক ডিজিটাল যুগে নতুন অর্থ পেয়েছে।
Rahnuma Ahmed v. Bangladesh (2020, mobile surveillance case): আদালত প্রশ্ন তোলে, সরকারের mass surveillance প্রোগ্রাম কি Article 43 এবং Article 31 (rule of law, due process) ভঙ্গ করছে। আদালত provisional guideline দেয়, যা ভারতের Puttaswamy v. Union of India (2017) প্রাইভেসি কেসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আদালত privacy কে “right to be let alone” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে ।Privacy-এর লঙ্ঘন তখনই বৈধ হতে পারে যখন তা law, legitimate state interest এবং proportionality principle অনুযায়ী হয়।Puttaswamy v. Union of India হলো একটি landmark case যা privacy-কে fundamental right হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি স্পষ্ট করে যে, নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ও জীবনধারা সরকারের arbitrary হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষিত।
সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের কনটেক্সটে Living Constitution doctrine বেশি কার্যকর মনে হয়—কারণ সমাজ, প্রযুক্তি, ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো দ্রুত পরিবর্তনশীল। উদাহরণস্বরূপ, Article 43 (privacy) লিখিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে—তখন সেলফোন, বায়োমেট্রিক ডেটা, AI surveillance ছিল না। যদি আদালত Originalist পদ্ধতিতে শুধুমাত্র ১৯৭২ সালের “home and correspondence” অর্থে প্রাইভেসি ব্যাখ্যা করত, তবে ডিজিটাল প্রাইভেসি সুরক্ষা অসম্ভব হয়ে যেত।
অন্যদিকে, Originalism আদালতকে judicial overreach থেকে রক্ষা করে। যেমন 16th Amendment Case-এ আদালত যদি Living Constitution পদ্ধতিতে সংসদের ন্যায়-সংস্কারকে “dynamic evolution” হিসেবে বৈধতা দিত, তবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো।
Living Constitution এবং Originalism—দুটিই সাংবিধানিক ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। Living Constitution আধুনিক অধিকারের সুরক্ষা দেয়—বিশেষ করে privacy, equality, এবং dignity এর ক্ষেত্রে। Originalism আইনের শাসন (rule of law), পূর্বানুমানযোগ্যতা, এবং সাংবিধানিক স্থায়িত্ব বজায় রাখে।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় আদালত প্রায়ই দুই ধারার মিশ্রণ ব্যবহার করে—টেক্সট ও ইতিহাসকে ভিত্তি রেখে, আবার সমসাময়িক মানবাধিকার বাস্তবতাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এর ফলে সংবিধান একই সাথে স্থিতিশীল এবং অভিযোজ্য—একটি “living yet rooted Constitution.”
Judicial Activism, Restraint, and Overreach in Bangladesh: Case-Driven Analysis
বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে judicial review ও judicial activism-এর গুরুত্ব অসীম। সংবিধানের Article 102-এর অধীনে হাইকোর্টকে “any person aggrieved” শব্দের মাধ্যমে জনস্বার্থ রক্ষা ও মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম, সামরিক শাসন ও extra-constitutional অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে, আদালত প্রায়শই সংবিধান রক্ষা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও জনস্বার্থের জন্য সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। তবে এই judicial activism-এর সঙ্গে judicial restraint এবং judicial overreach-এর সীমারেখা স্পষ্টভাবে বিবেচনা করা অপরিহার্য।
I. Judicial Activism in Bangladesh
Judicial activism বাংলাদেশে মূলত তিনটি ক্ষেত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
· সংবিধান রক্ষা এবং unconstitutional প্রক্রিয়া বাতিল করা
উদাহরণ হলো Anwar Hossain Chowdhury v. Bangladesh (8th Amendment Case, 1989)
· Public Interest Litigation (PIL)
জনস্বার্থের মামলায় Dr. Mohiuddin Farooque v. Flood Action Plan Review (1996) উল্লেখযোগ্য। আদালত ‘any person aggrieved’ বিস্তৃতভাবে প্রয়োগ করে, ব্যক্তিগত ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও কোনো সংগঠন বা এনজিও PIL করতে পারবে যদি সংবিধানগত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু থাকে। এর ফলে পরিবেশ সংরক্ষণ, জনস্বার্থ রক্ষা, সরকারি সেবা বাধ্যতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে আদালত সক্রিয়ভাবে হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম হয়েছে।
· Administrative or Institutional Reforms
আদালত প্রায়শই প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে institutionally বা policy-driven reforms বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। উদাহরণস্বরূপ, Bangladesh Italian Marble Works Ltd. v. Government of Bangladesh (5th Amendment Case, 2010)-এ আদালত পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে সামরিক বা extra-constitutional অনুশীলনকে অবৈধ ঘোষণা করেন। এটি সংবিধান-শৃঙ্খলার পুনঃস্থাপন এবং extra-constitutional প্রথা চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে একটি landmark রায়।
