হাইকোর্টে প্রথম আলো সম্পাদকের চার সপ্তাহের জামিন

কিশোর সাময়িকী ‘কিশোর আলোর’ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদককে চার সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন- অ্যাডভোকেট সুমাইয়া জান্নাত, প্রশান্ত কুমার কর্মকার ও তানজিম আল ইসলাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

আদেশের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট তানজিম আল ইসলাম জানান, এই মেয়াদ শেষ হলে তাকে (প্রথম আলো সম্পাদককে) নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এছাড়া বাকি পাঁচজনকে এ মামলায় অভিযোগ আমলে না নেওয়া পর্যন্ত হয়রানি বা গ্রেপ্তার না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ছাড়া বাকি পাঁচজন হলেন- প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহ পরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।

এর আগে রোববার (১৯ জানুয়ারি) এ মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান ও সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ ছয়জন। জামিন আবেদন করা অন্য চারজন হলেন- কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহ পরাণ তুষার এবং নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।

এ সময় জামিন শুনানিরও আবেদন জানানো হয়। কিন্তু আদালত শুনানির জন্য প্রথমে সোমবার (আজ) সময় নির্ধারণ করেন। পরে জামিন আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলাম ‘নো অ্যারেস্ট নো হ্যারাস’- এমন আদেশ চাইলে আদালত এ আদেশ দেন। পাশাপাশি আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।

গত ১৬ জানুয়ারি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম।

এ মামলার আসামিরা হলেন—মতিউর রহমান, আনিসুল হক, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহপরান তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার।

একইদিনে (১৬ জানুয়ারি) মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম এ ১০ জনকে আসামি করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর বিকালে রেসিডেন্সিয়াল কলেজ ক্যাম্পাসে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয় নাঈমুল আবরার রাহাত। মৃত আবরার রাহাত স্কুল শাখার নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

ঘটনার পরদিন আবরারের বাবা মজিবুর রহমান মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা এবং ৬ নভেম্বর অবহেলাজনিত কারণ উল্লেখ করে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আমিনুল হকের আদালতে আরও একটি মামলা করেন।