মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) এর বিচারক এস. এম. জিল্লুর রহমান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামিদের পরিচয়
যারা যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তারা হলেন—
-
হাবিবুর রহমান ও আনোয়ারার পুত্র বেদার মিয়া (ছনখোলা, পিএমখালী ইউনিয়ন)
-
দিল মোহাম্মদ ও জাহেদা বেগমের পুত্র মোস্তাক মিয়া (পরানিয়া পাড়া, পিএমখালী ইউনিয়ন)
-
রশিদ আহমদ ও আলম আরা বেগমের পুত্র মো. বেলাল উদ্দিন (খরুলিয়া বেপারী পাড়া, ঝিলংজা ইউনিয়ন)
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার।
মামলার ঘটনা
ভুক্তভোগী নারী কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকার বাসিন্দা এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গীত শিক্ষিকা।
২০২২ সালের ১৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ইজিবাইকযোগে বাড়ি ফেরার পথে বাংলাবাজার ব্রিজ এলাকায় তিন আসামি তার গতিরোধ করে। পরে তাকে জোরপূর্বক একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।
ঘটনার পর তিনি বাদী হয়ে ২৩ আগস্ট কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন (থানা মামলা নং: ৫৩/২০২২, জিআর মামলা নং: ৫১১/২০২২, নারী নির্যাতন মামলা নং: ১৮৩/২০২৩)।
বিচার প্রক্রিয়া
তদন্ত শেষে পুলিশ আসামি বেদার মিয়া, মোস্তাক মিয়া এবং বেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে।
মামলায় ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্ট, আলামত এবং আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগসহ সব প্রক্রিয়া শেষে আদালত মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করে।
রায় ঘোষণা
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হবে।