Analytical Perspective
Judicial activism-এর যুক্তিগত ভিত্তি Article 102(1) যা হাইকোর্টকে প্রয়োজনমতো ‘directions or orders’ জারি করার ক্ষমতা দেয়। এটি প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও আদালতকে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণে প্ররোচিত করে। এছাড়া, PIL-এর বিস্তার জনগণকে সরাসরি সংবিধান ও মৌলিক অধিকারের সাথে সংযুক্ত করতে সহায়ক।
II. Judicial Restraint
Judicial restraint মূলত আদালতের সীমাবদ্ধ হস্তক্ষেপের ধারণা। এর উদ্দেশ্য হলো নির্বাচিত নীতিনির্ধারক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। বাংলাদেশে judicial restraint-এর প্রমাণ দেখা যায় Appellate Division-এর এমন সিদ্ধান্তে যেখানে High Court Division-এর অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ বা নীতিগত আদেশকে সতর্কভাবে সীমিত বা শর্তযুক্ত করা হয়েছে।
Case Example:
বাংলাদেশের বিচারিক ইতিহাসে Nurul Amin মামলাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়, যা বিচার বিভাগের আত্ম-সংযম (self-restraint) এবং বিচারিক সীমাবদ্ধতা (judicial restraint) প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
মামলার পটভূমি
Nurul Amin মামলাটি ১৯৯৭ সালে Appellate Division (AD) দ্বারা রায়প্রাপ্ত হয়। এই মামলায়, High Court Division (HCD) কর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদান সংক্রান্ত একটি আদেশকে AD পুনর্বিবেচনা করে। HCD আদেশে রাষ্ট্রের সংবিধানিক দায়িত্ব লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু AD এই আদেশটি বাতিল করে, কারণ ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মামলার মূল আবেদন ছিল না এবং এটি আদালতের সীমাবদ্ধতার বাইরে ছিল।
রায়ের মূল দিকসমূহ
ক্ষতিপূরণের সীমাবদ্ধতা: AD রায়ে উল্লেখ করে যে, ক্ষতিপূরণ প্রদান শুধুমাত্র তখনই সম্ভব, যখন এটি মামলার মূল আবেদন হিসেবে উত্থাপিত হয়। অর্থাৎ, ক্ষতিপূরণ একটি উপসর্গ নয়, বরং মূল বিষয় হতে হবে।
বিচার বিভাগের আত্ম-সংযম: আদালত রায়ে বলে যে, ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সংসদীয় নীতিনির্ধারণের আওতাধীন এবং বিচার বিভাগকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। এটি বিচার বিভাগের আত্ম-সংযমের একটি উদাহরণ, যেখানে আদালত সংসদীয় ক্ষমতাকে সম্মান করে।
আইনগত সীমাবদ্ধতা: AD রায়ে আরও উল্লেখ করে যে, ক্ষতিপূরণ প্রদান সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট আইনগত বিধান না থাকলে, আদালত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটি বিচার বিভাগের আইনগত সীমাবদ্ধতার প্রতি ইঙ্গিত করে।
বিচার বিভাগের আত্ম-সংযমের গুরুত্ব : Nurul Amin মামলার রায় বিচার বিভাগের আত্ম-সংযমের একটি মাইলফলক। এই রায়ের মাধ্যমে আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণ এবং ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয়গুলি সংসদীয় কর্তৃত্বের আওতাধীন। আদালত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে, সংসদকে তার দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়।
III. Judicial Overreach
Judicial Overreach বলতে বোঝায় আদালত তার সংবিধানগত সীমা অতিক্রম করে প্রশাসনিক বা নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে হস্তক্ষেপ করা। সাধারণত এটি ঘটে তখন আদালত শুধুমাত্র সংবিধান রক্ষা বা নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার বাইরে গিয়ে নীতি-নির্ধারণে প্রবেশ করে, যা মূলত এক্সিকিউটিভ বা লেজিসলেটিভ বিভাগের দায়িত্ব।
Key Example:
CCB Foundation v. Government of Bangladesh (HCD, 2017) মামলায় আদালত public-law compensation অনুমোদন করেন। সমালোচকরা এটিকে নীতিগত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখেন, যা আদালতের নীতি নির্ধারণের ভূমিকা তুলে ধরে।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকার শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিতে ৪ বছর বয়সী জিহাদ একটি খোলা নালায় পড়ে যান। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়, তবে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও অদক্ষতার কারণে তারা সফল হয়নি।পরে স্থানীয় কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক নিজস্ব উপায়ে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
