মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে তিনি এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর টানা পাঁচদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানায়।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “জাতির বিরুদ্ধে সংঘটিত এই অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয়।”
একইসঙ্গে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আদালতের ওপর ছেড়ে দেন তিনি।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে যুক্তিতর্কে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলের সময় সংঘটিত গুম, হত্যা, নিপীড়নসহ নানা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরা হয়।
এছাড়া আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাস, প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কিত নানা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক শেষে আসামিপক্ষের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করে ট্রাইব্যুনাল। তবে আইনজীবী আমির হোসেন এক সপ্তাহ সময় চাইলেও আদালত তাকে তিনদিন সময় দেন।
এর আগে ৮ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে জেরা শেষ করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে আইনজীবী আমির হোসেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল যুক্তিতর্কের তারিখ নির্ধারণ করে।
মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল-১। মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে।
মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ২,০১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, ৪,০০৫ পৃষ্ঠা দালিলিক প্রমাণ ও ২,৭২৪ পৃষ্ঠা শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে।
অন্যদিকে, আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার অভিযোগে আরেক মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আজ ১৩তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে ট্রাইব্যুনাল-২ এ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।