অর্থমন্ত্রীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের চিঠি

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, অধিদফতর, পরিদফতর, ব্যাংক-বীমাসহ সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বিভিন্ন আইনজীবী প্যানেলের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। গত ৭ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেলের স্বাক্ষর করা ওই চিঠি রোববার (১২ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, অধিদফতর, পরিদফতর, ব্যাংক-বীমাসহ সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানি আদালতের জন্য বেসরকারি প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে।

‘তাদের অধিকাংশকে আইন মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি নিয়ে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিয়ে এ নিয়োগ প্রদান করছে। তাদের কর্মপন্থা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, সরকারি কৌঁসুলি ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের সহযোগিতা করে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষার্থে মামলা করার জন্য বলা হচ্ছে।’

অ্যাটর্নি জেনারেল চিঠিতে বলেন, নিয়োগপ্রাপ্তদের অধিকাংশ ২০ থেকে ২৫টি বা তারও অধিকসংখ্যক সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাচ্ছেন।

তারা মূলত অধিকসংখ্যক প্রতিষ্ঠানে প্যানেল আইনজীবী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন হওয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করতে না পারায় সরকারি মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। সরকারি গোপন তথ্য ফাঁস হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আইন শাখাগুলোতে যোগাযোগ রক্ষা করে তারা দীর্ঘদিন এ পদগুলো দখল করে আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে তারা সরকারি প্রতিষ্ঠান প্যানেল আইনজীবী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সরকারি মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করছে, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বার কিংবা বার অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে ভিন্ন রাজনীতি করছে, যাতে করে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি।

এর প্রেক্ষিতে নিজের অভিমত হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সব সরকারি, আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সরকারি আইনজীবী প্যানেল নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ও দক্ষতাসম্পন্ন আইনজীবী প্যানেল নিয়োগের জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরি।

এ ক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেল তিনটি নীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন।

  • কোনো আইনজীবী ২-৩টির বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্যানেল আইনজীবী নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না।
  • প্যানেল আইনজীবী দক্ষতা ও মতাদর্শ নিরূপণে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মর্যাদার একজনকে নিয়োগ কমিটিতে বাধ্যতামূলক রাখতে হবে এবং তার মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।
  • যারা প্যানেল আইনজীবী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত ও নতুনভাবে নিয়োগ পাচ্ছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও ফোন নাম্বার অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে অবহিত করতে হবে।

চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।