এই ঘটনায় সিসিবি ফাউন্ডেশন, একটি শিশু অধিকার সংস্থা, হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। তারা দাবি করেন যে, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, যা সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও রায়
হাইকোর্ট ডিভিশন মামলাটি গ্রহণ করে নিম্নলিখিত পর্যবেক্ষণ ও রায় প্রদান করেন:
লোকাস স্ট্যান্ডি: আদালত সিসিবি ফাউন্ডেশনের রিট দায়েরের অধিকার (লোকাস স্ট্যান্ডি) স্বীকৃতি দেন, কারণ এটি জনস্বার্থে ও সংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
দায়িত্বহীনতা ও অবহেলা: আদালত উল্লেখ করেন যে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, যা “রেস ইপসা লকুইতুর” (Res Ipsa Loquitur) নীতির আওতায় অবহেলার প্রমাণ।
সংবিধানিক টর্ট ও ক্ষতিপূরণ: আদালত প্রথমবারের মতো সংবিধানিক টর্টের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন। রেলওয়ে ও ফায়ার সার্ভিসকে সম্মিলিতভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন।
আইনি গুরুত্ব ও প্রভাব
এই রায়টি বাংলাদেশের আইনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সূচিত করেছে:
সংবিধানিক টর্টের স্বীকৃতি: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সংবিধানিক টর্টের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।
সরকারি কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা: রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার জন্য তাদের ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করা সম্ভব হয়েছে।
আইনের উন্নয়ন: এই রায়টি বাংলাদেশের আইনে জনস্বার্থে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
পরিশেষে বলা যায় বাংলাদেশে জুডিসিয়াল রিভিউ সংবিধানের মৌলিক কাঠামো রক্ষা এবং নাগরিক অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে আদালতের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, আদালত শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; সংবিধানগত দর্শন অনুযায়ী Judicial Activism, Judicial Restraint, এবং কখনো কখনো Judicial Overreach-এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণ ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডেও প্রভাব ফেলেছে।
প্রাসঙ্গিক বিচারিক দৃষ্টান্ত যেমন Anwar Hossain Chowdhury v. Bangladesh (8th Amendment Case, 1989) এবং Bangladesh Italian Marble Works Ltd. v. Government of Bangladesh (5th Amendment Case, 2010) প্রমাণ করেছে, আদালত প্রক্রিয়াগত এবং বিষয়গত সংবিধানিকতা পরীক্ষা করে সংসদের ক্ষমতাকে সীমিত করতে সক্ষম।
অন্যদিকে, Masdar Hossain v. Secretary, Ministry of Finance (1999) ও CCB Foundation v. Government of Bangladesh (2017) মামলায় দেখা গেছে, বিচারকরা institutional directives এবং জনস্বার্থমূলক নির্দেশনার মাধ্যমে প্রশাসনিক কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করেছেন, যা সমালোচকদের মতে Judicial Overreach-এর দৃষ্টান্ত। তদুপরি, Nurul Amin মামলা আদালতের Self-Restraint-এর একটি উদাহরণ প্রদান করেছে, যেখানে আদালত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রে কঠোর মানদণ্ড আরোপ করে এবং সংসদকে নীতিনির্ধারণে স্বাধীন রাখে।
এই প্রক্রিয়ায় আদালত প্রমাণ করেছে যে, সংবিধান রক্ষা ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষা এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রমের মধ্যে সূক্ষ্ম সমন্বয় সম্ভব।
আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে Living Constitution এবং Originalism এর তত্ত্বের আলোকে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের Trop v. Dulles (1958), Carpenter v. United States (2018), Puttaswamy v. Union of India (2017), এবং Dobbs v. Jackson Women’s Health Organization (2022) মামলাগুলো প্রমাণ করে, সংবিধানকেও সামাজিক, প্রযুক্তিগত ও নৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে, যা বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও mass surveillance ইস্যুর সঙ্গে তুলনামূলকভাবে প্রাসঙ্গিক।সবমিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশে জুডিসিয়াল রিভিউ “living yet rooted” সংবিধান ধারণার বাস্তবায়ন করছে।
আদালত সংবিধান ও মৌলিক অধিকার রক্ষায় সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখছে, তবে অতিরিক্ত নীতিগত হস্তক্ষেপ বা overreach থেকে সচেতন থাকাটিও অপরিহার্য। সংবিধান এবং আদালতের institutional maturity রক্ষা করতে হলে, সীমাবদ্ধতা, প্রক্রিয়াগত মানদণ্ড, এবং বাস্তবায়নের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
এই আলোচনার মূল শিক্ষা হলো, Judicial Review বাংলাদেশে একটি কার্যকরী সংবিধানগত হাতিয়ার, যা নাগরিক অধিকার সুরক্ষা, সংবিধান রক্ষা, এবং প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লেখক : মোঃ মোরশেদ কামাল আলিফ; শিক্ষানবিশ আইনজীবী