একাত্তরের ২৬ মার্চের ভাষণের পর জাতির পিতাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে বিচার শুরু করেছিলেন ইয়াহিয়া খান। বঙ্গবন্ধু আদালতে গিয়ে বসলে সবাই বলতেন, মনে হচ্ছে যেন বাঘের বাচ্চা এসে বসেছেন। তিনি সবসময় জয় বাংলাদেশ বলে বক্তব্য শুরু করতেন। বলতেন তোমরা আমার বিচার করে কি করবা। বাংলার মানুষকে ঠেকায়ে রাখতে পারবা না। মৃত্যুর পর পারলে আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পৌঁছে দিও।
আজ বুধবার (৭ মার্চ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশে যখন কোনো খুন হয়, তখন সবাই চিৎকার করে বিচার চায়। ৭৫-রে যখন আমি মা হারিয়েছি, বাবা হারিয়েছি, স্বজন হারিয়েছি তখন কোথাও বিচার চাইতে পারিনি। ১৯৮১ সালে ফিরে এসে মামলা করতে গেছি, তখনও মামলা নেবে না। একটি স্বাধীন দেশে এটা কখনও হতে পারে না।
‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলার মানুষকে ২১ বছর অন্দোলন সংগ্রামের পর আমরা ক্ষমতায় যেতে পেরেছিলাম। এর জন্য দলের অনেক নেতাকর্মীকে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। অনেকে পঙ্গু হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ ছিল বাংলাদেশের স্বর্ণ যুগ। যে কাজগুলো জাতির পিতা শুরু করেছিলেন সেগুলো আমরা শেষ করি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ এ আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। কারণ গ্যাস তুলবে আমেরিকান কোম্পানি। বিক্রি করবে ভারতে। আমি তো সেটা হতে দিতে পারি না। আমরা সরকারে আসতে পারিনি। এরপর আমরা কি দেখেছি। বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়েছে।
‘যাদের বিচার হয়েছিল তাদের চাকরিতে ফেরত দেওয়া হলো। খুনি রশিদ ও হুদাকে সংসদ সদস্য করে পার্লামেন্টে বসালো। যুদ্ধাপরাধীরাই হয়ে গেলেন মন্ত্রী, তাদের হাতেই ক্ষমতা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার জন্য এর চেয়ে খারাপ আর কি হতে পারে।’
এসময় তিনি বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন।