ছবি : শিশু আইন-২০১৩ : সংশয়, বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি" শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্য রাখছেন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা
ছবি : শিশু আইন-২০১৩ : সংশয়, বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি" শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্য রাখছেন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা

শিশুবান্ধব শিশু আইন প্রনয়ণে আইন কমিশন কাজ করছে : বিচারপতি জিনাত আরা

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ২০১৩ সালের শিশু আইনের বিদ্যমান অসংগতি, সংশয় ও বিভ্রান্তি দূর করে শিশু বান্ধব শিশু আইন প্রণয়নে আইন কমিশন কাজ করছে। যে আইন হবে আধুনিক, বাস্তবসম্মত, যুগোপযোগী এবং আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন। জাতিসংঘের সনদের সাথে সংগতিপূর্ণ। যাতে ভীতিহীন, নিরাপদ ও শিশু বান্ধব পরিবেশে আইনের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে শিশুদের বিচার করা যায়।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা আদালতের সম্মেলন কক্ষে “শিশু আইন-২০১৩ : সংশয়, বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি” শীর্ষক এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা এ কথা বলেন।

সুপ্রীম কোর্ট আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জিনাত আরা আরো বলেন, কক্সবাজার সহ আঞ্চলিক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত অংশীজন, আইনজ্ঞ ও অভিজ্ঞজনদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত গুলো একত্রিত করে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হবে এবং এ বিষয়ে একটি জাতীয় সেমিনারের মাধ্যমে তা চুড়ান্ত করা হবে। সংশোধিত সেই শিশু আইন শিশুদের অধিকার ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

আইন কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন, আইন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক নাইমা হক। সেমিনারে আলোচকদের মতামত সমন্বয় করেন আইন কমিশনের মূখ্য গবেষণা কর্মকর্তা (জেলা ও দায়রা জজ) বি.এম তারিকুল কবির। আইন কমিশনের অনুবাদ কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী জজ) উজমা শুকরানা’র সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল বিষয়ের উপর পাওয়ায় পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন, আইন কমিশনের গবেষণা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) সোনিয়া আহমেদ।

দিনব্যাপী ২ পর্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ (ভা:) মামুনুর রশিদ, কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১,২ ও ৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) যথাক্রমে এস.এম জিল্লুর রহমান, মোঃ ওসমান গণি ও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সহ অন্যান্য বিচারকবৃন্দ সেমিনারে অংশ নেন।

আরও পড়ুন : ভাই–বোনের উপহারও করমুক্ত হলো, শ্বশুরবাড়ি থেকে উপহার করের আওতায়

এছাড়া কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ সাইফউদ্দীন শাহীন, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আক্তার হোসেন, কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি, আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহিদুল আলম, আইন কমিশনের অনুবাদ কর্মকর্তা (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরী, আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ মাজহারুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী সচিব (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ শামছুল আলম সেমিনারে অংশ নেন।

এছাড়াও কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মোঃ আসিফ, সিনিয়র সহকারী জজ বেলাল উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ছৈয়দ আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ ও ৩ এর পিপি যথাক্রমে অ্যাডভোকেট মীর মোশাররফ হোসেন টিটু ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইউনুস, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দীন, অ্যাডভোকেট আবদুল মন্নান, এপিপি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম সহ বিচারক, সরকারি আইন কর্মকর্তা, আইনজীবী, জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সেমিনারে অংশ নেন।

সেমিনারে বক্তারা বিদ্যমান শিশু আইনের বিভিন্ন প্রয়োগিক জটিলতা, আদালতে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব, লজিস্টিক সাপোর্টের সংকট, প্রবেশন কর্মকর্তার অপ্রতুলতা, অবকাঠামোগত প্রকট সংকটের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
সমাপনী বক্তব্যে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা শিশু আইন-২০১৩ সংশোধন করতে সেমিনারে অংশগ্রহনকারী সকলের মতামতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে বলে জানান এবং অংশগ্রহনকারী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা, সদস্য অধ্যাপক নাইমা হক সহ আইন কমিশনের কর্মকর্তারা রোববার সকালে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন ও সেখানে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন এবং একইদিন বিকেলে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা জজ পদমর্যাদার বিচারকদের সাথে মতবিনিময় করবেন।