ধর্মীয় বিষয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য: শেরপুরের জেলা জজকে প্রত্যাহার
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

আপিল বিভাগে বিচারপতি কমেছে, মামলা বাড়ছে

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা কমছে, কিন্তু বাড়ছে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা। আপিল বিভাগে বর্তমানে চারজন বিচারপতি আছেন। দেশের ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো এ বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা চারজনে নেমে এল। আর ১৯৯৫ সালের পর এমনটি প্রথম ঘটল।

গত বছরের শুরুতে আপিল বিভাগে বিচারপতি ছিলেন নয়জন। মামলা ছিল ১৩ হাজার ৩৬১টি। মৃত্যু, অবসর ও পদত্যাগের কারণে ১৪ মাসে পাঁচজন কমে এখন বিচাপতি আছেন চারজন। আর মামলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫৬৫টি। বিচারপতির স্বল্পতার কারণে এখন একটি বেঞ্চে বিচারকাজ চলছে। সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন ও তথ্যানুসন্ধানে এ চিত্র উঠে এসেছে।

২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ আপিল বিভাগে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়। গত জানুয়ারি মাসে এক অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শিগগিরই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ করা হবে। পাঁচ মাস পার হয়েছে, এখনো নতুন নিয়োগ হয়নি।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা-সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৪(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধান বিচারপতি (যিনি “বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি” নামে অভিহিত হবেন) এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করবেন, সেরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হবে।’ ২০০৯ সালের রাষ্ট্রপতির জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘আপিল বিভাগে বিচারক থাকবেন ১১ জন।’

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আপিল বিভাগে তিন বিচারপতি নিয়োগের পর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এ বিভাগের দুটি বেঞ্চ পুনর্গঠন করে দেন। গত নভেম্বরে তিনি পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত দুটি বেঞ্চ বিচারকাজ চালান।

জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, সরকার নিশ্চয়ই আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগদান করবে। এটি সময়ের ব্যাপার মাত্র।

২০০৯ সালে আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা ছিল ১১ জন। ২০১৬ সালের শেষ পর্যন্ত আপিল বিভাগে নয়জন বিচারপতি ছিলেন। গত বছরের ১ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান মারা যান। একই বছরের ১৪ মার্চ ও ৬ জুলাই অবসরে যান যথাক্রমে বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। ওই বছরেরই নভেম্বরে পদত্যাগ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা পদত্যাগ করেন।

সুপ্রিম কোর্টের ২০১৬ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৭২ সালে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বিচারপতি ছিলেন তিনজন। ১৯৭৩ সালে বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়ায় চারে। এরপর পাঁচে উন্নীত হলেও ১৯৭৮ সালে আবার বিচারপতির সংখ্যা চারে নেমে আসে। সর্বশেষ আবার বিচারপতির সংখ্যা চারজন ছিল ১৯৯৫ সালে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন গত সোমবার বলেন, আপিল বিভাগে আগে দুটি বেঞ্চে বিচার কার্যক্রম চলত। বর্তমানে বিচারকের স্বল্পতায় একটি বেঞ্চে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। যে কারণে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা জট বাড়ছে। অবিলম্বে জ্যেষ্ঠতা ও বিচারিক দক্ষতার ভিত্তিতে আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া দরকার। প্রথম আলো